রোমাঞ্চ ছড়ানো বার্মিংহাম টেস্ট জিতে অ্যাশেজে এগিয়ে অজিরা

‘ব্যাজবল’এ ভর করে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে যেন একটু বেশিই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল ইংল্যান্ড। তবে ইংলিশদের ‘ব্যাজবল’ দম্ভ গুঁড়িয়ে দিয়েছে অজিরা। ক্ষণে ক্ষণে বদলানো বার্মিংহাম টেস্টের রঙে শেষ পর্যন্ত রেঙেছে অস্ট্রেলিয়া। প্যাট কামিন্সের ব্যাট হাতে লড়াইয়ের সঙ্গে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন নাথান লায়ন্স। আর তাতেই ২ উইকেটের জয়ে অ্যাশেজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সফরকারী অস্ট্রেলিয়া।

ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেওয়া ২৮১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে অস্ট্রেলিয়া। তবে টপ অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতায় এক পর্যায়ে ম্যাচই হাত থেকে বের হয়ে যাচ্ছিল অজিদের। তবে উসমান খাজার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের পর শেষ দিকে প্যাট কামিন্সের অধিনায়কের মতো লড়াই। তাতেই শেষ হাসি হাসল অজিরা। দুই উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙর করল অ্যাশেজের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা।

উসমান খাজাকে যখন বেন স্টোকস আউট করলেন তখন ইংলিশদের উল্লাসেই বোঝা যাচ্ছিল বড় বাধাটা পার করে ফেলেছেন তারা। এরপর প্রয়োজন শুধু লেজ ছাঁটাই। কিন্তু সেই লেজ যে কতোটা লম্বা হতে পারে তা ভালোভাবেই টের পেল ইংল্যান্ড। নাথান লায়নকে নিয়ে অসাধ্য সাধন করেই তবে মাঠ ছেড়েছেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়া পেল রোমাঞ্চকর এক জয়।

জয়ের জন্য তখনও অস্ট্রেলিয়ার দরকার ৫৪ রানের, ঠিক সেই সময় দলের স্বীকৃত শেষ ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি প্যাভিলিয়নে ফিরলেন। এরপর ব্যাট হাতে অজিদের ত্রাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। নাথান লায়নকে সঙ্গী করে স্টুয়ার্ট ব্রড, রবিনসনদের সামাল দিয়েছেন শক্ত হাতে। অবশ্য আগেই স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে স্কয়ার লেগে দুরূহ একটি ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। ঝাঁপিয়ে এক হাতে লুফে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন ইংলিশ অধিনায়ক স্টোকস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি। জয় তখনও ছিল ৩৮ রান দূরে।

লায়ন শেষ পর্যন্ত করেছেন অপরাজিত ১৬ রান। সঙ্গী কামিন্স খেলেন ৪৪ রানের হার না মানা এক ইনিংস। ৭৩ বলের ইনিংসটিতে মেরেছেন ৪টি চার ও ২টি ছক্কা। নবম উইকেটে এ দুই ব্যাটার গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৫ রানের জুটি। তাতেই হয় অসাধ্য সাধন।

বার্মিংহাম টেস্টের পঞ্চম দিনের প্রথম সেশন বৃষ্টিতে ভেসে যায় পুরোটাই, এরপর দ্বিতীয় সেশনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা খারাপ হয়নি অজিদের। নাইটওয়াচম্যান স্কট বোল্যান্ড খেলেন ২১টি বল। তাকে বিদায় করেন স্টুয়ার্ট ব্রড। তার অফস্টাম্পের বাইরে রাখা বলে ড্রাইভ করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় উইকেটরক্ষক জনি বেয়ারস্টোর হাতে। ৪০ বলে ২০ রান করেন বোল্যান্ড।

তবে এরপরেই অজিদের ব্যাটাররা আর তেমন সুবিধা করে উঠতে পারেনি। ব্যক্তিগত ১৬ রানে মঈন আলীর অসাধারণ এক ডেলিভারিতে স্লিপে দাঁড়ানো জো রুটের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ট্র্যাভিস হেড। তবে দলের আশা বাঁচিয়ে রেখে অপর প্রান্ত আগলে রাখেন খাজা। তাকে সঙ্গ দিতে নামেন ক্যামেরুন গ্রিন। ষষ্ঠ উইকেটে ৪৯ রানের কার্যকরী এক জুটি গড়েন এ দুই ব্যাটার। তাতেই স্বপ্নটা জোরালো হয় অজিদের। গ্রিনকে বোল্ড করে দিয়ে এ জুটি ভাঙেন অলি রবিনসন। ৬৬ বলে ২৮ রান করেন গ্রিন।

গ্রিন ফেরার পর অজিদের জয় এনে দেওয়ার দায়িত্ব পড়ে ক্যারি এবং খাজার ওপর। তবে দলীয় ২০৯ রানে খাজাকে তুলে নেয় ইংলিশরা। অধিনায়ক স্টোকসের বলে বোল্ড হয়ে গেলে হারের শঙ্কায় পড়ে অস্ট্রেলিয়া। আর ব্যক্তিগত ২০ রানে ক্যারিকে জো রুট ক্যাচে পরিণত করলে সে শঙ্কা জোরালো হয় আরও। লেজ বেড়িয়ে যায় অজিদের। তবে এরপরে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক কামিন্স এবং নাথান লায়ন।

সারাবাংলা/এসএস

ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া দ্যা অ্যাশেজ প্রথম টেস্ট বার্মিংহাম টেস্ট