ধর্মশালায় পরে ব্যাটিং করা দলের জেতার হার ৭৫%
৭ অক্টোবর ২০২৩ ১১:১২
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে দেড় হাজার মিটার উঁচুতে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালা ক্রিকেট স্টেডিয়াম। গোটা বিশ্বের ক্রিকেট স্টেডিয়ামগুলোকে সৌন্দর্যের ভিত্তিতে সাজানো হলে ভারতের হিমাচল প্রদেশের ক্রিকেট স্টেডিয়ামটা তালিকার ওপরের দিকেই থাকবে। পাহাড় দিয়ে ঘেরা চারপাশের ভেতর মনমুগ্ধকর একটি স্টেডিয়াম হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এবারের বিশ্বকাপে সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়াম এটিই।
স্বাভাবিকভাবেই ধর্মশালায় বলের বাউন্স বেশি হয়। পেসাররা সুবিধা পান এই উইকেটে। ধর্মশালা স্টেডিয়ামে ধারণক্ষমতা ২৩,০০০ জনের। ভূপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুর এই স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিং করা দল এখানে ম্যাচ জিতেছে একটি আর প্রথমে বোলিং করা দল ম্যাচ জিতেছে ৩টি। ধর্মশালায় প্রথম ইনিংসের গড় ২১৪। আর পরে ব্যাটিং করে এই স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ লক্ষ্য তাড়ার রেকর্ড ২২৭ রানের।
২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভারতের ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে স্টেডিয়ামটি যাত্রা শুরু করে। প্রথম ম্যাচে পরে ব্যাটিং করে ভারতকে ৭ উইকেটে হারায় ইংল্যান্ড। এর পরের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ২০১৪ সালে। সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাটিং করে ভারতকে ৫৯ রানে হারিয়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেটাই শেষবার। এরপরে গত ১০ বছরে স্টেডিয়ামটিতে অনুষ্ঠিত ২ ম্যাচে জিতেছে পরে ব্যাটিং করা দলই। ২০১৬ সালে ভারত শেষে ব্যাটিং করে নিউজিল্যান্ডকে ৬ উইকেটে হারায়। আর ২০১৭ সালে স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত সবশেষ ওয়ানডে ম্যাচে শ্রীলংকা ভারতকে হারিয়ে দেয় ৭ উইকেটে।
এবারের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের মোট পাঁচটি ম্যাচ এখানেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টসে জিতে বোলিং নিয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়াও ইংল্যান্ডের বিপক্ষের বাংলাদেশের ম্যাচটিও এখানেই অনুষ্ঠিত হবে।
স্টেডিয়ামের পরিচিতি ও ইতিহাস
২০০৩ সালে উদ্বোধন হয় হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের। হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় অবস্থিত এই স্টেডিয়ামের দর্শক ধারন ক্ষমতা ২৩ হাজার। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৪৫৭ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত স্টেডিয়ামটি। পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দরতম ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি ধাউলাধার পাহাড়ের রেঞ্জে অবস্থিত। স্টেডিয়াম থেকে দূরে তাকালেই দেখা যায় পাহাড় আর সেখানে বরফ দিয়ে ঢাকা থাকলেই চারপাশের সৌন্দর্য বেরে যায় বহুগুনে।
২০০৩ সালে স্টেডিয়ামটির উদ্বোধন হলেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আসতে আসতে সময় লেগে যায় এক দশক। অর্থাৎ ২০১৩ সালে প্রথমবারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজিত হয় এই স্টেডিয়ামে।
উইকেটের ধরন
ধর্মশালার মনমুগ্ধকর স্টেডিয়ামটি কেবল দেখতেই সুন্দর নয়। এখানে ব্যাটারদের ব্যাটিংও বাড়তি সৌন্দর্য ছড়ায়। এখানে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচগুলোর দিকে নজর দিলেই দেখা মেলে রানের ছড়াছড়ি। এই তো শেষবার ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সফরকারীদের ২০০ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিলেও শেষ পর্যন্ত জিততে পারেনি ভারত। সহজে দক্ষিণ আফ্রিকা পাহাড়সম রান তাড়া করে জয় তুলে নিয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দেড় হাজার মিটার উচ্চতায় অবস্থিত হওয়ার কারণে এই স্টেডিয়ামে বল কিছুটা দ্রুতই ছোটে। তাই তো পেসাররা একটু বাড়তি সুবিধাও পেয়ে থাকেন এখানে।
কেবল বাড়তি উচ্চতার কারণই নয়, এই স্টেডিয়ামে সেপ্টেম্বর থেকে মার্চ মাসের মধ্যে বাড়তি শিশিরও দেখা যায়। এ কারণেই এখানে খেলতে আসা দলগুলো সাধারণত রান তাড়া করে খেলতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
এখন পর্যন্ত দুটি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজিত হয়েছে এই স্টেডিয়ামে। এখন পর্যন্ত এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত চার ওডিআই ম্যাচের ভেতর তিনটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে রান তাড়া করা দল। আর প্রথমে ব্যাট করে জয় এসেছে বাকি এক ম্যাচে। ধর্মশালায় প্রথম ইনিংসে গড় রান ২১৪ আর দ্বিতীয় ইনিংসে ২০১। এখানে সর্বোচ্চ ৩৩০ রানের ইনিংস খেলেছিল ভারত। আর সর্বনিম্ন ১১২ রান করেছিল শ্রীলংকা। সর্বোচ্চ ২২৭ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে ইংল্যান্ডের।
হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এবারের বিশ্বকাপ
হিমাচল প্রদেশের এই স্টেডিয়ামটি এবার বাংলাদেশের জন্য মহাগুরুত্বপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশের দুটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এখানেই। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে এখানেই খেলবে টাইগাররা। আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষের ম্যাচটিও হবে এখানেই।
বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব
বিশ্বকাপের ৩য় ম্যাচ
৭ অক্টোবর, সকাল ১১টা, বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান
বিশ্বকাপের ৭ম ম্যাচ
১০ অক্টোবর, সকাল ১১টা, বাংলাদেশ বনাম ইংল্যান্ড
বিশ্বকাপের ১৫তম ম্যাচ
১৭ অক্টোবর, দুপুর ২টা ৩০ মিনিট, দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম নেদারল্যান্ডস
বিশ্বকাপের ২১তম ম্যাচ
২২ অক্টোবর, দুপুর ২টা ৩০ মিনিট, ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড
বিশ্বকাপের ২৭তম ম্যাচ
২৮ অক্টোবর, সকাল ১১টা, অস্ট্রেলিয়া বনাম নিউজিল্যান্ড
ওয়ানডে বিশ্বকাপ ২০২৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ টস বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান ভারত বিশ্বকাপ ২০২৩