কদিনেই বাংলাদেশকে যেভাবে পাল্টে দিলেন হাথুরুসিংহে
২৬ মার্চ ২০২৩ ১৮:৫৯
চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দ্বিতীয় মেয়াদে হেড কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত টানা ৯ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। এই ৯ ম্যাচে হার মাত্র ২টিতে, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে। শুধু জয়-পরাজয়ের পরিসংখ্যান নয়, বাংলাদেশ মাঠের পারফম্যান্সেও মন জিতেছে।
বাংলাদেশ আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলেছে। ঘরের মাঠে স্পিননির্ভরতা থেকে সরে এসেছে। ট্রু উইকেট বানিয়ে পেস আক্রমণ দিয়েই প্রতিপক্ষকে এখন কাবু করছেন টাইগাররা। ব্যাটিংয়েও ফুটে উঠেছে আক্রমণাত্মক ক্রিকেটের ছাপ। ফিল্ডিংয়ে এসেছে উন্নতি। গত কয়েক দিনের পারফরম্যান্সের প্রসংশা সবার মুখে মুখে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে বলছেন, ক্রিকেটারদের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন, মানসিকতায় পরিবর্তন এনেছেন। সাফল্য মিলছে তাতেই।
অল্প সময়ে ক্রিকেটারদের দক্ষতা বাড়ানো সম্ভব না। তবে মানসিকতার উন্নতি ঘটানো সম্ভব। সেটিই করেছেন হাথুরুসিংহে। তার কথায় ‘মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা’ দিয়েছেন ক্রিকেটারদের।
আগামীকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি খেলতে নামবে বাংলাদেশ। তার আগে আজ রোববার (২৬ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে এসে হাথুরু বলছিলেন, ‘একটা কথাই বলি—মনস্তাত্ত্বিক নিরাপত্তা। এটা বড় একটা শব্দ। এর পেছনে অনেক ব্যাপার আছে। যেমন ধরেন আপনি এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলেন, যাতে খেলোয়াড়রা ফলাফলের ব্যাপারে, এর প্রভাবের ব্যাপারে চিন্তা না করে নিজের সেরাটা দিতে পারল। শুধু কোচ বা নির্বাচকেরা নন, এমনকি সতীর্থদের কাছ থেকেও…তারা যদি চেষ্টা করার মতো উন্মুক্ত হতে পারে, এরপরও ব্যর্থ হয়—তাহলে তো ঝামেলা নেই। তারা ওই একই খেলোয়াড়ই থাকবে, যাদের ওপর আমাদের আস্থা আছে। আমার মনে হয় এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।’
হাথুরুসিংহে মনে করছেন তার দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থাৎ গত দুই মাসে ক্রিকেটারদের স্কিলের বড় উন্নতি হয়নি। তিনি উন্নতি ঘটাতে চেয়েছেন ক্রিকেটারদের মানসিকতা, ‘আমার মনে হয় না কিছু বদলেছে। তারা তো একই স্কিলের একই খেলোয়াড় আছে। শুধু ড্রেসিংরুমের পরিবেশ একটু বদলেছে শুধু—আমরা যেভাবে কথা বলি, আলোচনা করি। আমি দলের মাঝে মনস্ত্বাত্ত্বিক নিরাপত্তা আনার চেষ্টা করেছি। তাদের বলেছি, তারা ভালো করুক বা ব্যর্থ হোক, তাদের মূল্য আমাদের কাছে আছে। তারা আমাদের কাছে মূল্যবান। ফলে খেলোয়াড়দের কিছুই বদলায়নি, আমি জানি না এর আগে কী হয়েছে, তবে স্কিল একই আছে।’
বাংলাদেশের হেড কোচ বলেন, ‘অন্য কোচেরাও বলেছে আমাকে—এটিই সবচেয়ে বড় পরিবর্তন। আমিও সেটিই তৈরি করার চেষ্টা করছিলাম। এমন একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারলে তারা নিজেদের সেরাটা দিতে পারবে। মানে, তাদের সেরাটা যদি মাঝেমাধ্যে যথেষ্ট না-ও হয়, আমরা হারব। কিন্তু তাতে তো ক্ষতি নেই।’
গত কদিন যেভাবে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে সফল হয়েছে বাংলাদেশ আগামীতেও সেই একই কায়দায় খেলার বার্তা দিয়ে রাখলেন হাথুরু। বলেছেন, ‘সামনেও আমরা এভাবেই খেলতে চাই। আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে চাই। আগ্রাসী ক্রিকেট মানে এই নয় যে আমরা গেলাম আর জোরে জোরে মারলাম। সবদিক থেকেই আগ্রাসী হয়ে ওঠা। দল নির্বাচন, ফিল্ড সাজানো, আমাদের শরীরী ভাষা, ফিল্ডিং, ব্যাটিং। কৌশলগত দিক দিয়েও আগ্রাসী হব, ফল কী হবে, তা নিয়ে ভাবব না। নিজেদের সেরাটাই খেলতে চাই। যখনই আমরা এমন আগ্রাসী ক্রিকেট খেলি, মুক্তভাবে খেলেছি—এ দল তখনই ভালো করেছে।’
সারাবাংলা/এসএইচএস