বাকিরা হোটেলে মুশফিক অনুশীলনে
১১ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:০৫
চট্টগ্রাম থেকে: বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আজকের দিনটা কেটেছে বিশ্রামে। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের মাধ্যমে ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজটা শেষ হলো ১০ ডিসেম্বর। প্রথম টেস্ট শুরু হবে ১৪ ডিসেম্বর। হাতে পাক্কা তিন দিন সময় বলে আজকের দিনে অনুশীলনের চেয়ে ক্লান্ত শরীরকে বিশ্রাম দেওয়াই গুরুত্বপূর্ণ মনে করেছেন ক্রিকেটাররা। আগের দিনই জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল আজ দলীয় অনুশীলন নেই। তবে মুশফিকুর রহিমের কী আর অনুশীলন ছাড়া চলে!
ডিসিপ্লিনি, নিবেদন আর অনুশীলনে একাগ্রতা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে খবরের শিরোনাম মুশফিক। দলীয় অনুশীলনের দিন তিনি অনুশীলনে নেমে পরেন সবার আগে, শেষ করেন সবার শেষে। বিশ্রামের দিনেও তার অনুশীলনের সিডিউল থাকে। ম্যাচ শুরুর আগে মাঝে মধ্যে ব্যাট-বলে হালকা নক করে নিতে চান ক্রিকেটাররা। অন্যরা অবশ্য এতে নিয়মিত নয়, তবে মুশফিক একদম নিয়মিত। ফাঁক পেলেই অনুশীলনে নেমে পরা যেন তার অভ্যাস। আজও দেখা গেল এমন দৃশ্য।
সূচী অনুযায়ী দলের বাকিরা যখন হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছেন, কেউ কেউ পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন মুশফিক তখন ব্যাট প্যাড নিয়ে চলে এলেন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে। ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেটা হয়েছে এখানেই, ১৪ ডিসেম্বর থেকে সিরিজের প্রথম টেস্টও হবে এই মাঠে।
বেশ কয়েকজন নেট বোলারকে নিয়ে আজ অনুশীলনে এসেছিলেন মুশফিক। তার সঙ্গে টেস্ট দলে থাকা একমাত্র ক্রিকেটার হিসেবে তাইজুল ইসলামও এসেছিলেন অনুশীলনে। তাইজুলের বাঁহাতি স্পিনের বিপক্ষে অনেকক্ষণ ব্যাটিং করেছেন মুশি। ভারতের টেস্ট দলে বাঁহাতি স্পিনার অক্ষর প্যাটেল আছে। সে কথা ভেবেই হয়তো তাইজুলকে ডেকে নেওয়া মুশফিকের।
ভারতীয় দলে রিস্ট স্পিনার কুলদ্বীপ যাদবও আছেন। যাদবের বিপক্ষে প্রস্তুতি নিতে বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার সাইফুল ইসলামকে নেটে খেলেছেন মুশফিক। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে ডেকে আনা হয়েছে তাকে। চট্টগ্রামের স্পিনার রনি চৌধুরীকে পালা করে খেলেছেন মুশফিক। সেটা হয়তো ভারতের সবচেয়ে অভিজ্ঞ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে খেলার প্রস্তুতি হিসেবে। মুশফিকের নেটে দুজন পেস বোলারও ছিলেন। একজন ডানহাতি অন্যজন বাঁহাতি।
ভারতের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে নামার আগে প্রস্তুতি যেন এতোটুকুও ফাঁক রাখতে চাইছেন না মুশফিক। ব্যাট হাতে অবশ্য সময়টাও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না মুশফিকের। টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে তার সম্প্রতি পারফরম্যান্স নামের সঙ্গে বেমানান। গত এশিয়া কাপের পর টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। তার আগে সর্বশেষ ১৩ ইনিংসে মুশফিকের রান ছিল মাত্র ১৮৩।
ওয়ানডেতেও ব্যাট হাসছে না। সর্বশেষ ১২ ওয়ানডের ১১ ইনিংসে ব্যাট করে মাত্র ২৩০ রান করেছেন, গড় ২৩। ভারতের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তার রান ছিল যথাক্রমে- ১৮, ১২ ও ৭। তবে মুশফিকের টেস্টের পারফরম্যান্স অসাধারণ। এ বছর ৫ টেস্ট খেলে রান করেছেন ৩৭৯, গড় ৫৪.১৪। সেঞ্চুরি করেছেন ২টি, হাফ সেঞ্চুরি ১টি।
ভারতের বিপক্ষেও মুশফিকের টেস্ট ইতিহাস দারুণ। ২০১০ সালে এই ভারতের বিপক্ষেই নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন। ভারতের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি টেস্ট রান করা বাংলাদেশি ব্যাটারও তিনি। সবচেয়ে বেশি গড়, সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি এবং সবচেয়ে বেশি ম্যাচও তিনিই খেলেছেন।
সে হিসেবে ভারতের বিপক্ষে কিভাবে সফল হতে হয় তার রাস্তাটা মুশফিকের জানা থাকারই কথা। নিশ্চয় এবারও মুখিয়ে আছেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
সারাবাংলা/এসএইচএস