Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ম্যাচ জিততে না পেরে সীমা ছাড়িয়ে গেলেন ভারতীয় অধিনায়ক

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
২২ জুলাই ২০২৩ ২১:২৮

ভারতের বিপক্ষে আজকের ম্যাচটা অনন্তকাল লেখা থাকবে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটের ইতিহাসে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আজই যে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটার। ভারতের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে দারুণ এক সেঞ্চুরি করেছেন ফারাজানা হক জ্যোতি। তবে আজকের ম্যাচটা অন্য একটা কারণেও অনেকর অনেকদিন মনে থাকবে নিশ্চয়। আর সেই কারণটা হলো ভারতীয় নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের বাজে আচরণ।

বিজ্ঞাপন

সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচ দুই দলই একটা একটা করে জিতলে আজকের ম্যাচটা ছিল সিরিজ নির্ধারনি। নাটকীয়তা শেষে সিরিজ নির্ধারনি ম্যাচটা টাই হয়েছে। আগে ব্যাটিং করে ২২৫ রান তুলেছিল বাংলাদেশ। পরে ভারতও গুটিয়ে যায় ঠিক ২২৫ রানে। যাতে সিরিজ জিততে পারেনি কোনো দল। যৌথভাবে সিরিজের ট্রফি ভাগ করা হয়েছে দুই দলের মধ্যে।

এদিকে ম্যাচে আম্পায়ারিংয়ের সমালোচনা করতে গিয়ে রীতিমতো সীমা ছাড়িয়ে গেছেন হারমানপ্রীত কৌর। ক্রিকেটে আম্পায়ারিং নিয়ে অসন্তুষ্ট হলে তার সমালোচনা করা যেতেই পারে। তবে ক্রিকেটে এসব বিষয়ে কথা বলার সময় সংযত থাকতে হয়। কিন্তু হারমানপ্রীত সেই সংযোমের ধার ধারলেন না।

ম্যাচের ৩৪তম ওভারে নাহিদা আক্তারের বলে সুইপ করতে গিয়ে মিস করে আউট হয়েছেন ভারতীয় অধিনায়ক। এই সিরিজে এল্ট্রা এজ প্রযুক্তি বা ডিআরএস নেই। তবে খালি চোখে দেখে মনে হয়েছে এলবিডব্লিউ ছিলেন হারমানপ্রীত। কিন্তু আম্পায়ার সিদ্ধান্ত দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গজরাতে থাকেন হারপমাপ্রীত। ব্যাট দিয়ে আঘাত করে স্ট্যাম্পও ভেঙেছেন তিনি।

পরে ম্যাচ টাই হলে আরও রুঢ়মূর্তি ধারণ করেছেন হারমানপ্রীত। ম্যাচ শেষে আম্পায়ারিং নিয়ে যে ঢংয়ে কথা বলেছেন ক্রিকেটে অতীতে কোনো অধিনায়ক সেভাবে বলেছিলেন কিনা সন্দেহ! এরপর যখন আসবেন ‘প্যাথেটিক আম্পায়ারিং’ এর বিপক্ষে খেলার প্রস্তুতি নিয়ে আসবেন, এমন মন্তব্যও করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক।

হারমানপ্রীতি কৌর বলেন, ‘এই ম্যাচ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারলাম। ক্রিকেট ছাড়াও যেরকম আম্পায়ারিং হলো, তাতে আমরা বিস্মিত। পরেরবার যখন আমরা বাংলাদেশে আসব, তখন নিশ্চিত করব যে আমাদের এরকম জঘন্য আম্পায়ারিংয়ের মধ্যে খেলতে হবে। সেভাবে প্রস্তুতিও নেব আমরা।’

বিজ্ঞাপন

‘ওরা (বাংলাদেশ) ভালো ব্যাটিং করেছিল। পরিস্থিতি অনুযায়ী ব্যাটিং করেছিল। ওরা সিঙ্গল নিচ্ছিল। যেগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা কিছু বাড়তি রান দিয়েছি। তারপরেও ম্যাচটা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করছিলাম। কিন্তু একটু আগেই যেটা বললাম, জঘন্য আম্পায়ারিং হয়েছে। আম্পায়ারদের কয়েকটি সিদ্ধান্তে আমরা চূড়ান্ত হতাশ।’- বলেছেন ভারতের অধিনায়ক।

বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার সিরিজ নির্ধারনি ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার নেই কেন তা নিয়েও ক্ষোভ হারমানপ্রিত, ‘অনেক কিছু শিখেছি আমরা। শেষে বলতে চাই, বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারও এখানে আছেন। এখানেও (পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে) তাঁকে ডাকতে পারতেন। যাই হোক, ঠিক আছে। এখানে আসার জন্য ধন্যবাদ, স্যার।’

এখানেই শেষ হয়নি বিষয়টি। হারমানপ্রীত গড়িয়েছেন আরও অনেক দূর। সিরিজ টাই হওয়ার কারণে দুই দলের অধিনায়ককে যৌথভাবে ট্রফি ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। পরে ট্রফি মাঝে রেখে দুই দলকে একত্রে ছবি তোলার অনুরোধ করা হয়। সেখানেও বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে কটুক্তি করেছেন হারমানপ্রীত।

‘এটা তোমরা জিতনি, আম্পায়াররা জিতেছে’ এমন কথাও নাকি বলেছেন হারমানপ্রিত। এই কথা বলতেই বাংলাদেশি অধিনায়ক নিগার সুলতানা দলের বাকি সদস্যদের নিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন। ভারতীয় অধিনায়কের এমন আচরণে রীতিমতো বিস্মিত অনেকে।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক নিগার সুলতানার কথায় ফুটে উঠল বিরক্তি। বলছেন, ‘ও (হারমানপ্রীত) যেটা করেছে, সেটা ওরই। সেটা আমাদের কোনো কিছু নয়। তবে আমি বলব, ক্রিকেটার হিসেবে সে আরেকটু ভালোভাবে কথা বলতে পারত। তবে ও করেছে, ওর ব্যাপার। আমার কোনো মন্তব্য করা উচিত হবে না।’

পুরস্কারের ট্রফির সঙ্গে উভয় দলের ছবি তোলার সময় হঠাৎ চলে গেলেন কেন? নিগার সুলতানা বলেন, ‘কিছু কথা…সব সময় তো সবকিছু বলা যায় না। যা হয়েছে, আমার কাছে মনে হয়নি যে আমার দল নিয়ে ওখানে থাকব। তো আমি চলে এসেছি। কিছু কথা ছিল যে আমার মনে হয়নি ওখানে থাকা উচিত হবে দল নিয়ে। কারণ, ক্রিকেট খুবই সম্মানজনক একটি জায়গা। শৃঙ্খলার জায়গা। জেন্টলমেনস গেম। আমার কাছে মনে হয়েছে, ওই পরিবেশ ছিল না। তাই দল নিয়ে চলে এসেছি।’

ভারতীয় অধিনায়ক যা করেছেন তাতে শাস্তি না পেলে সেটাই হবে বিস্ময়ের।

সারাবাংলা/এসএইচএস

বাংলাদেশ নারী দল

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর