‘অদ্ভূত’ প্রস্তাব মেনে নেননি বলেই বিশ্বকাপ দলে নেই তামিম
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৭:৪৭
গতকাল ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত দল ঘোষণা করার পর আজ বিশ্বকাপের ভেন্যু ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে বাংলাদেশ। দলে তামিম ইকবালের নাম নেই। তামিম না থাকার কারণে গতকাল থেকেই আলোচনা-সমালোচনার যে ঝড় উঠেছিল তা এখনো থামেনি। তামিমের না থাকার বিভিন্ন কারণ সামনে আসছিল। তবে তামিম ইকবাল বললেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে ‘অদ্ভূত’ এক প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাকে। কিন্তু তিনি সেটা মেনে নেননি। তাহলে কি সেটাই তামিমের বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পরার কারণ?
বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক ভিডিও বার্তায় তামিম বলেছেন, বোর্ড থেকে তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচটি যেন না খেলেন তিনি। কিন্তু ফিট থাকলে খেলব না কেন? তামিম এমন প্রশ্ন তুললে পরে তাকে দ্বিতীয় প্রস্তাব দেওয়া হয়- ব্যাটিং করতে হবে মিডল অর্ডারে।
অথচ ১৭ বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা তামিম কখনোই ওপেনিং ছাড়া অন্য পজিশনে ব্যাটিং করেননি। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টা মানতে চাননি তামিম। পরে তাকে ছাড়াই ঘোষণা করা হয় বিশ্বকাপ দল।
অনেকদিন যাবত পিঠের ইনজুরিতে ভুগছেন তামিম ইকবাল। অবসর নেওয়া এবং আবারও ফিরে আসা কাণ্ডের পর লন্ডনে গিয়ে ইনজেকশন নিয়ে এসেছেন। পুনর্বাসন শেষে নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলেও ফিরেছিলেন। সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ খেলেছেন। বৃষ্টির কারণে প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং করতে না পারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৪৪ রানের দারুণ একটা ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু সাবধানতাবশত তৃতীয় ম্যাচটিতে বিশ্রাম চেয়েছিলেন তিনি।
গতকাল থেকে বিভিন্নভাবে প্রচার হচ্ছে তামিম টিম ম্যানেজমেন্টকে জানিয়েছেন, বিশ্বকাপে পাঁচ ম্যাচের বেশি খেলতে পারবেন না তিনি। কিন্তু তামিম বললেন, এই কথাটি পুরোপুরিই মিথ্যা। তিনি কেউকেই এসব বলেননি। এমনকি নিউজিল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় ম্যাচও খেলতে পারতেন, মেডিকেল রিপোর্ট তেমনই ছিল। কিন্তু বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তে ঝুঁকি নিতে চাননি বলেই তৃতীয় ওয়ানডে থেকে বিশ্রাম চেয়েছিলেন। যাতে আরও কিছুদিন সময় পেয়ে ফিট হতে পারেন বিশ্বকাপের আগে।
এসব কারণে নয় বরং তার বিশ্বকাপ দলে না থাকার কারণ অন্য মনে করছেন তামিম। তামিম বলেন, ‘আমাকে হঠাৎ করে বোর্ডের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা ফোন করে বললেন তুমি তো বিশ্বকাপে যাবা, তোমাকে তো ম্যানেজ করে খেলতে হবে। তুমি এক কাজ করো তুমি প্রথম ম্যাচ খেলো না, আফগানিস্তানের সঙ্গে। আমি বললাম ভাই এটা এখনো ১২-১৩ দিনের কথা। আমি তো এর মধ্যে ভালো কন্ডিশনে থাকব। কী কারণে খেলব না? তখন বললেন আচ্ছা তুমি যদি খেলোও আমরা এমন একটা পরিকল্পনা করছি তুমি যদি খেলোও তাহলে নিচে ব্যাট করাব।’
‘আমি ১৭ বছর ধরে এক পজিশনে ব্যাটিং করেছি। জীবনে কোনো দিন তিন-চারে ব্যাটিংই করিনি। এমন যদি হতো আমি তিনে ব্যাটিং করি, চারে ব্যাটিং করি তাহলে যদি ওপর নিচ করা হয় সেটা মানিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু আমার তিনে চারে পাঁচে ব্যাটিংয়ের অভিজ্ঞতা নেই। আমি কথাগুলো ভালোভাবে নিইনি। উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলাম। কারণ কথাগুলো পছন্দ হয়নি। মনে হচ্ছিল আমাকে জোর করে অনেক জায়গায় বাধা দেওয়া হচ্ছে। দিস ইজ হোয়াট আই ফেল্ট।’
তামিম বলেন, ‘তখন আমি বললাম দেখেন, আপনারা একটা কাজ করেন যদি আপনাদের এমন চিন্তাধারা থাকে তাহলে আপনারা আমাকে পাঠায়েন না। আমি এই নোংরামির মধ্যে থাকতে চাই না। প্রতিদিন আপনারা আমাকে একেকটা নতুন জিনিস ফেস করাবেন, আমি এই জিনিসগুলোয় থাকতে চাই না। তারপরও ফোনে উনার সঙ্গে আমার অনেক কথাবার্তা হয়। সেগুলো এই প্লাটফর্মে না বলাই ভালো। এটা আমার আর উনার মধ্যেই থাক। তারপরও বলেছি যদি এগুলো হয় আমাকে রাখিয়েন না। আমি এই নোংরামোর মধ্যে থাকতে পারব না।’
সারাবাংলা/এসএইচএস