Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অ্যানফিল্ডে লিভারপুলকে বিধ্বস্ত করল রিয়াল

স্পোর্টস ডেস্ক
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৩:৫৬

ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে ম্যাচের ১৪ মিনিটের ভেতর ডারউইন নুনেজ আর মোহাম্মদ সালাহর গোলে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে লিভারপুল। ঠিক সেই সময়টাতে মনে হচ্ছিল এবার প্রতিশোধটা বেশ ভালোভাবেই নিচ্ছে লিভারপুল। তবে খেলা যে তখন কেবলই শুরু। এরপর ভিনিসিয়াস জুনিয়রের জাদুকরি পারফরম্যান্সে সমতায় ফিরল রিয়াল। আর দ্বিতীয়ার্ধে করিম বেনজেমার জোড়া গোলের সঙ্গে এডার মিলিতাওয়ের একটি গোলে অ্যানফিল্ডে লিভারপুলকে ৫-২ গোলের ব্যবধানে বিধ্বস্ত করল রিয়াল।

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে লিভারপুলের ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে আতিথ্য নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যানফিল্ডে রিয়ালের আতিথ্যটা বেশ ভালোভাবেই দিয়েছিল অল রেডরা। তবে এরপর আর ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে পেরে ওঠেনি লিভারপুল। ভিনিসিয়াস জুনিয়র ও করিম বেনজেমার দুটি করে গোলের সঙ্গে এডার মিলিতাওয়ের একটিতে ৫-২ গোলের বিশাল জয় রিয়ালের।

ম্যাচের ৪ মিনিটের মাথায় মোহাম্মদ সালাহর বাড়ানো মাটি কামড়ানো ক্রস দারুণ এক ফ্লিক শটে জালে জড়িয়ে লিভারপুলকে এগিয়ে নেন ডারউইন নুনেজ। এর রেশ কাটতে না কাটতেই ১৪তম মিনিটে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার ভুলে গোল করে ব্যবধান ২-০ করেন মোহাম্মদ সালাহ। তবে এরপরেই জ্বলে ওঠে রিয়াল। ২১ মিনিটে করিম বেনজেমার পাস থেকে দারুণ গোলে ব্যবধান ২-১ করেন ভিনিসিয়াস। ঠিক মিনিট ১৫ পরে লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার শট নেন সোজাসুজি ভিনিসিয়াসের বরাবর আর ভিনিসিয়াস কেবল পা বাড়িয়ে দিয়ে বল জালে জড়িয়ে রিয়ালকে ২-২ গোলে সমতায় ফেরান। দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেই মদ্রিচের সেটপিস থেকে মাথা ছুঁইয়ে রিয়ালকে ৩-২ গোলের ব্যবধানে এগিয়ে নেন এডার মিলিতাও। এরপর ম্যাচের ৪৮ ও ৬৭ মিনিট করিম বেনজেমা জোড়া গোল করলে রিয়ালের বড় জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত রিয়াল মাদ্রিদ ৫-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে।

অ্যানফিল্ডে ম্যাচের তখন সবে চার মিনিটের খেলা চলছে। ডান দিক থেকে মোহাম্মদ সালাহ দারুণ এক আক্রমণে ওঠেন। রিয়ালের দুই ডিফেন্ডারের মধ্য দিয়ে ডি বক্সের ভেতর মাটি কামড়ানো পাস দেন। রিয়ালের ডিফেন্ডারের পেছন দিয়ে চুপিচুপি ঢুকে পড়েন ডারউইন নুনেজ আর দারুণ এক ব্যাকফ্লিকে বল জালে জড়ান।

এর ঠিক ১০ মিনিট পর বড্ড বড় ভুল করে বসেন থিবো কোর্তোয়া। গাকপোর করা আক্রমণ থেকে বল কেড়ে নিয়ে থিবো কোর্তোয়াকে ব্যাক পাস দেন দানি কার্ভাহাল। কোর্তোয়া বল নিজের পায়ে রেখে সময় নিয়ে শট করতে চেয়েছিলেন তবে শট করার আগে বল আগে হাটুতে লাগিয়ে অনেকটা পাসই দিয়ে দেন সামনে থাকা মোহাম্মদ সালাহকে। আর এমন সুযোগ পেয়ে আর হাতছাড়া করেননি সালাহ। দারুণ শটে বল জালে পাঠিয়ে অ্যানফিল্ডকে উল্লাসে ভাসান।

ম্যাচের ১৪ মিনিটের মধ্যে দুই গোলে পিছিয়ে পড়া রিয়াল তখনও দমে যায়নি। নিজেদের গুছিয়ে নিয়ে আক্রমণ সাজাতে শুরু করে। সুযোগ আসে কিছুক্ষণ পরেই। অবশ্য এর পুরো কৃতিত্বটা যায় ব্রাজিলিয়ান তরুণ তারকা ভিনিসিয়াসের ওপরই। দারুণ এক আক্রমণে লিভারপুলের ডি বক্সে ঢুকে পড়ে বল পাস দেন বেনজেমাকে। নিজের জায়গা থেকে না সরেই ভিনিসিয়াসকে পাস ব্যাক দেন বেনজেমা আর বাঁ দিকের ডি বক্সের কোনা থেকে ডান পায়ের বাঁকানো দুর্দান্ত এক শটে লক্ষ্যভেদ করেন ভিনিসিয়াস। রিয়াল মাদ্রিদ এক গোল শোধ করে দেয় ২১তম মিনিটেই।

সমতায় ফিরতে আর বেশি সময় নেয়নি রিয়াল। ম্যাচের ৩৬তম মিনিটে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার মতোই বড় ভুল করে বসেন লিভারপুলের ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক অ্যালিসন বেকার। প্রতি আক্রমণে ভিনিসিয়াসের কাছে বল যাওয়ার আগেই তা ইন্টারসেপ্ট করেন লিভারপুল ডিফেন্ডার জো গোমেজ আর বল পাস দেন অ্যালিসন বেকারকে। এই ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক বল পেয়ে তা ফিরতি পাস দিতে চেয়েছিলেন গোমেজকে। কিন্তু তার নেওয়া শট সরাসরি লাগে ভিনিসিয়াসের পায়ে আর তার পায়ে লেগেই বল অ্যালিসনের মাথার ওপর দিয়ে জড়ায় জালে। রিয়াল ২-২ গোলে ফেরে সমতায়। আর প্রথমার্ধ শেষ হয় সমতাতেই।

দ্বিতীয়ার্ধে বিরতি থেকে ফিরেই ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিড নেয় রিয়াল মাদ্রিদ। ৪৭তম মিনিট ডি বক্সের বাঁ দিকে বাই লাইনের কাছেই সেটপিস পায় রিয়াল। সেটপিস নিতে আসেন লুকা মদ্রিচ। তার নেওয়া সেটপিস থেকে লিভারপুল ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে হেডে গোল করে রিয়ালকে লিড এনে দেন এডার মিলিতাও। লিড নেওয়ার পর আরও বেশি মরিয়া হয়ে ওঠে রিয়াল। খুঁজতে থাকে চতুর্থ গোল।

ব্যবধান বাড়াতে বেশি সময় নেয়নি অল হোয়াইটসরা। ৫৫ মিনিটের মাথায় কার্ভাহালের দেওয়া পাস ধরে আক্রমণে ওঠেন রদ্রিগো। এরপর বেনজেমার সঙ্গে বল দেওয়া নেওয়া করে ডি বক্সের ভেতর ঢুকে জায়গা করে নেওয়া বেনজেমাকে বল ব্যাক দেন রদ্রিগো। আর সেখান থেকে জোরালো শট নেন বেনজেমা। তার শট লিভারপুল ডিফেন্ডার জো গোমেজের গায়ে লেগে দিক পালটে জালে জড়ালে রিয়াল এগিয়ে যায় ৪-২ গোলের ব্যবধানে।

তবে অ্যানফিল্ডে নাটকের তখনও অনেক বাকি। খেলার তখন ৬৭তম মিনিট চলছিল। বাঁ দিক থেকে ভিনিসিয়াস জুনিয়রের দুর্দান্ত আক্রমণ ঠেকাতে ব্যর্থ লিভারপুলের রক্ষণ। ভিনিসিয়াস বাঁ দিক থেকে বল ক্রস করেন ডি বক্সের ডান দিকে থাকা বেনজেমার উদ্দেশ্যে। বল পায়ে নিয়ে শট নেওয়ার আগে বেনজেমাকে চ্যালেঞ্জ করতে এগিয়ে আসেন লিভারপুল গোলরক্ষক অ্যালিসন। তবে ঠান্ডা মাথায় তাকে কাটিয়ে কোনা দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন করিম বেনজেমা। রিয়াল মাদ্রিদ এগিয়ে যায় ৫-২ গোলের ব্যবধানে। আর তাতেই নিশ্চিত হয় রিয়ালের ৫-২ গোলের জয়। আর চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে এক দিয়ে রাখলো রিয়াল। দুই দলের ফিরতি লেগে এস্তাদিও সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আগামি ১৬ মার্চ মুখোমুখি হবে দুই দল।

সারাবাংলা/এসএস

উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগ করিম বেনজেমা ভিনিসিয়াস জুনিয়র লিভারপুল বনাম রিয়াল মাদ্রিদ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর