আফগানদের উড়িয়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের
১৬ জুলাই ২০২৩ ২২:৩৭
বৃষ্টি বাগড়ায় সিলেটের টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি নেমে এলো ১৭ ওভারে। আফগানিস্তান প্রথম ব্যাট করে বাংলাদেশের সামনে ১১৯ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিল। তবে টাইগারদের সিরিজ জয়ের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি বৃষ্টি। উদ্বোধনী জুটিতে লিটন দাস এবং আফিফ হোসেন জয়ের ভীত গড়ে দিয়ে যান। সেই পথ ধরে সাকিব আল হাসানের দল ৫ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় ৬ উইকেটের। এতেই দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতে নেয় বাংলাদেশ।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে ১৭ ওভারে ৭ উইকেটে ১১৬ রান তোলে আফগানিস্তান। এতেই বৃষ্টি আইনে বাংলাদেশের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১১৯ রানের।
রনি তালুকদারের পরিবর্তে এদিন একাদশে বড় পরিবর্তন আসে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে। উদ্বোধনী জুটিতে লিটন দাসের সঙ্গী করে আফিফ হোসেন ধ্রুবকে পাঠায় বাংলাদেশ। আর পাওয়ার প্লে’তে এই দুই ব্যাটার মিলে দারুণ শুরু এনে দিয়েছে বাংলাদেশকে।
১১৯ রান তাড়া করতে নেমে শুরুর দুই বল ডট দেয় বাংলাদেশ। পরের দুই বলে দুটি বাউন্ডারি হাজান লিটন দাস। প্রথম ওভার থেকে আসে ৯ রান। দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে আসেন অভিষিক্ত ওফাদার। তার করা প্রথম তিন বলেই বাউন্ডারি হাঁকান লিটন।
তৃতীয় ওভারে বল হাতে আসেন ভয়ংকর মুজিব উর রহমান। ওই ভোয়ার থেকে মাত্র ৫ রান নিতে পারে বাংলাদেশ। এতেই ৩ ওভার শেষে দাঁড়ায় ৩৩ রানের সংগ্রহ।
৪ রান আসে চতুর্থ ওভার থেকে। ফজল হক ফারুকিকে খেলতে বেশ বেগ পোহাতে হয়েছে লিটন দাসকে। তবে মুজিবের করা পরের ওভার থেকে ১৩ রান তুলে পাওয়ার প্লে’র ৫ ওভার থেকে বিনা উইকেটে ৫০ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লে শেষেও দুই ওপেনার দেখে শুনেই খেলতে থাকেন। রশিদ খানের ওভার থেকে মাত্র ৪ রান নেন এই দুই ব্যাটার। এরপর এই দুই ওপেনার লিটন দাস ও আফিফ হোসেন মিলে উদ্বোধনী জুটিতেই তোলে ৬৭ রান। এরপরেই ছন্দ পতন টাইগারদের। এক ওভারে দুই ওপেনারের বিদায়ে চাপে বাংলাদেশ।
লিটন ও আফিফের উদ্বোধনী জুটি পাওয়ার প্লে’র ৫ ওভার থেকেই তুলে নেয় ৫০ রান। পাওয়ার প্লে শেষে কিছুটা ধীর গতিতে ব্যাট করতে থাকে এই দুই ব্যাটার। তবে সঠিক কক্ষপথেই ছিল বাংলাদেশ। তবে ১০ ওভারে এসে পা হড়কাল টাইগাররা। মুজিব উর রহমানের করা ওভারে দুই ওপেনার এবং উইকেটে থিতু ব্যাটার লিটন ও আফিফ উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এলেন।
মুজিবের করা ১০ম ওভারের প্রথম বল ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন লিটন। তবে কভারে থাকা রশিদ খান নিজের ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুর্দান্ত এক ক্যাচ লুফে নেন। এতেই ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। লিটন ফেরেন ৩৬ বলে ৬টি চারে ৩৫ রান করে। ৬৭ রানে বাংলাদেশ প্রথম উইকেট হারায়।
লিটন ফেরার পর আর উইকেটে টিকতে পারেননি আফিফ হোসেনও। ওই ওভারের তৃতীয় বলে ডিপ মিডউইকেটে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন আফিফ। তবে সেখানে থাকা করিম জানাতের হাতে ধরা পড়েন আফিফ। বাংলাদেশ মাত্র ১ রানের ব্যবধানে হারায় দুই ওপেনারকে। আফিফ ফেরেন ২০ বলে দুটি ছক্কায় ২৪ রান করে।
তিনে ব্যাট করতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তকে তখন নতুন করে ইনিংসের হাল ধরতে হয়েছে। কিন্তু বেশি সময় উইকেটে টিকতে পারেননি তিনিও। আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের করা ১১তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনিও। এতেই ৭৬ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর দলের হাল ধরলেন অধিনায়ক সাকিব এবং তাওহিদ হৃদয়। চতুর্থ উইকেটে সাকিব এবং হৃদয় মিলে গড়েন ৩১ রানের জুটি। এতেই চাপ কাটিয়ে আবারও জয়ের পথে ফেরে টাইগাররা। তাওহিদ হৃদয় ১৫তম ওভারে ওমরজাইকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ নবির তালুবন্দি হন। ১০৭ রানে ৪র্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর আর পথ হারায়নি টাইগাররা। শামিম হোসেন এবং সাকিব আল হাসান মিলে বাকি কাজটা সারেন। ৫ বল হাতে রেখে ৬ উইকেটের জয় তুলে নেয় টাইগাররা। সাকিব ১১ বলে ১টি চার ও ছয়ে ১৮, শামিম ৭ বলে ১টি চারে ৭ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টির কবলে পড়ার আগে তাসকিন আহমেদ তোপে বিপর্যস্ত হয় আফগান ব্যাটাররা। মাত্র ১৬ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়া আফগানদের ত্রাতা হয়েই যেন এলো বৃষ্টি। বৃষ্টিতে বেশ কিছু সময় খেলা বন্ধ থাকলে তিন ওভার কেটে ১৭ ওভারের খেলা ঘোষণা করা হয়। বৃষ্টি শেষে মাঠে খেলা গড়ালে বাংলাদেশের বোলাররা চেপে ধরে আফগান ব্যাটারদের। সাকিব দুটি, মোস্তাফিজ দুটি আর তাসকিন তিনটি উইকেট নিলে আফগানরা ৭ উইকেটে ১৭ ওভারে ১১৬ রানে থামে।
সারাবাংলা/এসএস
টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান সাকিব আল হাসান