উদ্বোধনী ম্যাচে এগিয়ে থাকছে কাতার
২০ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৫১
প্রায় এক যুগ আগে কাতার যখন ২০২২ সালের বিশ্বকাপ আয়োজনের স্বত্ব পেলে তখন সারা দুনিয়া জুড়ে শোরগোল। কাতারে না আছে ফুটবল ঐতিহ্য, না আছে বিশ্বকাপ আয়োজনের মতো অবকাঠামো বা বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া দর্শকদের চাহিদা মেটানোর সামর্থ। তার চেয়েও বড় কথা মধ্যপ্রাচ্যের মতো তীব্র দাবদাহে ফুটবল বিশ্বকাপ হতে পরে নাকি! বিভিন্ন চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে সেই কাতারেই আজ শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবল বিশ্বকাপ। প্রায় এক যুগের চেষ্টায় অবকাঠামোর দুর্দান্ত উন্নতি করেছে কাতার। অবশ্য কাতারের আয়োজন নিয়ে আজ অবধি প্রশ্ন উঠছে। তবে শুধু সেসব নিয়েই ভাবার সময় কাতারিদের। আজ নামতে হচ্ছে যে মাঠের লড়াইয়ে।
বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ইকুয়েডরের মুখোমুখি হচ্ছে কাতার। আজ বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচটি মাঠে গড়াবে আল খোর শহরের আল বায়ত স্টেডিয়ামে।
আজ উদ্বোধনি দিনে কাতার-ইকুয়েডরের ম্যাচ নাও দেখা যেতে পারত। পূর্বসূচি অনুযায়ী সেনেগাল ও নেদারল্যান্ডসের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার কথা ছিল ২১ নভেম্বর। কিন্তু স্বাগতিক দলের খেলা দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার রীতি ধরে রাখতে কাতার-ইকুয়েডরের ম্যাচটি এগিয়ে আনা হয়।
৮০তম দল হিসেবে এবারই প্রথম বিশ্বকাপ খেলছে কাতার। সেটাও স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে। তবে সম্প্রতি সময়ে দারুণ ফর্মে আছে কাতার। এশিয়ার বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কাতার। সর্বশেষ ফিফা আরব কাপে তৃতীয় হয়েছে তারা। সর্বশেষ পাঁচটি আন্তর্জাতিক ম্যাচের পাঁচটিতেই জিতেছে কাতার। গোল করেছে ৮টি, বিপরীতে হজম করেছে মাত্র ২টি।
দলে চোট সমস্যা নেই। তাছাড়া ৮০ হাজার ধারনক্ষমতায় পূর্ণ গ্যালারিও পক্ষে পাবে কাতার। দলটির অর একটা সুবিধা আছে। দলের ১৫ জনই স্বদেশি ক্লাব আল-সাদের ফুটবলার। ফলে নিজেদের মধ্যে বুঝাপড়াটা দারুণ। পরিসংখ্যানে নজর দিলেও স্বস্তি পাবে কাতার।
বিশ্বকাপ ইতিহাসে এখন পর্যন্ত মাত্র একবার দ্বিতীয় পর্বে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে স্বাগতিক দল। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত স্বাগতিক দল কখনোই উদ্বোধনী ম্যাচ হারেনি। বুঝাই যাচ্ছে- স্বাগতিকদের হারানো সহজ কাজ নয়। কাতারের কোচ ফেলিক্স সানচেজের কথাতেও ফুটে উঠল সেই আত্মবিশ্বাস, ‘বলছি না, আমরা বিশ্বকাপ জিতব। তবে আমরা বিশ্বমানের খেলা উপহার দেব, এটুকু নিশ্চয়তা দিতে পারি।’
ইকুয়েডর এবার বিশ্বকাপ খেলতে এসেছে চতুর্থবারের মতো। দক্ষিণ আমেরিকার দলটি চিলি, কলম্বিয়া, পেরুর মতো দলগুলোকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে। তারুণ্যে ভরা দলটির গতি ও ক্ষীপ্রতা দারুণ। প্রতিআক্রমণে ইকুয়েডর বেশ ভয়ঙ্কর। গ্রুপের অন্য দুই দল নেদারল্যান্ডস ও সেনেগাল শক্তির বিচারে এগিয়ে। ফলে নিশ্চিয় পূর্ণ তিন পয়েন্ট তুলে নিতে কাতারকেই টার্গেট করছে ইকুয়েডর।
অবশ্য ইংলিশ ক্লাব ব্রাইটনে খেলা ইকুয়েডরের ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার মোইসেস কাইসেদো বললেন তাদের ভালো করেই জানা যাছে কাতারের বিপক্ষে পূর্ণ তিন পয়েন্ট তুলে নেওয়ার কাজটা সহজ নয়। কাইসেদো বলেন, ‘ওরা নিজেদের মাঠে সবার সমর্থন পাবে। আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। তবে জানি, ওরা কোন কৌশলে খেলে। ওদের মতো আমাদেরও সমান সুযোগ আছে।’
আর্জেন্টাইন কোচ গুস্তাফো আলফারো ইকুয়েডরকে স্বাধারনত ৪-৪২ ছকে খেলিয়ে থাকেন। তাতে গোল করার কাজটা দলের প্রাণভোমরা এনার ভ্যালেন্সিয়ার। তার পেছনে থাকেন ২১ বছর বয়সী মিডফিল্ডার মোইসেস কাইসেদোর। এই দুজনের ওপরই বেশি ভরসা ইকুয়েডরের। কাতারও নিশ্চয় বাড়তি নজর রাখবে এই দুজনের ওপর।
সারাবাংলা/এসএইচএস