Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম টি-২০ সিরিজ জয়

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
১২ মার্চ ২০২৩ ১৮:১৭

অসাধারণ বোলিংয়ে বোলাররা ক্ষেত্রটা গুছিয়েই রেখেছিলেন। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে ইংল্যান্ডকে ১১৭ রানেই গুটিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্ট। শেষ দিকে টপাটপ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়লেও বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারানোর এই সুযোগটা শেষ পর্যন্ত হাতছাড়া করেনি বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপও।

১৮.৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয়ের জন্য ১২০ রান তুলে ফেলে বাংলাদেশ। ৪৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থেকে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাট-বল দুই বিভাগে আজ মেহেদি হাসান মিরাজও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন।

এই জয়ে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো বাংলাদেশের। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জেতা বাংলাদেশ এখন ২-০ তে এগিয়ে। টি-টোয়েন্টি সংস্করণে বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটা প্রথম সিরিজ জয়। এই সিরিজের আগে ইংলিশদের বিপক্ষে মাত্র একটা টি-টোয়েন্টি জিতেছিল টাইগাররা। এই সিরিজে পরপর দুই ম্যাচ জিতে ইংলিশদের সিরিজ হারিয়ে দিল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্ট দুর্দান্ত পারফর্ম করছে অনেকদিন ধরেই। আজ ইংলিশদের সঙ্গে বোলিং পারফরম্যান্স মনে রাখার মতোই হলো। বিশ্বসেরাদের ১১৭ রানে আটকে রাখা কী আর চাট্টিখানি কথা!

রোববার (১২ মার্চ) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্যাটাররা অবশ্য ধুঁকল। ১১৭ রানের জবাব দিতে নেমে ২৭ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার দুজনেই ফেরেন ৯ রান করে।

তবে সেটাকে বড় বিপদ মনে হয়নি! টার্গেট যে কেবল ১১৮। তিনে নেমে চারে নামা তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে দলকে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। গত ম্যাচের মতোই দারুণ খেলছিলেন দুজনই। কিন্তু হঠাৎ-ই তৌহিদ হৃদয়ের মনোযোগ নষ্ট হয়ে গেল কিনা কে জানে! ১৮ বলে ১৭ রান করা হৃদয় রেহান আহমেদের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয়েছেন।

তারপর বল হাতে দুর্দান্ত মেহেদি হাসান মিরাজ আসেন ক্রিজে। দুর্দান্ত ব্যাটিংও করেছেন মিরাজ। অবশ্য ইনিংসটা বড় করতে পারেননি। মঈন আলী ও আদিল রশিদকে দুটি বড় ছক্কা হাঁকানো মিরাজ ১৬ বলে ২০ রান করে ফিরেছেন। তারপর বেশ ভালোই চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

মাত্র ৮ রানের ব্যবধানে মিরাজ, সাকিব আল হাসান ও আফিফ হোসেন ধ্রুবকে ফিরিয়ে ম্যাচে ফেরার রাস্তা তৈরি করে ইংল্যান্ড। তবে অপরপ্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত অবিচলই ছিলেন। শেষ দিকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদও। ১৮.৫ ওভারে বাংলাদেশ জয়ের জন্য যখন ১২০ রান তুলে ফেলল শান্ত তখন ৪৬ রানে অপরাজিত। ৪৭ বলে ৩টি চারের সাহায্যে দায়িত্বশীল এই ইনিংস খেলেছেন শান্ত। তাসকিন ৩ বলে ৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এর আগে অসাধারণ বোলিং করেছেন বাংলাদেশি বোলাররা। জেসন রয়ের বদলে ডেভিড মালানকে নিয়ে ওপেনিংয়ে নেমেছিলেন ফিল সল্ট। মালানকে বেশিদূর এগুতে দেননি তাসকিন আহমেদ।

ইনিংসের তৃতীয় ওভারে ৮ বলে ৫ রান করা মালানকে নাজমুল হোসেন শান্তর ক্যাচ বানিয়েছেন তাসকিন। এরপর তিনে নামা মঈন আলীকে সঙ্গে নিয়ে এগুচ্ছিলেন সল্ট। সাকিব আল হাসান ভেঙেছেন এই জুটি। সপ্তম ওভারে প্রথম আক্রমণে এসে সল্টকে ক্যাচ এবং বোল্ড করেছেন সাকিব। ফেরার আগে ইংলিশ ওপেনার ১৯ কলে ২৫ রান করেন।

খানিক বাদে পরপর আরও দুই উইকেট পায় বাংলাদেশ। দলীয় ৫৫ রানের মাথায় অসাধারণ এক স্লোয়ার ইয়র্কারে জস বাটলারকে (৪) বোল্ড করেছেন হাসান মাহমুদ। দলীয় খাতায় আর ২ রান যোগ হতেই মঈন আলীকেও ফেরান মেহেদি হাসান মিরাজ। ৫৭ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংলিশরা। ইনিংসের তখন নবম ওভারের খেলা চলছিল।

এরপর স্যাম কারানকে নিয়ে এগুচ্ছিলেন বেন ডাকেট। পঞ্চম উইকেটে ৩৪ রান যোগ করেন দুজন। এটাই ইংল্যান্ডের ইনিংসের সেরা জুটি। তবে দলীয় ৯১ রানের মাথায় এই জুটি ভাঙলে ইংলিশদের অর দাঁড়াতেই দেয়নি বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ।

মেহেদি হাসান মিরাজ মাঝের ওভারগুলোতে অসাধারণ বোলিং করেছেন। শামীম পাটোয়ারীকে বসিয়ে আজ মিরাজকে একাদশে নিয়েছে বাংলাদেশ। নির্বাচনটা যে ভুল ছিল না তরুণ অলরাউন্ডার প্রমাণ করেছেন দুর্দান্তভাবে। চার ওভারে ১২ রানে নিয়েছেন চার উইকেট। মিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়েই ইনিংসের মাঝে এবং শেষের দিকে সুবিধা করতে পারেনি ইংল্যান্ড।

২০ ওভারে ১১৭ রানে গুটিয়ে যায় বর্তমান বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। বেন ডাকেট সফরকারীদের পক্ষে ২৮ বলে সর্বোচ্চ ২৮ রান করেছেন। বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন চার ওভারে ২৭ রানে, মোস্তাফিজ চার ওভারে ১৭ রানে, সাকিব আল হাসান ৩ ওভারে ১৩ রানে ও হাসান মাহমুদ ২ ওভারে ১০ রানে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।

সারাবাংলা/এসএইচএস

বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর