সমকামিতার পক্ষে দাঁড়াতে এবং বৈষম্য দূর করার বার্তা দিতে বিশ্বকাপজুড়ে ইউরোপের ৯টি দেশ ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’ পরে খেলার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তা থেকে সরে এসেছে। এই আর্মব্যান্ডের বিপক্ষে কড়া সতর্কতা দিয়েছিল ফিফা। এটি পরে মাঠে নামলেই হলুদ কার্ড- এমন বার্তা দেওয়া হয়েছিল ফিফার পক্ষ থেকে। মূলত এই কড়াকড়ির কারণেই নিজেদের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনছে ইউরোপের নয়টি দেশ।
সোমবার (২১ নভেম্বর) এক যৌথ বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ইউরোপের সাত ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন। তবে ফিফার কড়া সমালোচনাও করা হয়েছে বিবৃতিতে।
কাতারের আইন সমকামীতার বিপক্ষে কথা বলে। অবশ্য দেশটি বিশ্বকাপে সমকামীদের নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেনি। তবে এক্ষেত্রে বরাবরই স্থানীয় আইনের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে জার্মানি, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো ইউরোপের কিছু দেশ সমকামীদের অধিকার প্রশ্নে আপষহীন। বরাবরই সমকামীতের পক্ষে তাদের অবস্থান। সমকামীতার সমর্থনে জার্মানি, ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশের অধিনায়ক ‘ওয়ান লাভ আর্মব্যান্ড’ পরে বিশ্বকাপ খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যে আর্মব্যান্ডটি সমকামীদের প্রতীক বহন করে।
বিষয়টিকে ‘রাজনৈতিক ইস্যু’ হিসেবে বিবেচনা করে এর ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয় ফিফার পক্ষ থেকে। এই আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামলেই হলুদ কাড, এমন বার্তা দেওয়া হয়। তবুও ইংল্যান্ড, জার্মানির মতো দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছিল হলুদ কার্ড দেখতে হলেও তারা আর্মব্যান্ড বহন করবে। তবে শেষ মুহূর্তে এসে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো দলগুলো।
ম্যাচের প্রথমেই হলুদ কার্ড দেখা যেকোন ফুটবলারের জন্যই চাপের। পরে আর একটি হলুদ কার্ড দেখলেই মাঠ ছাড়তে হবে, এমন ভয় থাকে। মাথায় হলুদ কার্ডের বোঝা নিয়ে খেলা নিশ্চয় সহজ বিষয় নয়। সার্বিক চিন্তা করেই শেষ মুহূর্তে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে দলগুলো।
যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপের দলগুলো বলেছে, ‘ফিফার সিদ্ধান্তে আমরা খুবই হতাশ, যা নজিরহীন বলেই বিশ্বাস করি আমরা। ফিফা খুবই পরিষ্কার ছিল যে, আমাদের খেলোয়াড়রা আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। আমরা জরিমানা দিতে প্রস্তুত ছিলাম এবং আর্মব্যান্ড পরতেও শক্তভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম। তবে আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের এমন পরিস্থিতিতে ফেলতে পারি না যেখানে তাদের নিষিদ্ধ হওয়া বা বাধ্য হয়ে মাঠ ছাড়ার সম্ভাবনা থাকে।’