বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার দুই যুগ
২৬ জুন ২০২৩ ১৯:১৬
আজ ২৬ জুন ২০২৩। আজ থেকে ঠিক ২৩ বছর আগে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটে। আইসিসির পূর্ন সদস্য হিসেবে যুক্ত হয়েছিল বাংলাদেশ নামটি। সেদিন টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছিল টাইগাররা। এদেশের মানুষের ক্রিকেটীয় উন্মাদনাকে কাজে লাগিয়ে ২৩ বছর পর বাংলাদেশ এখন বিশ্বক্রিকেটে শক্ত এক প্রতিপক্ষ।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার সময় এদেশের ক্রিকেটে খুব বেশি কিছু ছিল না। ক্রিকেটীয় অবকাঠামো পরিপূর্ণ ছিল না, প্রথাম শ্রেণির ক্রিকেটের চর্চাও ছিল না বেশি দিনের। তবে ক্রিকেট নিয়ে এদেশের মানুষের উন্মাদনা ছিল প্রচুর, ক্রিকেটের প্রতি ভালোবাসা ছিল নিখাদ। সেটা সহযোগিতা করেছে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াতে।
বাংলাদেশে ক্রিকেটের উত্থান ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জয়ের মধ্য দিয়ে। মালয়েশিয়ায় আয়োজিত ওই টুর্নামেন্টে তৎকালিন শক্তিশালী কেনিয়াকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ। যেটা বাংলাদেশকে ওয়ানডে স্ট্যাটাস এনে দেয়। দুবছর পর ওয়ানডে বিশ্বকাপ খেলতে গিয়ে পরাশক্তিধর পাকিস্তান ও পরীক্ষিত আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে বিশ্বক্রিকেটে নিজেদের অবস্থার জানান দিয়েছিল বাংলাদেশ।
১৯৯৮ সালে আইসিসি মিনি বিশ্বকাপ আয়োজন করে আয়োজক হিসেবেও প্রশংসা কুড়িয়েছিল বাংলাদেশ। তবে ঘরোয়া ক্রিকেট সমৃদ্ধ না এবং দেশের ক্রিকেট অবকাঠামো পরিপূর্ণ না বলে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াটা সহজ মনে হচ্ছিল না। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) তৎকালিন কর্মকর্তাদের প্রচেষ্টায় সেটা সম্ভব হয়েছিল। বিসিবি তখন পাশে পেয়েছিল প্রয়াত আইসিসি সভাপতি জাগমোহন ডালমিয়াকে। বাংলাদেশের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়াতে বড় ভূমিকা ছিল ভারতের প্রয়াত এই ক্রিকেট সংগঠকের।
টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার বছরে ভারতের বিপক্ষেই নিজেদের প্রথম টেস্ট খেলে বাংলাদেশ। লাল-সবুজের দল প্রথম টেস্টে টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার যথার্থতা প্রমাণ করেছিল দুর্দান্তভাবে। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে শ্রীনাথ, সুনীল যোষী, জহির খান, অজিত আগারকারদের নিয়ে গড়া বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪০০ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছিলেন আমিুনল ইসলাম বুলবুল। পরে শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড়, সৌরভ গাঙ্গুলীদের নিয়ে গড়া ব্যাটি আক্রমণকে ৪২৯ রানেই গুটিয়ে দেন নাইমুর রহমান, মোহাম্মদ রফিকরা। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ম্যাচ হারতে হয়েছে ৯ উইকেটে।
তারপর বাংলাদেশের সময়টা এগিয়েছে প্রথম টেস্টের ওই দ্বিতীয় ইনিংসের মতোই! প্রথম জয় মিলেছে ৩৫ টেস্ট খেলার পর। এখন পর্যন্ত ১৩৮ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তাতে জয় মাত্র ১৮টি! ড্রও ১৮টি। হেরেছে বাকি ১০২টি ম্যাচ। এই ১৮ জয়ের ৮টিই আবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে।
তবে সম্প্রতি বাংলাদেশের টেস্টে সাফল্যের গ্র্রাফ উর্ধ্বমূখী। কদিন আগে আফগানিস্তানকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে টাইগাররা। এর আগে নিউজিল্যান্ডে গিয়ে টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। তার আগে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডকে হারিয়েছে বাংলাদেশ।
টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করতে হলে যা যা দরকার বর্তমান বাংলাদেশ দলটার তার প্রায় সবকিছুই আছে। টেস্টে বাংলাদেশ এখন অনেক অভিজ্ঞ দল। সঙ্গে শক্ত একটা পেস বোলিং ইউনিট এবং অভিজ্ঞ ব্যাটিং অর্ডার আছে টাইগারদের। এসবের ওপর ভিত্তি করেই সম্প্রতি টেস্টে ভালো ফল পাচ্ছে বাংলাদেশ।
এখন এমন পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখার পালা।
সারাবাংলা/এসএইচএস