২০৩০ বিশ্বকাপ ফুটবলের স্বাগতিক দেশ চূড়ান্ত করেছে বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা। বিশ্বকাপের শততম বছরের এই আসরটির স্বাগতিক দেশ হবে স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কো। তবে যে লাতিন আমেরিকায় বিশ্বকাপ ফুটবলের যাত্রা শুরু, সেই লাতিনেও থাকছে বিশ্বকাপের ছোঁয়া। আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ে এই বিশ্বকাপে তাদের প্রথম ম্যাচটি খেলবে নিজ নিজ দেশে।
এই হিসাবে ২০৩০ বিশ্বকাপের স্বাগতিক দেশ হচ্ছে মূলত তিনটি। তবে খেলা হবে মোট ছয়টি দেশে। আর এই ছয়টি দেশ ছড়িয়ে থাকছে তিনটি মহাদেশে। এমন নজির বিশ্বকাপের ইতিহাসে আর নেই। ক্রমেই বিভক্ত হতে থাকা গোটা বিশ্বে ছড়ানো-ছিটানো এই আয়োজনের মাধ্যমে ফুটবল ঐক্যের ডাক দিচ্ছে বলে মনে করছে ফিফা।
বিবিসি ও গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়, বুধবার (৪ অক্টোবর) ফিফা কাউন্সিলের এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে আগামী বছরের ডিসেম্বরে ফিফার সদস্য ২১১টি দেশের ভোটে এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন পেতে হবে।
ফিফার এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিশ্বকাপের শততম বছরের এই আয়োজনটি নিয়ে অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটল। বিশ্বকাপের আয়োজক হতে স্পেন, পর্তুগাল ও মরক্কোর যৌথতা ইউরোপীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা উয়েফা ও আফ্রিকান ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা কনফেডারেশন অব আফ্রিকান ফুটবলের সহযোগিতার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। জানা যায়, তারা চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইস্যুতে সংহতি জানাতে ইউক্রেনকেও তাদের সঙ্গে রাখার প্রস্তাবনা ছিল। তবে চূড়ান্ত প্রস্তাবে ইউক্রেনের নাম রাখা হয়নি, এটি স্পষ্ট হয়েছে।
এদিকে ইউরোপ-আফ্রিকার যৌথ উদ্যোগের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিল দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ে। তাদের সঙ্গে চিলি ও প্যারাগুয়ের নামও ছিল আয়োজন হিসেবে। এ ছাড়া গ্রিস, মিশর এবং সৌদি আরবও যৌথভাবে এই বিশ্বকাপের আয়োজক হতে আগ্রহ দেখিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ইউরোপ-আফ্রিকার তিন দেশ মূল আয়োজক আর লাতিনের তিন দেশেও একটি করে ম্যাচ রাখার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, বিভক্ত এই বিশ্বে ফুটবল সবাইকে একতাবদ্ধ করছে। ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম আসরটি বসেছিল উরুগুয়েতে। বিশ্ব ফুটবলের প্রতিনিধিত্বকারী ফিফা কাউন্সিল এই আসরের শত বর্ষপূর্তিকে যথাযোগ্যভাবে উদ্যাপন করতে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকাতেও উদ্যাপন হবে এবং সেখানকার তিন দেশ উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়ে ২০৩০ বিশ্বকাপ ফুটবলের একটি করে ম্যাচ আয়োজন করবে।
ফিফা সভপতি বলেন, দক্ষিণ আমেরিকায় যে তিনটি ম্যাচ হবে, তার মধ্যে প্রথম ম্যাচটি প্রশ্নাতীতভাবে আয়োজন করা হবে উরুগুয়ের মন্টেভিডো’র সেই পৌরাণিক এস্টাদিও সেনটেনারিও স্টেডিয়ামে, ঠিক যেখানে শত বছর আগে শুরু হয়েছিল ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলের যাত্রা।
বিভিন্ন মহাদেশে বিশ্বকাপকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ফিফা কাজ করছে আগে থেকেই। এর অংশ হিসেবে ২০৩৪ সালের বিশ্বকাপকে কেবল এশিয়া ও ওসেনিয়া অঞ্চলের দেশগুলোকেই আয়োজক বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছে ফিফা। এরই মধ্যে সৌদি আরব বিশ্বকাপ আয়োজনের আগ্রহের কথা জানিয়েছে। ২০৩৪ বিশ্বকাপ আয়োজনে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে অস্ট্রেলিয়া ও ইন্দোনেশিয়া। এ ছাড়া চীনও আয়োজক দেশ হওয়ার লড়াইয়ে নাম লেখাতে পারে।