বিশ্বকাপে খেলারই কথা ছিল না ভারতকে বিদায় করার নায়কের
১০ নভেম্বর ২০২২ ১৯:০৩
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে ভারতের ১৬৮ রানের জবাব দিতে ওপেনিংয়ে নেমে একাই করেছেন ৪৭ বলে অপরাজিত ৮৬ রান। চার মেরেছেন ৪টি, আর ছক্কা ৭টি, স্ট্রাইকরেট ১৮২.৯৭। এমন ইনিংসের পর ম্যাচসেরার পুরস্কার কী আর অন্য কারও হাতে উঠতে পারে! অ্যালেক্স হেলসের হাতেই উঠেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালের ম্যাচসেরার পুরস্কার।
ভারতের ১৬৮ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে দশ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড। তাতে ইংল্যান্ডের অপর ওপেনার জস বাটলারের ৪৯ বলে অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংসটাও বড় ভূমিকা রেখেছে। তবে হেলস শুরুতেই বেধড়ক পিটিয়ে যেভাবে ভারতীয় বোলিং আক্রমণের মনোবল ভেঙে দিয়েছেন তাতে বড় কৃতিত্বটা তারই। তিনিই ম্যাচের নায়ক।
ম্যাচ শেষে ইংলিশ ওপেনার বলছিলেন, ‘কখনো ভাবিনি বিশ্বকাপে আমি আবারও খেলতে পারব। সুযোগ পাওয়ার অনুভূতিটা দুর্দান্ত।’ আসলেই তাই, ভারতকে বিদায় করে ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপের ফাইনালে তোলার নায়ক হেলসের এই বিশ্বকাপ খেলার কথাই ছিল না।
প্রতিভা নিয়ে শংসয় ছিল না কখনোই। কিন্তু নিজ হাতেই ক্যারিয়ারকে ফেলে দিয়েছিলেন অনিশ্চয়তার মধ্যে। ২০১৭ সালে ব্রিস্টলের এক পানশালার বাইরে মারামারি করে ইংলিশ ক্রিকেটে তুলকালাম বাঁধিয়ে দিয়েছিলেন। সেখানে বেন স্টোকসও ছিলেন। ঘটনায় হেলস নিষিদ্ধ হয়েছিলেন, জরিমানাও হয়েছিল।
সেই নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরে হেলস করেন আরও বড় ভুল। বিনোদনমূলক ড্রাগ নিয়েছিলেন। ফলে ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে বাদ পড়েছিলেন দল থেকে। ইংল্যান্ড সেবার বিশ্বকাপ জিতে। হেলস একবার বলেছিলেন, ‘এটা ভেবে আমার মরে যেতে ইচ্ছা করেছিল যে আমিও ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপজয়ী দলের একজন হতে পারতাম।’
ইয়ান মর্গান যতদিন ইংল্যান্ডের রঙিন পোশাকের দলের অধিনায়ক ছিলেন ‘ব্যাড বয়’ তকমা পাওয়া হেলসকে দলের ধারেকাছেও ঘেঁষতে দেননি। ইংল্যান্ড দলের অনেক ক্রিকেটারই হেলসকে আবারও দলে চাননি। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে রানের বন্যা বইয়েই চলেছিলেন হেলস। ২০২২ সালে ১৫০ এর উপর স্ট্রাইক রেটে ৪৮২৭ রান তুলে ফেলেন। তাতে ইংলিশ বোর্ডেরও হয়তো মন গলতে শুরু করে!
এদিকে বিশ্বকাপের ঠিক আগ মুহূর্তে ইনজুরিতে পড়েন ইংল্যান্ডের নিয়মিত ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। পাকিস্তান সফরে দারুণ কয়েকটা ইনিংস খেলা হেলসকে তারপর আর উপেক্ষা করেনি ইংল্যান্ড। বেয়ারস্টোর জায়গায় দলে ডাক পরে তার।
সুপার টুয়েলভে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪০ বলে ৫২ ও শ্রীলংকার বিপক্ষে ৩০ বলে ৪৭ রান করা হেলস আজ সেমিফাইনালে দেখালেন তাকে দলে ডেকে ঠিক কাজটাই করেছে ইংল্যান্ড। শুরুতেই আক্রমণ করে ভারতীয় বোলারদের মনোবল ভেঙে দিয়েছেন। তার দুর্দান্ত সূচনার ওপর ভর করেই ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করল ইংল্যান্ড।
প্রতিভা এবং চেষ্টা থাকলে যে বাজে সময় কাটিয়ে উঠা যায়, তারও একটা প্রমাণ দেখালেন হেলস।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সব ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। এছাড়া খেলা এবার একসঙ্গে দেখা যাবে দেশের জনপ্রিয় ওটিটি (ওভার দ্য টপ) প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলে।
সারাবাংলা/এসএইচএস