আর্জেন্টিনার ক্লাবে যাচ্ছেন শামস উল হুদা একাডেমির ফুটবলার
২৭ মে ২০২৩ ১৫:৩৭
২০১১ সালে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে যশোরে শুরু হয় শামস উল হুদা ফুটবল একাডেমি। আর এরপর থেকেই একের পর বিস্ময়কর ফুটবলারের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন তারা। ২০১৩ সালে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সঙ্গে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলেন এই একাডেমির হাফিজুর রহমান। ২০২২ সালে ব্রাজিলের সোসিয়েদাদ স্পোর্টিভ দ্য গামা ক্লাবের সঙ্গে অনুশীলনের সুযোগ পান নয়ন হোসেন। এবার এই একাডেমির তরুণ ফুটবলার মিনহাজুল করিম স্বাধীনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে আর্জেন্টিনার তৃতীয় বিভাগের দল অ্যাথলেটিকো ভিলা স্যান কার্লোস ক্লাবে।
একাডেমি সূত্রে জানিয়েছে ইতোমধ্যেই স্বাধীনকে স্যান কার্লোস ক্লাবের সঙ্গে অনুশীলনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৫ আগস্টের মধ্যে স্বাধীনকে যোগ দিতে হবে আর্জেন্টাইন ক্লাবে।
স্যান কার্লোস ক্লাবের সাথে স্বাধীনের যোগাযোগ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের ট্রেইনার অ্যারিয়েল কোলম্যানের মাধ্যমে। কোলম্যান শামস উল হুদা একাডেমী পরিদর্শনে এসেছিলেন । স্বাধীনের খেলা দেখে মুগ্ধ হন তিনি । তার উদ্যোগে পাঠানো স্বাধীনের ভিডিও নজর কাড়ে স্যান কার্লোস ক্লাব কর্তৃপক্ষের।
স্বাধীন বয়সভিত্তিক ফুটবলের পরিচিত মুখ। ২০২২ সালে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের যুব দল নিয়ে অনুষ্ঠিত বাফুফে অনূর্ধ্ব-১৮ লিগে চ্যাম্পিয়ন শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে খেলেছেন। স্বাধীন ২০১৬ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৪ সুপার কাপে বাংলাদেশের হয়ে খেলেছেন। ছিলেন ২০১৭ সালের নেপালের মাটিতে আয়োজিত অনূর্ধ্ব-১৫ সাফ দলেও। ২০১৮ সালে কাতারে অনুষ্ঠিত এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ দলেও।
আর্জেন্টিনার ক্লাব থেকে ডাক পেয়ে উচ্ছ্বসিত স্বাধীনের কাছে পুরো ব্যাপারটাই স্বপ্নের মতো লাগছে। তিনি বলেন, ‘আমার কাছে পুরো বিষয়টা স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে । আমি নিজে ছোটবেলা থেকে আর্জেন্টিনা আর লিওনেল মেসির ভক্ত । আর্জেন্টিনায় আমি ফুটবল অনুশীলন করতে যাব, এটার চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে?’
শামস উল হুদা একাডেমির প্রধান কোচ কাজী মারুফ স্বাধীনের প্রতিভার প্রশংসায় মেতেছেন। তিনি বলেন, ‘স্বাধীন কয়েক বছর ধরেই বয়সভিত্তিক ফুটবলে নিজেকে প্রমাণ করেছে। সে দারুণ একজন উইঙ্গার। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সেরা উইঙ্গার হওয়ার প্রতিভাও আছে তার।’
হাফিজুর, মিনহাজুলের পর এবার স্বাধীন যাচ্ছেন বিদেশের ক্লাবে প্রশিক্ষণ নিতে। তাই তো গর্বের শেষ নেই একাডেমি কোচের। তিনি বলেন, ‘আমার ছাত্র হাফিজুর এয়ারটেল রাইজিং স্টার হিসেবে ইংল্যান্ডে আর নয়ন ব্রাজিলে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশ থেকে প্রথম ফুটবলার হিসেবে আর্জেন্টিনায় প্রশিক্ষণের জন্য যাচ্ছে। প্রশিক্ষণ শেষে দেশে এসে যদি ধারাবাহিকতা বজায় রাখে, তাহলে সে বড় খেলোয়াড় হবে ।’
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের আর্জেন্টিনার প্রতি উন্মাদনা নজর কাড়ে বিশ্ব গণমাধ্যমের। আর্জেন্টিনার ফুটবলের কর্তাব্যক্তিরাও হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের ফুটবলের প্রতি আগ্রহী। ইতোমধ্যে ফুটবলের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আর্জেন্টিনার সঙ্গে একটি চুক্তি সই করেছে বাংলাদেশ সরকার। যে চুক্তির অংশ হিসেবে বাংলাদেশের উঠতি ফুটবলারদের সুযোগ দেওয়া হবে আর্জেন্টিনায় প্রশিক্ষণ নেওয়ার। আর ভাগ্যবান হিসেবে প্রথম সুযোগটি পাচ্ছেন শামস উল হুদা একাডেমির মিনহাজুল করিম স্বাধীন ।
সারাবাংলা/এসএস