বাংলাওয়াশের শিকার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড
১৪ মার্চ ২০২৩ ১৮:৪০
তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের তৃতীয়টিতে বাংলাদেশের ১৫৮ রানের জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ড বেশ ভালোভাবেই এগুচ্ছিল। একটা সময় ৪২ বলে ৫৯ রান লাগত সফরকারীদের, তাদের হাতে তখন ৯ উইকেট। দারুণ ব্যাটিং করছিলেন জস ব্যাটলার ও ডেভিড মালান। তবে শেষ দিকে বাংলাদেশের বোলিং ডিপার্টমেন্টের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সহজ সমীকরণটা মিলাতে পারেননি ইংলিশরা। অসাধারণ বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে শেষ পর্যন্ত ১৬ রানে হারিয়েছেন টাইগাররা।
১৫৮ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে ইংল্যান্ডকে ১৪২ রানেই আটকে রেখেছে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচও জিতেছিল সাকিব আল হাসানের দল। অর্থাৎ টি-টোয়েন্টি সিরিজে ইংলিশদের হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ।
এই সিরিজের আগে ইংলিশদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের কোনো জয়ই ছিল না। এই সিরিজে টানা তিন ম্যাচে মিলল তিন জয়। নিশ্চয় মনে রাখবে বাংলাদেশ!
মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৫৮ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে নেমে শুরুতেই উইকেট পেয়েছিল বাংলাদেশ। বিপিএলে আলো ছড়ানো তরুণ তানভীর ইসলামকে অভিষেক ক্যাপ দেওয়া হয় আজ। তাকে দিয়েই ইনিংসের সূচনা করান অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। আর ওভারের তৃতীয় বলেই উইকেট এনে দিয়ে সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন তানভীর।
তবে এরপর শক্ত একটা জুটি গড়েন ডেভিড মালান ও অধিনায়ক জস বাটলার। দ্বিতীয় উইকেটে ৯৫ রানের দুর্দান্ত একটা জুটি গড়েন ইংল্যান্ডের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার। মনে হচ্ছিল শেষ ম্যাচ আর জেতা হচ্ছে না বাংলাদেশের। ঠিক তখনই স্বাগতিকদের পেস আক্রমণের পাল্টা আক্রমণ!
১৪তম ওভারে ইংলিশদের ‘সোনার সংসার’ তছনছ করে দিয়েছে বাংলাদেশ। ওভারের প্রথম বলেই দারুণ খেলতে থাকা ডেভিড মালানকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান মোস্তাফিজুর রহমান। ৪৭ বলে ৬টি চার ২টি ছয়ে ৫৩ রান করা মালান ফেরার পরের বলেই দুর্দান্ত এক থ্রোতে অধিনায়ক বাটলারকে রান আউট করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। ৩১ বলে ৩টি চার ১টি ছয়ে ৪০ রান করে ফেরেন বাটলার।
১৭তম ওভারে নিজের কোটার চতুর্থ ওভারটি করতে এসে আগুন ঝড়িয়েছেন তাসকিন আহমেদ। ওভারের দ্বিতীয় বলে মঈন আলীকে মেহেদি হাসান মিরাজের ক্যাচ বানান তাসকিন। ওভারের শেষ বলে বেন ডাকেটের স্টাম্প ভেঙেছেন দীর্ঘদেহী পেসার। ওই ওভারে মাত্র ৪ রান খরচায় দুই উইকেট তুলে নেন তাসকিন। তাতেই ম্যাচটা বাংলাদেশের হাতের নাগালে চলে আসে।
বাকি কাজটা সহজেই সেরেছেন সাকিব আল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমানরা। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে স্যাম কারানকে ফিরিয়ে ইংল্যান্ডকে দাঁড়ানোর সুযোগই দেননি সাকিব। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৪২ রানে থেমেছে ইংল্যান্ড।
বাংলাদেশের হয়ে তাসকিন ৪ ওভারে ২৬ রান খরচায় দুই উইকেট নিয়েছেন। মোস্তাফিজুর রহমান চার ওভারে মাত্র ১৪ রান খরচায় নিয়েছেন এক উইকেট। সাকিব ৪ ওভারে ৩০ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট।
এর আগে লিটন দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করাতে পেরেছে বাংলাদেশ। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট জুটিতে তোলে ৫৫ রান। ওপেনিং জুটিতে দুই ওপেনার লিটন দাস ও রনি তালুকদার অবশ্য বেশি স্ট্রাইকরেটে ব্যাটিং করতে পারেননি।
দলীয় ৫৫ রানের মাথায় ২২ বলে ৩টি চারের সাহায্যে ২৪ রান করে ফিরেছেন রনি। তারপর অপর ওপেনার লিটন দাস এবং তিনে নামা নাজমুল হোসেন শান্ত দ্বিতীয় উইকেটে গড়ে ৫৮ বলে ৮৪ রানের দারুণ কার্যকর এক জুটি। লিটন রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৭৩ রানে। ৫৭ বল খেলে ১০টি চার ১টি ছক্কার সাহায্যে এই রান করেন তিনি।
লিটন ফেরার পর ইনিংসের শেষ দিকে সাকিব আল হাসান নেমে রানের গতি বাড়াতে পারেননি। সাকিব-শান্তর তৃতীয় উইকেট জুটি ১৮ বলে তোলে ১৯ রান!
২০ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১৫৮ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। শান্ত ৩৬ বলে ১টি চার ২টি ছয়ে ৪৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। সাকিব ৬ বলে ৪ রানে অপরাজিত ছিলেন। ইংল্যান্ডের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন ক্রিস জর্ডান ও আদিল রশিদ।
সারাবাংলা/এসএইচএস