জয়ের মুখে থাকা বাংলাদেশ মাত্র ৮ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে হারের একদম কাছাকাছি গিয়ে পৌঁছেছিল। ১৮৬ রানের জবাব দিতে নেমে ১৩৬ রানে নবম উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তখন মনে হচ্ছিল ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচটিতে বাংলাদেশের হার সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু মেহেদি হাসান মিরাজের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত স্মরণীয় এক জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
ভারতের বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে শেষ উইকেটে দশম ব্যাটার মোস্তাফিজুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ৫১ রানের অবিশ্বাস্য জুটি গড়ে বাংলাদেশকে জিতিয়েছেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩০ বলে ৪টি চার ২টি ছয়ে জুটিতে একাই ৩৭ তুলেছেন মিরাজ। মোস্তাফিজের অবদান ১১ বলে ১০।
মোস্তাফিজ আর একটা জায়গাতেও অবদান রেখেছেন। দশম ব্যাটার হিসেবে ব্যাট করতে নামলেও বন্ধু মেহেদি হাসান মিরাজকে বারবার সাহজ জুগিয়েছেন। বলেছেন, আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস না। আমি আউট হবো না। তুই নিজের খেলাটা খেল।
মোস্তাফিজের এমন সাহসে বড় শক্তি পেয়েছিলেন, ম্যাচ শেষে এমন কথা জানালেন মিরাজ। ম্যাচপরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে মিরাজ বলছিলেন, ‘দেখুন শেষ উইকেট জুটিতে ব্যাটার যিনি থাকে সে কিন্তু নিজের চেয়ে দশ নম্বরে নামা ব্যাটারকে নিয়েই বেশি চিন্তা করে। কারণ দশ নম্বর ব্যাটার আউট হওয়া মানেই অলআউট। তবে আমাকে তেমন চিন্তা করতে হয়নি। কারণ দশ নম্বর ব্যাটার মোস্তাফিজ বারবার এসে বলছিল, তুই আমাকে নিয়ে চিন্তা করিস না। আমি আউট হবো না। আমি বল ঠেকিয়ে দিবো। তুই মার, তুই তোর খেলাটা খেল। এই কথা আমাকে আরও আত্মবিশ্বাসী করেছে।’
১৩৬ রানে নবম উইকেট হারানোর পর ৪১তম ওভারে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে পাল্লা আক্রমণের সূচনা করেছিলেন মিরাজ। তারপর ওভারের শুরুর বলগুলোতে রান তুলেছেন এবং শেষের বলগুলোতে সিঙ্গেল নিয়ে প্রান্ত বদল করেছেন। যাতে মোস্তাফিজকে বেশি বল না খেলতে হয়। তবে মোস্তাফিজ যে কয়েকটা বল খেলেছেন তাকে বেশ আত্মবিশ্বাসীই মনে হয়েছে।
মিরাজ বলছিলেন, দ্রুত বেশ কয়েকটা উইকেট পড়লও তার বিশ্বাস ছিল তিনি ম্যাচ জেতাতে পারবেন। তরুণ ক্রিকেটার বলেন, ‘সত্যি বলতে আমার মনের মধ্যে একটা বিশ্বাস ছিল যে আমি ম্যাচ জেতাতে পারব। শেষে যারাই ব্যাট করতে এসেছে, হাসান, ইবাদত আমি তাদের সবাইকেই বলছিলাম জেতা সম্ভব। সত্যি বলতে আমি আমার পরিকল্পনায় পরিস্কার ছিলাম। এবং আমার বিশ্বাস ছিল ম্যাচ জেতা সম্ভব।’
ভারতের ১৮৬ রানের জবাব দিতে নেমে ৪৬ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ১৮৭ রান তোলে বাংলাদেশ। মিরাজের আগে লিটন দাস ৪০ ও সাকিব আল হাসান ২৯ রান করেন।