বিশ্বকাপের দল পরিচিত: মেক্সিকো
১৬ নভেম্বর ২০২২ ১৭:২১
কাতার বিশ্বকাপের দল পরিচিতির ধারাবাহিকতায় আমাদের আজকের আলোচনা মেক্সিকো। ‘গ্রুপ-সি’তে থাকা মেক্সিকো এবারের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে ১৭তম বারের মত। যদিও সেই অনুপাতে বিশ্বকাপে তাদের সাফল্যের হার বেশ কম। কিন্তু তাতে কি আসে যায়! ফুটবল পাগল জাতি হিসেবে মেক্সিকো সুপরিচিত। তাই কাতার বিশ্বকাপে প্রায় ৪০ হাজার ম্যাক্সিকান সমবেত হবেন প্রিয় দলের হয়ে গলা ফাটানোর জন্য। আমরা বাংলাদেশীরা ছিয়াশির বিশ্বকাপ থেকে স্টেডিয়ামে গেলেই মেক্সিকোর দর্শক থেকে শেখা ‘ম্যাক্সিকান ওয়েভ’ দেয়ার জন্য তৈরি থাকি।
মেক্সিকো দলে অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড় থাকা সত্ত্বেও, বেশিরভাগ সময় দ্বিতীয় রাউন্ডে গিয়ে তারা বাদ পড়ে যায়। হতে পারে তাদের ডিফেন্স কিছুটা দুর্বল, খেলোয়াড়দের দ্রুতগতি সম্পন্ন ইউরোপিয়ান ফুটবলে খেলার অভিজ্ঞতা কম, হাই প্রেসিং ফুটবল খেলতে না পারা বা উচ্চতায় কিছুটা খর্ব হওয়ায় তারা খুব বেশি দূরে যেতে পারে না।
কোচ জেরার্ডো মার্টিনো:
জেরার্ডো মার্টিনোকে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের বাধা অতিক্রমের অভিশাপ থেকে রেহাই পেতে। বার্সেলোনাকে স্বল্প সময়ের জন্য কোচিং করানো মার্টিনো প্যারাগুয়ে এবং আর্জেন্টিনার কোচ ছিলেন প্রায় ছয় বছর।
‘এল ট্রাই (ত্রিরঙ্গা)’ দল গত কয়েক বছর কিছুটা খারাপ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কোচ জেরার্ডো মার্টিনো খুব চাপের মুখে আছেন। সেই চাপ আরো বহুগুণ বেড়েছে গত বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কনকাকাফ ন্যাশনস লীগের ফাইনালে হারার পর থেকে। এ বছরের সেপ্টেম্বরে এক প্রীতি ম্যাচে কলম্বিয়ার সঙ্গে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকেও পরবর্তীতে ৩-২ গোলে পরাজিত হয়েছে।
মার্টিনোর শুরুটা ভালোই ছিল। ২০১৯ সালে ওয়ার্ল্ড কাপ জেতা এবং নেদারল্যান্ডের সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচে জয়লাভ করার পর থেকেই তাদের সাফল্য ম্লান হতে শুরু করে। ২০২১ সালে কারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে পরপর তিনটি খেলায় পরাজিত হয়। দৃষ্টিনন্দন ফুটবল খেলতে না পারার কারণে মার্টিনো এখন মেক্সিকোর জনগণের কাছে ১ নম্বর শত্রু।
বিগত বিশ্বকাপে মেক্সিকো কতদূর পর্যন্ত গিয়েছিল:
মেক্সিকোর সেরা সাফল্য হচ্ছে তাদের মাটিতে অনুষ্ঠিত ১৯৭০ এবং ১৯৮৬ এর বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত যাওয়া। ছিয়াশি বিশ্বকাপের পর, ১৯৯৪ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত সাতটি বিশ্বকাপে তারা পরপর খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে এবং ওই প্রতিটি বিশ্বকাপেই তারা দ্বিতীয় রাউন্ড পর্যন্ত গিয়েছিল।
মেক্সিকো এ যাবৎ বিগত বিশ্বকাপগুলোতে ৫৭টি ম্যাচ খেলে ১৬টিতে জয় পেয়েছে, ড্র করেছে ১৪টিতে এবং পরাজিত হয়েছে ২৭টি ম্যাচে। তারা সর্বমোট ৬০টি গোল দেয়ার পাশাপাশি হজম করেছে ৯৮টি গোল।
একসময় বার্সেলোনায় খেলা ডিফেন্ডার, রাফায়েল মার্কেজ তাদের দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৯টি বিশ্বকাপ ম্যাচ খেলেছেন ২০০২ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত পাঁচটি বিশ্বকাপে। আর সর্বোচ্চ ৪টি গোল করেছেন কেবলমাত্র ১৯৯৮ বিশ্বকাপে খেলা লুইস হার্নান্দেজ, যিনি কখনোই ইউরোপীয় লিগে খেলেননি। তবে হার্নান্দেজের সঙ্গে যৌথ শিষ্য গোল দাতার তালিকায় ছিলেন জাভিয়ের হার্নান্দেজ, যাকে ২০১০ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত তিনটি বিশ্বকাপ খেলতে হয়েছে।
এবারের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি তাদের কেমন হয়েছে:
বিশ্বকাপ বাছাই-পর্বে তারা কানাডার পেছনে থেকে দ্বিতীয় হয়ে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। বাছাই-পর্বের ১৪টি ম্যাচে তারা মাত্র ১৭টি গোল করতে সক্ষম হয়েছিল।
সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্বকাপ প্রস্তুতিমূলক ৪টি প্রীতি ম্যাচ খেলে ২টিতে তারা জয় পেয়েছে পেরু এবং ইরাকের সাথে আর বাকি ২টি ম্যাচে পরাজিত হয়েছে কলম্বিয়া এবং প্যারাগুয়ের কাছে। সবমিলিয়ে তারা শেষ ৮টি ম্যাচে মাত্র ৩টিতে জয় তুলে নিতে পেরেছে।
তাদের খেলার সময় সূচি:
নভেম্বরের ২২ তারিখে তারা প্রথম ম্যাচ খেলবে পোল্যান্ডের বিরুদ্ধে। তার পাঁচ দিন পর নভেম্বর ২৭ তারিখে খেলবে দ্বিতীয় ম্যাচ আর্জেন্টিনার সঙ্গে। সর্বশেষ ম্যাচটি খেলবে সৌদি আরবের সাথে ডিসেম্বরের ১ তারিখে।
তারকা খেলোয়াড়:
নেপোলিতে খেলা ২৭ বছরের হিরভিং লোজানো একজন বিস্ফোরক উইঙ্গার। অনেকেই বলছেন তাকে থামানোর উপায় হল বারংবার ফাউল করা। তিনি দ্রুতগতি সম্পন্ন, উইং থেকে অনবরত ক্রস এবং গোলে শট নেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ। মাঝেমধ্যে ফলস নাইন হিসেবে খেলে থাকেন। ডান পায়ের হলেও তিনি খেলে থাকেন লেফট উইং পজিশনে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন তিনি নেপোলিতে যত ভালো খেলেন জাতীয় দলের হয়ে সেই মাত্রায় অবদান রাখতে পারছেন না।
তরুন তারকা:
ক্রুজ আজুলে খেলা ২৫ বছর বয়সের উরিয়েল আন্টুনা একজন চটপটে, গতি সম্পন্ন এবং ড্রিবলিং করার খ্যাত উইঙ্গার। ইএসপিএন তাকে এমন একজন খেলোয়াড় হিসেবে বর্ণনা করেছে, যে বল ধরে রাখতে এবং ক্রস করতে পছন্দ করে। ফলে তাকে ধরে রাখতে প্রায়শই ফাউল করা হয়। কিলিয়ান এমবাপের পরে তিনিই হচ্ছেন বিশ্বের অন্যতম দ্রুত গতিসম্পন্ন ফুটবলার।
নেপথ্যের নায়ক:
৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এডসন আলভারেজ একজন ডিফেন্সিভ মিড-ফিল্ডার, যিনি সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবেও খেলতে পারেন। আয়াক্সের হয়ে ক্লাব ফুটবল খেলা মার্টিনোর সিস্টেমে ২৫ বছরের আলভারেজের চেয়ে কোনো খেলোয়াড়ই বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয় স্পটলাইট হিরভিং লোজানো, গুইলারমো ওচোয়া বা আলেক্সিস ভেগার উপর বেশি হতে পড়তে পারে, তবে তিনি দলগুলিকে লাইনের মধ্যে সমন্বয় করেন। তিনি বল পায়ে রাখতে পারেন খুব ভালোভাবে যার কারণে ভক্তরা তাকে ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ারের সাথে তুলনা করছে। তাই দলের যেকোন পরিকল্পনার জন্য আলভারেজ অপরিহার্য।
সম্ভাব্য শুরু একাদশ:
গোল-রক্ষক: গুইলারমো ওচোয়া (আমেরিকা);
ডিফেন্ডার: হোর্হে সানচেজ (আয়াক্স), নেস্টর আরাউজো (আমেরিকা), সেজার মন্টেস (মন্টেরে), জেসুস গ্যালার্দো (মন্টেরে);
রক্ষণাত্মক মিড-ফিল্ডার: এডসন আলভারেজ (আয়াক্স);
আক্রমণাত্ম মিড-ফিল্ডার: এরিক গুতেরেস (পিএসভি আইন্ডহোভেন), রবার্তো আলভারাডো (গুয়াদালাজারা), উরিয়েল আন্টুনা (ক্রুজ আজুল);
স্ট্রাইকার: হিরভিং লোজানো (নাপোলি) ও রাউল জিমেনেজ (উলভারহ্যাম্পটন)।
খেলার ফর্মেশন ও কৌশল:
তাদের ফর্মেশন হবে ৪-৩-৩, যেখানে উইং-ব্যাক এবং উইঙ্গাররা আক্রমণের ঝড় তোলায় ব্যস্ত থাকবেন। তবে তারা এ মাসের শুরুতে ৪-২-৩-১ পদ্ধতি ব্যবহার করেছে যেখানে দুইজন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার থাকবেন, এই পদ্ধতি বড় দলের সঙ্গে বিশেষ করে গ্রুপ ম্যাচে আর্জেন্টিনার সঙ্গে ব্যবহার করতে পারে।
মেক্সিকো সবসময় আনন্দদায়ক এবং আকর্ষণীয় খেলা খেলতে ভালবাসে। ছোট ছোট পাসের মাধ্যমে তারা আক্রমণ শানাতে পছন্দ করে। উইং-ব্যাকদের মাধ্যমে আক্রমণ শুরু করে এবং দীর্ঘ সময় নিজেদের কাছে বল ধরে রাখতে পারে।
দলের শক্তি ও দুর্বলতা:
দলের মূল দুই সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার ভিক্টর মোরেনো এবং নেস্টর আরাউজো আগে স্পেনের রিয়েল সোসিয়েদাদ এবং সেলটা ভিগোতে খেলতেন, যারা এখন আবার মেক্সিকোর ঘরোয়া লীগে ফিরে গিয়েছেন। মরেনোর বয়স ৩৪ বছর হওয়ায় এই বিশ্বকাপের মূল দলে সুযোগ নাও পেতে পারেন। দলে ২৩ থেকে ২৪ বছরের হোর্হে সানচেজ, জোহান ভাসকুয়েজ বা জেরার্দো আরতেগার মত ডিফেন্ডার যারা আয়াক্স, ক্রেমোনেসে এবংগেংকে খেলে থাকলেও জাতীয় দলে তাদের ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা মাত্র ৬-২৫টি।
ঠিক তেমনি মধ্য মাঠে আন্দ্রেস গার্দাদো এবং হেক্টর হেরেরার বয়স ৩৬ এবং ৩২ বছর হয়ে গেছে। আন্দ্রেস গার্দাদো ৩৬ বছর হয়ে গেলেও তিনি স্পেনের রিয়েল বেতিসে খেলছেন।পক্ষান্তরে হেক্টর হেরেরা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লীগ সরকারের চলে গেছেন। ফলে ২৪-২৫ বছরের আলেক্সিস ভেগা, উরিয়েল আন্টুনা এবং রবার্তো আলভারাদোর মতো সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডার এবং উইঙ্গারদের উপর দায়িত্ব পড়বে কোচের ধারণা বাস্তবায়নের জন্য।
তাদের মূল সমস্যা হল পুরো খেলায় ভালো খেলতে না পারা। একমাত্র ধারাবাহিকতা তাদের অসঙ্গতি বলে মনে হয়। সেভিয়াতে খেলা উইঙ্গার জেসুস করোনা গোড়ালির ইনজুরিতে পড়ার পর থেকে মার্টিনো স্ট্রাইকার রাউল জিমেনেজের ফিটনেস নিয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ জিমেনেজ কুচকির ইঞ্জুরি মোকাবেলা করছেন। স্ট্রাইকার সংকট একটি বড় সমস্যা হতে পারে কারণ মেক্সিকো শেষ ৫টি বাছাই পর্বের ম্যাচে মাত্র ৪টি গোল করতে পেরেছিল। তা সত্ত্বেও মেক্সিকোর ইতিহাসের একজন অন্যতম স্ট্রাইকার জাভিয়ের হার্নানদেজকে কোচ দলে ডাকেননি। ৩৪ বছরের এই স্ট্রাইকার একসময় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড এবং রিয়েল মাদ্রিদে খেলতেন, যিনি জাতীয় দলে ৫২টি গোল করেছেন এবং বর্তমান ক্লাব দল এল.এ. গ্যালাক্সির হয়ে ৬৫ ম্যাচে ৩৭টি গোল করেছেন।
এসব ছাপিয়ে মেক্সিকো তাদের দর্শকদের দ্বারা উজ্জীবিত হতে হতে পারে যেহেতু মেক্সিকো থেকে দলে দলে দর্শক কাতারে আসছেন, যা তাদের জন্য এক্স-ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করতে পারে।
কাতার বিশ্বকাপে মেক্সিকোর সম্ভাবনা:
বাজির দর: ১৫০/১।
মেক্সিকো এবং পোল্যান্ড এই দুই দলেরই ‘গ্রুপ-সি’ থেকে পরবর্তী রাউন্ডে উত্তীর্ণ হতে গেলে তাদের মধ্যকার ম্যাচটিতে যে জিতবে তারই এগিয়ে থাকার সম্ভাবনা বেশি। পোল্যান্ডের রবার্ট লেভানডভস্কির মতো স্ট্রাইকার থাকায় এবং অন্যদিকে মেক্সিকোর কিছু খেলোয়াড়ের বয়স বেশি হয়ে যাওয়ার সাথে তাদের অধিকাংশ খেলোয়াড়ের ইউরোপে না খেলার অভিজ্ঞতার কারণে মেক্সিকোর এবার গ্রুপ পর্যায় থেকেই বিদায় ঘন্টা বেজে যেতে পারে।
তাছাড়া মেক্সিকো গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কোন প্রতিষ্টিত শক্তি দূরে থাক ইউরোপের কোন মাঝারি মানের দলের সঙ্গেও ম্যাচ খেলেনি। প্রায় ৩৬ ম্যাচ আগে ২০২১ সালের মে মাসে তারা সর্বশেষ ইউরোপের দেশ হিসেবে আইসল্যান্ডের সঙ্গে খেলেছিল। ২০১৮ বিশ্বকাপে ব্রাজিলের সঙ্গে দ্বিতীয় রাউন্ডে হারার পর আর্জেন্টিনার সঙ্গে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে খেলেছিল যেখানে তাদের পরাজয় ঘটেছিল ০-৪ গোলে। বিশ্বকাপে যাত্রা শুরু করবার আগে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর তারা তাদের সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচ খেলবে সুইডেনের বিরুদ্ধে। অর্থাৎ গত সাড়ে চার বছর সময়ের মধ্যে বড় ম্যাচ তারা খেলেছে কেবলমাত্র চারটি দলের সঙ্গে।
মেক্সিকো দলের সেরা-২৩ খেলোয়াড় (নতুন পুরাতন দলের সমন্বয়ে):
ক) গোল-রক্ষক:-
গুইলারমো ওচোয়া (ম্যাচ: ১৩০। বয়স ৩৭ বছর এবং বর্তমান জাতীয় দলের খেলছেন। তিনি ফ্রেঞ্চ, স্প্যানিশ এবং বেলজিয়ান লীগে ২৩৯টি ম্যাচ খেলেছেন)।
হোর্হে ক্যাম্পোস (ম্যাচ: ১২৯। তিনি রঙ-চঙ্গা জার্সি পড়ার জন্য বিখ্যাত ছিলেন)।
খ) রক্ষণ-ভাগ:-
রাইট-ব্যাক:
জেসুস করোনা (ম্যাচ: ৭১ এবং গোল: ১০। তার বয়স: ২৯ বছর এবং বর্তমান জাতীয় দলে আছেন। তিনি এ পর্যন্ত ক্লাবে ২৯৪টি ম্যাচ খেলে ৩৮টি গোল করেছেন ডাচ এবং পর্তুগিজ লীগে। বর্তমানে স্পেনের সেভিয়াতে খেলছেন। এর আগে পর্তুগালের এফ.সি পোর্তোতে ১৯২টি ম্যাচ খেলেছেন)।
পাভেল পারডো (ম্যাচ: ১৪৬ এবং গোল: ১১। ক্লাব পর্যায়ে ৬৩২টি ম্যাচের মধ্যে তিনি জার্মানির ভিএফবি স্টুটগার্টের হয়ে ৭১টি ম্যাচ খেলেছেন)।
সেন্ট্রাল-ডিফেন্ডার:
রাফায়েল মার্কেজ (ম্যাচ: ১৪৭ এবং গোল: ১৭। তিনি প্রথম মেক্সিকান হিসেবে ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন্স লীগে খেলেছেন। তিনি ৫১৬টি ম্যাচের মধ্যে ১৬৩টি ম্যাচ স্পেনের বার্সেলোনাতে খেলেছেন)।
হেক্টর মোরেনো (ম্যাচ: ১২৭ এবং গোল: ৫। তিনি ৩৪ বছর বয়সে এখনো জাতীয় দলের খেলছেন। এখন পর্যন্ত ৪৩৩টি ম্যাচের মধ্যে ১২৮টি ম্যাচ খেলেছেন স্পেনের এস্পানিওলের হয়ে)।
নেস্টর আরাউজো (ম্যাচ: ৬২ এবং গোল: ৩। তার বয়স ৩১ বছর এবং জাতীয় দলে খেলছেন। এখন পর্যন্ত ৩৩০ টি ম্যাচের মধ্যে ১৩৩টি খেলেছেন স্পেনের সেলটা ভিগোতে।
ক্লডিও সুয়ারেজ (ম্যাচ: ১৭৭ এ গোল: ৭। তিনি ৫৫৫টি ক্লাব ম্যাচ খেলেছেন মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রে)।
লেফট-ব্যাক:
কার্লোস সালসিডো (ম্যাচ: ১২৩ এবং গোল: ১০। তিনি ৫০৯টি ম্যাচের ১২১টি খেলেছেন পিএসভি আইন্ডহোভেনে)।
রামন রামিরেজ (ম্যাচ: ১১৯ এবং গোল:১৫। তিনি ৪৪৯টি ক্লাব ম্যাচ খেলেছেন মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্রে)।
গ) মধ্য-মাঠ:-
ডিফেন্সিভ-মিড:
আন্দ্রেস গার্দাদো (ম্যাচ: ১৭৭ এবং গোল: ২৮। ৩৬ বছর বয়সে তিনি এখনো জাতীয় দলে আছেন। এখন পর্যন্ত ৪৭৬টি ম্যাচের ১৩৭টি খেলেছেন স্পেনের দেপোর্তিভো লা করুনাতে আর ১৪৩টি খেলেছেন রিয়েল বেতিসে)।
জেরার্ডো তোরাডো (ম্যাচ: ১৪৪ এবং গোল: ৫। তিনি ৫৩৬টি ম্যাচ খেলেছেন মেক্সিকো এবং স্প্যানিশ লিগে)।
হেক্টর হেরেরা (ম্যাচ: ১০১ এবং গোল: ১০। তার বয়স: ৩২ বছর এবং জাতীয় দলে খেলছেন। তিনি মেক্সিকো পর্তুগাল, স্পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে খেলেছেন; এর মধ্যে ২২২টি খেলেছেন এফ.সি পোর্তো এবং অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদে)।
আক্রমণাত্মক-মিড:
হিরভিং লোজানো (ম্যাচ: ৫৯ এবং গোল: ১৬। তার বয়স: ২৭ বছর এবং জাতীয় দলের সাথে আছেন। এখন পর্যন্ত ২৭৫টি ম্যাচের মধ্যে ১৫৫টি ম্যাচ খেলেছেন পিএসভি আইন্ডহোভেনে এবং নেপোলিতে – এই দুই ক্লাব ৫৪টি গোলও করেছেন)।
লুইস গার্সিয়া (ম্যাচ: ৭৭ এবং গোল: ২৮। তিনি মাত্র ৩০ বছর বয়সে অবসর গ্রহণ করেন। ৪৩৪টি ক্লাব ম্যাচে ১৮৪টি গোল করেন। তিনি ৬৮টি ম্যাচ খেলেন স্পেনের অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ এবং রিয়েল সোসিয়েদে)।
জিওভানি ডস সান্তোস (ম্যাচ: ১০৬ এবং গোল: ১৯। তিনি মাত্র ২৯ বছর বয়সে জাতীয় দল থেকে অবসর নেন। এখনো পর্যন্ত ২৯৯টি ক্লাব ম্যাচ খেলে ৬০টি গোল করেছেন স্প্যানিশ, ইংলিশ, তুর্কি প্রভৃতি লীগে। ১৩২টি ম্যাচ খেলেছিলেন বার্সেলোনা, মায়োরকা ও ভিয়ারিয়েলে)। তার ছোট ভাই জোনাথন ডস সান্তোস তার সাথে বার্সেলোনা এবং মেক্সিকো জাতীয় দলে খেলছেন।
কুয়াহটেমোক ব্লাঙ্কো (ম্যাচ: ১১৯ এবং গোল: ৩৮। তিনি মেক্সিকো, স্পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রে ৫৭৩টি লীগ ম্যাচে ১৮১টি গোল করেছেন)।
আলবার্তো গার্সিয়া এসপে (ম্যাচ: ১০৯ এবং গোল: ২১। তিনি শুধু মেক্সিকোর লীগে ৫২৮টি ম্যাচ খেলেন)।
কার্লোস ভেলা (ম্যাচ: ৭২ এবং গোল: ১৯। তিনিও ২৯ বছর বয়সে জাতীয় দল অবসর নেন। তিনি এখন অব্দি ৪৩৭টি ম্যাচে ১৫১টি গোল করেছেন স্পেন, ইংল্যান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রের লীগ গুলোতে। তিনি আর্সেনাল এবং রিয়েল সোসিয়েদাদে ২৫৪টি ম্যাচ খেলেন)।
ঘ) স্ট্রাইকার:-
হুগো সানচেজ (ম্যাচ: ৫৮ এবং গোল: ২৯। তিনি ৬৮১টি ম্যাচে ৩৯৭টি গোল করেন। তিনি রিয়াল মাদ্রিদ এবং অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদে ২০৭ ও ১১১টি ম্যাচ খেলে ১৬৪ ও ৫৪টি গোল করেছেন)।
জাভিয়ের হার্নান্দেজ (ম্যাচ: ১০৯ এবং গোল: ৫২। তার বয়স: ৩৪ বছর এবং জাতীয় দলে আছেন। তিনি এখনো পর্যন্ত ৩৭২টি ম্যাচ খেলে ১৫২টি গোল করেন। ১০৩টি ম্যাচ খেলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে)।
জ্যারেড বোরগেটি (ম্যাচ: ৮৯ এবং গোল: ৪৬। তিনি ক্লাবে ৫২৫টি ম্যাচ খেলে ২৭১টি গোল করেন)।
লুইস হার্নান্দেজ (ম্যাচ: ৮৫ এবং গোল: ৩৫। তিনি ৩৫৮টি ম্যাচ খেলে ১৩০টি গোল করেন)।
সারাবাংলা/এসআইটি/এসএইচএস