ক্রোয়েশিয়াকে চমকে দিয়েও হারল কানাডা
২৭ নভেম্বর ২০২২ ২৩:৫৭
৩৬ বছর পর বিশ্বকাপে খেলতে নিজেদের নাম জানান দিল কানাডা। দুর্দান্ত ফুটবল খেলে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়াকে চমকে দিয়েছিল কানাডা। কাতার বিশ্বকাপের দ্রুততম বিশ্বকাপ গোল করেও শেষ পর্যন্ত ৪-১ ব্যবধানে হেরেছে কানাডা। আলফোন্সো ডেভিস প্রথমে গোল করে লিড এনে দেন কানাডাকে। এরপর ক্রামারিচের জোড়া গোলের সঙ্গে মার্কো লিয়াভা এবং লভরো মায়ের একটি করে গোল করেন। এই হারে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়েছে কানাডার।
নিজেদের ইতিহাসে দ্বিতীয় বারের মতো বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করতে এসেছে কানাডা। এর আগে ১৯৮৬ সালে বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেললেও সেবার তিন ম্যাচ খেলে কোনো গোল করতে পারেনি কানাডা। এরপর ৩৬ বছরের অপেক্ষার পালা শেষে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় কানাডা। কাতার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে মাত্র ৬৮ সেকেন্ডে বিশ্বকাপে নিজেদের ইতিহাসের প্রথম গোল করলেন আলফন্সো ডেভিস।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে চলতি বিশ্বকাপের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দ্রুততম গোল করল কানাডা। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলতে নেমের ম্যাচের ৬৮ সেকেন্ডের মাথায় গোল করেছেন আলফন্সো ডেভিস। এর আগে নেদারল্যান্ডসের কোডি গাকপো ৬ মিনিটে গোল করে এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সবচেয়ে দ্রুততম গোলের শীর্ষে ছিল। ফুটবল বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি ১৫তম দ্রুততম গোল।
গোল হজমের পর নিজেদের গুছিয়ে নিতে কিছুটা সময় নেয় ক্রোয়েশিয়া। আর নিজেদের গুছিয়ে নেওয়ার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ক্রোটরা। ম্যাচের ২২ মিনিটে ইভান পেরিসিচের বাড়ানো বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হয় জোসিপ জুরানোভিক। গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকা ক্রোয়েশিয়া ২৬তম মিনিটে গোলের দেখা পেয়ে যায়। তবে মাতেও কোভাসিচের করা গোলটি অফসাইডের কারনে বাতিল করেন রেফারি। ৩৫ মিনিটে সাজানো আক্রমণ থেকে ডি বক্সে বল পেয়ে গোলমুখে শট করেন মার্কো লিয়াভা। কিন্তু তা রুখে দেন কানাডার গোলরক্ষক মিলান বোরজান।
ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে সমতায় ফেরে ৩৬তম মিনিটেই। বাঁ দিক থেকে ইভান পেরিসিচের পাস থেকে বল জালে জড়ান আন্দ্রে ক্রামারিচ। ম্যাচ সমতায় ফেরার পর এগিয়ে যাওয়ার জন্য লড়াই করতে থাকে দুই দলই। তবে প্রথম সুযোগটি পায় ক্রোয়শিয়া। প্রথমার্ধের শেষ দিকে এসে জোসেপ জুরানোভিচের কাছ থেকে ডি বক্সের বাইরে বল পান মার্কো লিয়াভা। এরপর সেখান থেকেই বল পেয়ে দূরপাল্লার শটে দারুণ এক গোল করে ক্রোয়েশিয়াকে লিড এনে দেন লিয়াভা। আর এতেই প্রথমার্ধে ২-১ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে থেকে শেষ করে ক্রোয়েশিয়া।
বিরতি থেকে ফিরে আবারও আক্রমনে যায় কানাডা। ৪৮তম মিনিটে জোনাথন ওসোরিওর শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। ডেভিসের গোলের পর এটাই ছিল তাদের প্রথম চেষ্টা! এরপর আক্রমণে ওঠে ক্রোয়েশিয়া তবে ৫৪তম মিনিটে ক্রামারিচের শট ঠেকিয়ে দেন কানাডার গোলরক্ষক। দুই মিনিট পর জোনাথন ডেভিডের বুলেট গতির শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন ক্রোয়াট গোলরক্ষক।
তবে ক্রোটদের আর বেশি সময় আটকে রাখতে পারেনি কানাডা। ম্যাচের ৭০তম মিনিটে এসে পেরিসিচের কাছ থেকে বল পেয়ে নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ক্রামারিচ। আর ক্রোয়েশিয়া লিড পায় ৩-১ গোলের। দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও রক্ষণাত্মক খেলেনি কানাডা। ম্যাচের শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়ে গেছে গোল করার। আর সেই চেষ্টাতেই ম্যাচের শেষ মুহূর্তে চতুর্থ গোল হজম করে বসে তারা।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পর যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটে মিসলাভ অরসিচ বল নিয়ে এগিয়ে যান কানাডার ডি বক্সে। সেখানে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তবে শট করার জায়গা না খুঁজে পাশ তাহাক অরিসিচকে পাস দেন। আর ফাঁকা পেয়ে বল সজোরে শট করে জালে জড়িয়ে ক্রোয়েশিয়ার ৪-১ গোলের জয় নিশ্চিত করেন অরিসিচ।
সারাবাংলা/এসএস