জোড়া শতকে চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে গুঁড়িয়ে প্রতিশোধ নিউজিল্যান্ডের
৫ অক্টোবর ২০২৩ ২২:০১
যেখানে ২০১৯ ওয়ানডে ক্রিকেট বিশ্বকাপ শেষ, সেখান থেকেই শুরু হলো ২০২৩ সালের আসর। চার বছর আগের সেই ফাইনালে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড ছিল সমানে সমান। ৫০ ওভারের ম্যাচ শেষে টাই। সুপার ওভারেও কেউ তৈরি করতে পারেনি ব্যবধান। শেষ পর্যন্ত বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোর সুবাদে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। চার বছর পর আরেক বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি সেই দুই ফাইনালিস্ট। তবে এবারে আর সমানে সমান লড়াই হয়নি। বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে রীতিমতো গুঁড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে গতবারের রানার-আপ নিউজিল্যান্ড। ৯ উইকেটের বিশাল জয় পেয়েছে প্রথম ম্যাচেই।
বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) ভারতের আহমেদাবাদে সূচনা হলো ওয়ানডে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের। এই স্টেডিয়ামে টস বড় ফ্যাক্টর হওয়ায় সেটি জিতেই মানসিকভাবে এগিয়ে ছিল নিউজিল্যান্ড। শেষ পর্যন্ত তারা প্রথমে ফিল্ডিং বেছে নিয়ে তারকাখচিত বিশাল লাইনআপের ‘মারমুখী’ ইংল্যান্ডকে আটকে দিয়েছে ২৮২ রানে।
পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৩ ওভার ৪ বল হাতে রেখেই সেই রান টপকে গিয়েছে মাত্র ১ উইকেট হারিয়ে। ডেভ কনওয়ে আর রাচিন রবীন্দ্রর জোড়া শতক আর ২৭৩ রানের এক অতিমানবীয় জুটিতে ইংল্যান্ড স্রেফ খাবি খেয়েছে। নিউজিল্যান্ড ৯ উইকেটে জয়ের পাশাপাশি +২.১৪৯ রানরেটও বাগিয়ে নিয়েছে এই ম্যাচ থেকে।
অথচ নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং ইনিংসের শুরুটা বলেনি তারা এত সহজে জিতবে। ক্রিস ওকসের প্রথম ওভারে ডেভন কনওয়ে ১০ রান নিলেও দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই স্যাম কারান তুলে নেন আরেক কিউই ওপেনার উইল ইয়ংকে। এরপর ব্যাটিংয়ে নামেন রাচিন রবীন্দ্র। বাকিটা ইতিহাস। ২১১ বল তথা ৩৫ ওভার ২ বলের অবিচ্ছিন্ন পার্টনারশিপে তারা তুলে নেন ২৭৩ রান।
ম্যাচ শেষে কনওয়ে অপরাজিত ছিলেন ১২১ বলে ১৫২ রানে, আর রাচিন অপরাজিত ছিলেন ৯৩ বল থেকে ১২৩ রান সংগ্রহ করে। ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির আগে বোলিংয়েও ১ উইকেট নিয়েছিলেন রাচিন। ম্যাচসেরার পুরস্কারটি উঠেছে তার হাতেই।
কিউই এই দুই ব্যাটারের তাণ্ডবে ইংল্যান্ডের কোনো বোলারই থিতু হতে পারেননি। সবচেয়ে ভালো ইকোনমি রেট ছিল দুই স্পিনার মঈন আলী আর আদিল রশীদের— সেটিও যথাক্রমে ৬.৪২ ও ৬.৭১। সবচেয়ে বেহাল দশা ছিল মার্ক উডের, ৫ ওভারে তিনি বিলিয়েছেন ৫৫ রান।
এর আগে ব্যাটিং ইনিংসে এক নতুন রেকর্ডের জন্ম দেয় ইংল্যান্ড। স্কোরবোর্ডে তাদের ১১ ব্যাটারের প্রত্যেকেই স্পর্শ করেছেন দুই অঙ্ক, যা ওয়ানডে ক্রিকেটে এক নতুন ইতিহাস। তবে সব ব্যাটারই কিছু কিছু রান পেলেও উইকেটে থিতু হতে পেরেছিলেন একমাত্র জো রুট। তার সংগ্রহ ছিল ৮৬ বলে ৭৭ রান।
এ ছাড়া জস বাটলার ৪৩, জনি বেয়ারস্টো ৩৩, হ্যারি ব্রুক ২৫ ও লিয়াম লিভিংস্টোন ২০ রান করেন। দাভিদ মালান করেন ১৪ রান, মঈন আলী ১১ রান, স্যাম কারান ১৪ রান, ক্রিস ওকস ১১ রান। আদিল রশীদ ১৫ রান ও মার্ক উড ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন। শেষ উইকেটে তাদের ২৬ বলে ৩০ রানের জুটি ইংল্যান্ডের রান ২৮০’র ঘরে নিয়ে যায়, যদিও তা শেষ পর্যন্ত ‘সামান্য’ রানই মনে হয়েছে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের কাছে।
কিউই বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সফল ছিলেন ম্যাট হেনরি। ১০ ওভারে ৪৮ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার ও পার্টটাইম স্পিনার গ্লেন ফিলিপস। ট্রেন্ট বোল্ট ও রাচিন রবীন্দ্র নিয়েছেন একটি করে উইকেট। এর মধ্যে বোল্ট তার ১০ ওভারে রান দিয়েছেন ৪৮, স্যান্টনার দিয়েছেন মাত্র ৩৭ রান।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।
সারাবাংলা/টিআর
ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড সিরিজ উদ্বোধনী ম্যাচ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩