মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করে উচ্ছ্বাসিত মাশরাফি
৩ জুলাই ২০২৩ ১৩:৫৩
১১ ঘণ্টার সফরে ঢাকায় এসেছেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। আজ ভোরে ঢাকায় এসে পৌঁছান তিনি, বিকেলে কলকাতার বিমান ধরবেন। মূলত মার্টিনেজের এই সফর কলকাতাকে কেন্দ্র করে। ভারতের ক্রীড়া উদ্যোক্তা শতদ্রু দত্তের উদ্যোগে কলকাতা সফর করবেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক। পাশেই বাংলাদেশ বলে বাংলাদেশে সফরের ইচ্ছা পোষণ করেন মার্টিনেজ নিজেই। বিশ্বকাপজুড়ে বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও যা প্রচার হয়েছে ফলাও ভাবে। আর্জেন্টিনা দলও বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন সমর্থকদের উন্মাদনা দেখেছে। মার্জিনেজ সেই কারণেই ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন ঢাকায় পাঁ রাখার।
সমর্থকরা দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন না মার্টিনেজের সঙ্গে। বিশ্বকাপজয়ী এই গোলরক্ষকের ঢাকায় আসার বন্দবস্ত করেছে ফান্ডেডনেক্সট। তাদের আমন্ত্রণে হাতেগোনা কয়েকজন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষকের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের মধ্যে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা একজন। ব্যক্তিগতভাবে মাশরাফি আর্জেন্টিনার পাঁড় সমর্থক। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মার্টিনেজের দেখা পেয়ে উচ্ছ্বাসিত মাশরাফি।
দুই সন্তানকে নিয়ে মার্টিনেজের সঙ্গে দেখা করেছেন মাশরাফি। তারপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। নিম্নে ফেসবুকে মাশরাফির দেওয়া স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
এমিকে ভালো লাগার শুরু কোপা আমেরিকা থেকেই, যেখানে সে টাইব্রেকারে দুটি গোল আটকে দিয়ে দলকে জয় এনে দিল। কত বছর পর বড় কোনো শিরোপা জিতল আর্জেন্টিনা! লিওনেল মেসিও পেল দেশের হয়ে প্রথম বড় ট্রফির স্বাদ। স্বাভাবিকভাবেই পাখির চোখে তাকিয়ে ছিলাম বিশ্বকাপের দিকে। কিন্তু সৌদি আরবের সাথে হেরে মনে হয়েছিল, আরেকটি বিশ্বকাপও হয়তো শেষ হবে হতাশায়। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং পরে বিশ্বকাপ জয় দেখতে পারাটা ছিল অনেক দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণের মতো।
সেই জয়ের অন্যতম নায়ক এমির সঙ্গে দেখা হলো আমাদের এই ঢাকায়। খুব অল্প সময়ের জন্য দেখা, কিন্তু দারুণ এক অনুভূতি। বিশ্বকাপ জয়ী দলের গোলকিপার চোখের সামনে! সে তো জানে না, আমার এবং আমার মতো আরও কত কোটি মানুষের কত বছরের অপেক্ষা শেষ হলো, যেদিন তার ঐ হাত ধরেই আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জয় করল!
আজকে সে ইন্টারভিউয়ের মাঝেই একবার ট্রাউজার উঠিয়ে দেখাল, পায়ের ঠিক সেই জায়গায় একটি ট্যাটু করিয়েছে, বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ বাঁশির ১৮ সেকেন্ড আগে কোলো মুয়ানির শটটি আটকিয়ে দিয়েছিল যে জায়গা দিয়ে। এক সেকেন্ডের জন্য মনে হলো, আসলে বিশ্বকাপটাতো ওখানেই জিতে নিয়েছে।
আজকে আসলে বেশি ভালো লাগছে আমার সন্তানদের জন্য। যখন বললাম, ‘এমি আসছে, তোমাদের কি দেখা করার ইচ্ছা আছে?’ ওরা লাফাচ্ছিল। সবশেষ দুটি দিন ওরা ঠিকমতো ঘুমাতে পারছিল না এমিকে দেখবে বলে। আজকে এমির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর বললাম, ‘বাচ্চারা তোমার অটোগ্রাফ নিতে চায়।’ সে এত আন্তরিকতা দেখাল, এক কথায় অসাধারণ। এমনকি সে ছবিও তুলে দিল ওদের সঙ্গে। এখন তারা মহাখুশি, আর ওদের খুশিতে আমিও এখন মহাখুশি।
এমি, আপনাকে স্বাগত এই বাংলার মাটিতে। এখানে আপনাদের অগুনতি ভক্ত আছে, যুগ যুগ ধরে। আশা করি, আপনারও ভালো লাগছে এই মাটিতে পা রেখে।
পাশাপাশি এটাও ভাবি, সত্যি বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবলে কোয়ালিফাই করবে আর আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে মিছিল করব, ইনশাল্লাহ। অনেকের কাছে এখন এটা অবাস্তব মনে হতে পারে। তবে আমি বিশ্বাস করি, কাজটা কঠিন, খুব কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। স্বপ্ন পূরণের সেই দিনটির অপেক্ষায় আছি, ইনশাল্লাহ।
সারাবাংলা/এসএইচএস