ঢাকা: বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন তামিম ইকবাল। সামনেই এশিয়া কাপ এবং বিশ্বকাপের মতো বড় দুটি টুর্নামেন্ট। ফলে ভেবে চিন্তেই নতুন অধিনায়ক চূড়ান্ত করতে হবে বিসিবিকে। পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে সবচেয়ে বেশি উঠছে সাকিব আল হাসানের নাম। বোর্ড পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনও মনে করছেন, পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে সাকিবই হবেন সেরা পছন্দ।
বর্তমান ওয়ানডে দলের সহ-অধিনায়ক লিটন দাস। তামিম ইকবালের অনুপস্থিতিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্বও দিয়েছেন লিটন। লিটনের নেতৃত্বেই ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। ফলে লিটনও আছেন আলোচনায়। খালেদ মাহমুদ সুজন বলছেন, লিটনও প্রস্তুত অধিনায়ক হতে। তবে দলে সাকিব আছেন বলে তিনিই সেরা পছন্দ।
শনিবার (৫ আগস্ট) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়ানডে দলের পরবর্তী অধিনায়ক প্রশ্নে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘আমি এখন লিটন দাসকে কীভাবে বলব লিটন দাস নয় (হাসি)। লিটন ভারতের বিপক্ষে সিরিজ জিতিয়েছে। কিন্তু সাকিব তো অবশ্যই এখানে এগিয়ে থাকবে। সাকিবের মাথা, সাকিবের অধিনায়কত্বের অভিজ্ঞতা, সবকিছু তো অনেক বেশি। তারপরও আমি লিটনকে ছোট করতে চাই না। সে ভালো কাজ করেছে।’
তবে দুজনের মধ্যে সাকিবকে কেন এগিয়ে রাখছেন সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন সুজন। বলেছেন, ‘আমি মনে করি, যে দলে সাকিব আছে…আমার ব্যক্তিগত মতামত, আমি হলে হয়তো সাকিবের কথাই চিন্তা করতাম। লিটন, শান্ত, মিরাজ এরা তৈরি হবে। এদেরই অধিনায়কত্ব করতে হবে। এদের হাতেই আর্মব্যান্ড যাবে। তামিম করবে না, সাকিব একসময় অবসরে যাবে। একসময় মুশফিক অবসরে যাবে। তখন এরাই সিনিয়র হবে। সাকিব যেহেতু আছে, আমার মনে হয় আমাদের হাতে খুব ভালো একটা চয়েস আছে।’
গত আফগানিস্তান সিরিজ চলাকালে হঠাৎই অবসরের ঘোষণা দিয়ে দেন তামিম ইকবাল। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই আবার অবসর ভেঙে ফিরে আসেন তামিম। তবে তারপর তার পিঠের ইনজুরির বিষয়টি সামনে চলে আসে। ইনজুরির কারণে আসন্ন এশিয়া কাপে খেলতে পারবেন না তিনি। বিশ্বকাপেও কতটা খেলতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নেই।
এসব বিবেচনা করে নিজেই অধিনায়কত্ব ছেড়েছেন তামিম। খালেদ মাহমুদ সুজন বলেছেন, ‘ভালো সিদ্ধান্ত’ নিয়েছেন তামিম। সুজন বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, যেটা হয়েছে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তামিম এখন ব্যাক করেছে, খুব ভালো। সংবাদ সম্মেলনে দেখলাম অধিনায়কত্ব করবে না। এটা ওর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। যেহেতু চোটে আছে, ও জানে না কতটুকু ফিট হতে পারবে, কতটুকু কামব্যাক করতে পারবে। সে খুব ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে আমি মনে করি।’
বিশ্বকাপের মতো আসরে তামিমের মতো অভিজ্ঞ একজনকে যে খুব করে দরকার সেটাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন সুজন। তিনি বলেন, ‘তামিম খেলবে আবার, এটা একটা নির্ভার হওয়ার মতো ব্যাপার। কারণ, আমরা এখনো তামিমের মতো একটা ওপেনার রেডি করতে পারিনি। অনেক ছেলে এসেছে, ভালো খেলছে। তবে তামিম যতটা প্রতিষ্ঠিত, যেভাবে নিজেকে তৈরি করেছে, সেটা তো আমরা পাইনি।’
‘তামিম খেলবে, এশিয়া কাপ মিস করলেও নিউজিল্যান্ড সিরিজ ও বিশ্বকাপে খেলবে। আমরা বিশ্বকাপে অনেক বড় স্বপ্ন দেখছি। ওই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে তামিমের মতো একজন খেলোয়াড় দরকার। আশা করি তামিম দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরবে। আর যেটা হয়েছে, সেটা পুরোপুরি যোগাযোগের ঘাটতি ও ভুল–বোঝাবুঝি ছিল আমার মনে হয়’—বলেছেন খালেদ মাহমুদ।