মেসির মতো প্রতিভাধর কে এই ইয়ামাল?
৩০ এপ্রিল ২০২৩ ১৩:০৯
ক্যাম্প ন্যুতে রিয়াল বেতিসকে হারিয়ে শিরোপার সুবাস পাওয়া বার্সেলোনা এদিন আবিষ্কার করলো আরেকটি রত্নের। ম্যাচের ৮৩ মিনিটের মাথায় গোল্ডেন বয় গাভিকে তুলে মাঠে নামানো হলো মাত্র এক কিশোরকে। ক্যাম্প ন্যু’র স্ক্রিনে ভেসে উঠলো নাম তার লামিন ইয়ামাল। শারীরিক গড়ন আর চেহারা দেখে স্পষ্টত বোঝা যায় এখনো কৈশোর শেষ হয়নি তার। মাত্র ১৫ বছর ২৯০ দিনে মাঠে নেমে পড়েছেন বার্সেলোনার জার্সি গায়ে। আর ক্যাম্প ন্যুতে মাত্র ৭ মিনিট খেলেই জিতে নিয়েছেন কোচ জাভি হার্নান্দেজের মন। জাভির চোখে ইয়ামালকে মেসির মতো প্রতিভাবানই মনে হচ্ছে। ম্যাচ শেষে জাভি বলেন, ইয়ামাল ‘বিশেষ প্রতিভা।’
গাভির বদলি হিসেবে নামানো হয় তাকে। ১৫ বছর ২৯০ দিন বয়সে মাঠে নেমে বার্সেলোনার সুদীর্ঘ ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার তিনিই। স্পেনের শীর্ষ ফুটবলে তার চেয়ে কম বয়সে খেলেছেন আর মাত্র চার জন। শুধু বয়সের কারণেই নয়, আলোচনার জন্ম দেন ইয়ামাল পারফরম্যান্সেও। মাঠে নামার পরপরই একটি গোল পেতে পারতেন তিনি। দারুণ দক্ষতায় যা বাঁচিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক। একটি গোলে সহায়তাও থাকতে পারত। তবে তার অসাধারণ এক চিপ প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককের সামনে ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি উসমান দেম্বেলে।
মাত্র ৭ মিনিটে মাঠে থাকা ইয়ামাল মোট ১২ বার বল স্পর্শ করেছেন আর পাস দিয়েছেন মাত্র ৮টি। এতেই একটি গোলের সুযোগ তৈরি করে আর নিজেও পেয়েছিলেন একটি গোলের সুযোগ। ৮৩ হাজার দর্শকের সামনে খেলতে নামা ১৫ বছর বয়সী এই কিশোরের মনে ছিল না কোনো ভয়ডরের ছাপ। খেলেছেন নির্ভার হয়ে।
গেল সেপ্টেম্বরে মূল দলের সঙ্গে অনুশীলনে ডাক পান ইয়ামাল। আর তখন থেকেই তার ভক্ত হয়ে গেছেন বার্সা কোচ জাভি। ২০০৭ সালের ১৩ জুলাই স্পেনে জন্ম লামিন ইয়ামালের। তবে তার বাবা ও মা দুইজনের কেউই স্প্যানিশ নন। তার বাবা মরক্কোর এবং মা ইকুয়েটোরিয়ালের। কিন্তু জন্মসূত্রে ইয়ামাল পেয়েছেন স্প্যানিশ নাগরিকত্ব।
লা মাসিয়া থেকে উঠে আসা লামিন ইয়ামাল বার্সার বয়সভিত্তিক দলগুলোতে খেলেছেন। সেই সঙ্গে স্পেনে অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৬, ১৭ এবং ১৯ দলেও খেলে ফেলেছেন ইতোমধ্যেই। আক্রমণভাগের সব পজিশনে খেলতে তো পারেন সেই সঙ্গে খেলতে পারেন অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবেও। তবে তার পছন্দের পজিশন সেন্টার ফরোয়ার্ড। খেলার ধরনের মেসির ছাপ পাওয়া যায় বলেই মেসির উত্তরসূরি হিসেবেও দেখা হচ্ছে তাকে।
ম্যাচ শেষে ইয়ামালে স্তুতি গেয়ে বার্সা কোচ জাভি হার্নান্দেজ বলেন, ‘আমি ওকে বলেছিলাম মাঠে নেমে যা ইচ্ছা চেষ্টা করে দেখতে এবং সে তা করেছে। ১৫ বছর বয়সে চিন্তা করে দেখুন! সে স্পেশাল একজন। সে গোলও পেতে পারত। দারুণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছে। সে দেখিয়ে দিতে পেরেছে যে তার ভেতর কী আছে। তার প্রতিভা প্রকাশ্যই। তার কয়েকটি পাস ছিল দুর্দান্ত।’
ইয়ামালের অভিষেক ম্যাচের পর লিওনেল মেসি এবং আনসু ফাতির সঙ্গে তুলনা করা হয় তাকে। এ ব্যাপারে জাভি বলেন, ‘হ্যাঁ, সে অনেকটা ওদের মতো, কারণ আক্রমণভাগে ওর প্রতিভা একদম সহজাত, যা এতটা খুঁজে পাওয়া বিরল। তাকে স্রেফ ১৫ বছর বয়সী মনে হয় না, আরও অনেক পরিণত লাগে খেলা দেখে। সে শীর্ষ পর্যায়ে খেলার জন্য তৈরি এবং অনুশীলন খুব ভালো করছে। যে ১০ মিনিট সে মাঠে ছিল, আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলেছে, যা আমরা দেখতে চাই। এই ক্লাবে সে নিজের ছাপ রাখতে পারে।’
সারাবাংলা/এসএস