Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১০৭ মিনিটে বাংলাদেশের হৃদয়ভঙ্গ, সাফের ফাইনালে কুয়েত

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
১ জুলাই ২০২৩ ১৮:২৪

শক্তির বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে অনেকটা এগিয়ে কুয়েত। তবে গোলবারের নিচে আনিসুর রহমান জিকোর চীনের মহাপ্রাচীর হয়ে উঠা এবং তারিক কাজী, তপু বর্মনদের দুর্দান্ত রক্ষণ ও রাকিব, জামালদের ক্ষুরধার আক্রমণে সেই ব্যবধানটা মাঠে খুব বেশি বুঝা গেল না। শক্তির বিচারে পিছিয়ে থাকলেও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে কুয়েতের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটে গোল হয়নি। যোগ করা সময়ের ১০৭ মিনিটে গিয়ে হৃদয় ভেঙেছে বাংলাদেশের। ১০৭ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় কুয়েত। শেষ পর্যন্ত এই গোলেই ম্যাচের ফল নির্ধারণ হয়েছে। বাংলাদেশকে হারিয়ে সাফের ফাইনালে উঠে গেছে কুয়েত।

বিজ্ঞাপন

ফিফা র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ১৯২তম, অপর দিকে কুয়েত ১৪১তম। পরিস্কার ফেভারিট মনে করা হচ্ছিল প্রথমবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলতে আসা কুয়েতকে। তবে মাঠের লড়াইয়ে একটুও ছাড় দেয়নি বাংলাদেশ। ম্যাচের প্রথম গোলের পর মনে হচ্ছিল যে কোনো কিছুই হতে পারে। শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হলো না লাল-সবুজের দলের।

১৪ বছর পর এবার সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে উঠেছিল বাংলাদেশ। ২০০৫ সালে সর্বশেষ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। হাতছানি ছিল আরেকটি ফাইনালের। শক্তিশালী কুয়েতের বিপক্ষে দুর্দান্ত লড়েও শেষ পর্যন্ত ভাগ্য সহায় হলো না জামাল ভূঁইয়াদের।

শনিবার (১ জুলাই) বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে সাফ চ্যাস্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে অবশ্য ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যাওয়ার বড় একটা সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। মোরছালিন সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে শুরুটা হতে পারত স্বপ্নের মতো। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটে ডান দিক থেকে বক্সের  ভেতর মোরছালিনকে বল বাড়িয়েছিলেন রাকিব। মোরছালিনের সামনে তখন শুধুই কুয়েতের গোলরক্ষক। ঠিকঠাক প্লেসিং করতে পারলেই গোল পেতে পারতেন।

কিন্তু মেরাছালিন বল মেরে দেন কুয়েতের গোলরক্ষকের শরীর বরাবর। দুই দল মিলিয়ে প্রথমার্ধে এটাই ছিল সবচেয়ে ভালো সুযোগ। এর কিছুক্ষণ পর এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল কুয়েত। কর্ণার কিক থেকে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে কুয়েত। তবে গোললাইন থেকে দারুণ দক্ষতায় বল ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের লেফট-ব্যাক ইসা ফয়সাল।

৩০ মিনিটে কুয়েতকে গোলবঞ্চিত করেছেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। জিকোর কল্যাণে প্রথমার্ধে আরেকবার বেঁচেছে বাংলাদেশে। প্রথমার্ধের শেষ দিকে দারুণ এক সেভ করেছেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক। প্রথমার্ধে কাতার খুব বেশি সুবিধা করতে পারেনি। চোট কাটিয়ে আজ একাদশে ফিরেছেন তারিক কাজী। তপু বর্মণ, তারিক কাজীরা প্রথমার্ধে তেমন কোনো ভুল করেননি। ফলে খুবই একটা সুযোগও পায়নি কুয়েত।

বিজ্ঞাপন

দ্বিতীয়ার্ধের পুরোটা সময় কুয়েতের সামনে রীতিমতো চীনের মহাপ্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো। ৬১ মিনিটে দারুণ একটা ফ্রি-কিক আটকে দেন বাংলাদেশি গোলরক্ষক। খানিক বাদে কুয়েতের আর একটি আক্রমণ রুখে দিয়েছেন জিকো। সময় যতো এগিয়েছে জিকো যেন গোলবারের নিচে আরও শক্ত দেয়াল হয়ে দাঁড়িয়েছেন!

তবে বাংলাদেশ যে শুধু কুয়েতের আক্রমণই ঠেকিয়ে গেছে তেমনটি নয়। নিজেদের ঘর সামলে প্রতিআক্রমণে উঠেছেন জামাল ভূঁইয়ারাও। বাংলাদেশের আক্রমণের মূল কেন্দ্রে গত দুই ম্যাচে গোল করা রাকিব। ৫৪ মিনিটে রাকিবের শট অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়। ৬১ মিনিটে আরেকটা সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। ভূটানের ম্যাচে যেমন পজিশন থেকে গোল করেছিলেন আজকের সুযোগটা ছিল তার চেয়ে তুলনামূলক সহজ। কিন্তু রাকিবের শট বারে লেগে প্রতিহত হয়েছে।

৬৭ মিনিটে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়েন বাংলাদেশি অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া। জামালের পরিবর্তে মাঠে নামা ফয়সাল দারুণ এক ক্রস করেছিলেন ডি-বক্স থাকা রাকিবকে। কিন্তু হেডটা ঠিকঠাক জায়গায় রাখতে পারেননি রাকিব। নির্ধারিত সময়ের শেষ দিকে গোলের জন্য হাঁসফাঁস করেছে কুয়েত। কিন্তু বাংলাদেশ প্রতিবারই তাদের আক্রমণ রুখে দিয়েছে।

যোগ করা সময়েও প্রতিপক্ষকে সুবিধা করতে দেয়নি বাংলাদেশ। কুয়েতের আক্রমণ রুখে নিজেরাও আক্রমণ করে গেছেন। তবে ১০৭ মিনিটে গিয়ে সব উলট-পালট। আব্দুল্লাহর গোলে এগিয়ে যায় কুয়েত। এই গোল শোধ করতে পারেনি বাংলাদেশ। যাতে শেষ পর্যন্ত ১-০ গোলের হৃদয়ভাঙা হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে লাল-সবুজের দলকে।

সারাবাংলা/এসএইচএস

টপ নিউজ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ-২০২৩

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর