২৩১ রানে গুটিয়ে গিয়ে হারের মুখে বাংলাদেশ
২৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:৪১
ঢাকা টেস্টে লড়াই করতে হলে অন্তত আড়াইশ রানের লিড নিতে হতো বাংলাদেশকে। কিন্তু দিনের শুরুতেই দুই উইকেট হারিয়ে বিপদে পরা বাংলাদেশ পরেও বড় জুটি গড়তে পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ২৩১ রানেই গুটিয়ে গেছে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস। যাতে দুই ওই ইনিংস মিলিয়ে ১৪৫ রানের লিড পেয়েছে বাংলাদেশ।
এই লিড পেরুনো ভারতের জন্য কঠিন হওয়ার কথা নয়। শেষ দিকে লিটন দাসের সঙ্গে তাসকিন আহমেদ না দাঁড়ালে এই লিডটাও পেত না বাংলাদেশ। অষ্টম উইকেটে লিটন-তাসকিন জুটি তোলে ৬০ রান। বেশ কয়েকবার ‘জীবন’ পাওয়া লিটন দাস ৯৮ বল খেলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭৩ রান করেন। নয় নম্বরে নেমে তাসকিন ৪৬ বলে ৪টি চারের সাহায্যে ৩১ রানে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ৭ রান নিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে বাংলাদেশ। সকাল সকাল নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হককে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে লাইন মিস করেছেন শান্ত। বল তার প্যাডে আঘাত হানলে পরে রিভিউ নিয়েও এলবিডব্লিউ থেকে বাঁচতে পারেননি। ৩১ বলে ৫ রান করে ফেরেন।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটার মুমিনুল হক সৌরভ ফেরেন তার খানিকক্ষণ পরই। ক্রিজে নেমে বেশ ভালোই খেলছিলেন অনেকদিন পর দলে ফেরা মুমিনুল। ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ সিরাজের পায়ের ওপরের বল দারুণ ফ্লিকে চার হাঁকিয়েছিলেন।
তবে সেই সিরাজেই কাটা পরেছেন মুমিনুল। লেন্থ বলে ঠিকমতো ব্যাট নিতে পারেননি। ৫ রানে আউট হয়েছেন দলের ২৬ রানের মাথায়। অপর প্রান্তে তরুণ ওপেনার জাকির হাসান অবিচলই ছিলেন। তার সঙ্গে সাকিব আল হাসান যোগ দিয়ে বাংলাদেশকে টানছিলেন। শুরুতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দে না থাকলেও উইকেটে সেট হয়ে বেশ ভালোই খেলছিলেন সাকিব।
কিন্তু ৩৬ বলে ১৩ রান করার পর হঠাৎ-ই ভুল করে বসলেন। জয়দেব উনাদকাটের স্লোয়ার বুঝতে পারেননি। শক্ত হাতে খেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু স্লোয়ার ডেলিভারি টাইমিং হয়নি। বল ব্যাটের ওপরের কানায় লেগে বাতাসে ভেসে উঠে। ৫১ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
প্রথম সেশনের শেষভাগে অক্ষার প্যাটেলে কাটা পরেছেন মুশফিকুর রহিমও। ব্যাক ফুটে খেলতে গিয়ে অক্ষারের স্পিন মিস করে ৯ রানের মাথায় এলবিডব্লিউ হয়েছেন মুশি। দলের রান তখন ৭০। শুরুতে একপ্রান্ত থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পরলেও অপরপ্রান্তে তরুণ জাকির হাসান অবশ্য দারুণ খেলছিলেন।
তামিম ইকবালের ইনজুরিতে সুযোগ পাওয়া জাকির চট্টগ্রাম টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। ‘আত্মঘাতি’ এক শট খেলে না ফিরলে ঢাকাতেও হয়তো সেঞ্চুরির দেখা পেতেন! ১৩৫ বল খেলে ৫টি চারের সাহায্যে ৫১ রান করে উমেশ যাদবের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল কাট করতে চেয়ে ক্যাচ তুলে দেন জাকির। মেহেদি হাসান মিরাজ ফিরেছেন খানিক বাদেই।
এরপর পাল্টা আক্রমণের পথ বেছে নিয়েছিলেন লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহান। ভালো খেলতে থাকলেও দুজনের সপ্তম উইকেট জুটি বড় হয়নি। ২৯ বলে ২টি চার ১টি ছয়ের সাহায্যে ৩১ রান করা সোহান দৃষ্টিকটুভাবে স্ট্যাম্পিং হয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে।
তারপরই দ্বিতীয় ইনিংসের সেরা পার্টনারশিপটা গড়লেন লিটন-তাসকিন। তাসকিনের ব্যাটিং বেশ নজড় কেড়েছে। দলীয় ২১৯ রানের মাথায় মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়েছেন লিটন। তারপর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি বাংলাদেশ। ভারতের হয়ে তিন উইকেট নিয়েছেন অক্ষর প্যাটেল। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
সারাবাংলা/এসএইচএস