বোলারদের নিষ্ক্রিয়তা আর ব্যাটারদের ব্যর্থতায় বাংলাদেশের হার
১০ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৪৬
টস জিতে প্রথমে বোলিং নিয়েছিলেন টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান। টসের সময় জানিয়েছিলেন পেসারদের ওপর তার প্রত্যাশা আছে দিনের শুরুতে কন্ডিশন থেকে কিছু সুবিধা আদায় করে নিবেন। তবে টাইগার দলপতির কৌশল বাস্তবায়ন হয়নি। ইংলিশদের টপ অর্ডারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে বাংলাদেশ। লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৬৫ রানের। জবাবে ব্যাট করতে নেমে লিটন দাস আর মুশফিকুর রহিম ছাড়া ব্যাট হাতে ব্যর্থ বাকি সবাই। এতেই ৪৮.২ ওভারে ২২৭ রানেই থামতে হয়েছে টাইগারদের। আর তাতেই ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড।
৩৬৫ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতে ধাক্কা বাংলাদেশের। ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম আবারও ব্যর্থ। বল তার ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে বেয়ারস্টোর হাতে আর তাতেই মাত্র ২ বলে ১ রান করে ফিরতে হয় তামিমকে। এরপর ড্রাইভ করার চেষ্টায় লিয়াম লিভিংস্টোনের তালুবন্দি হন নাজমুল হোসেন শান্ত। গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ জোটে তার। মাত্র ১৪ রানে টপ অর্ডারের দুই ব্যাটারকে হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
সেই চাপ থেকে বেরিয়ে আসবে কি? টাইগার দলপতি সাকিব আল হাসান ৯ বলে ১ রান করে টপলির বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন। এতেই টাইগারদের ব্যাটিং লাইন আপ গুঁড়িয়ে যায়। তবে এখানেই বিপদের শেষ নয়। মেহেদি হাসান মিরাজ জস বাটলারের গ্লাভসে বল তুলে দিয়ে ফেরেন ৭ বলে ৮ রান করে। বাংলাদেশ মাত্র ৪৯ রানে হারাল চতুর্থ উইকেট।
তবে দীর্ঘদিন অফ ফর্মে থাকা লিটন দাসের ব্যাট এদিন হেসেছে। আগ্রাসী ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়ে রান তুলতে থাকেন। তাকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম। দারুণ ব্যাটিংয়ে অর্ধশতক তুলে নেন লিটন। আর ব্যাট ছোটাচ্ছিলেন শতকের দিকে। ৩৮ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করেন লিটন। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১১তম ফিফটি, বিশ্বকাপের মঞ্চে দ্বিতীয়। দৃঢ়তা দেখানো মুশফিকের সঙ্গে তার জুটির রান পঞ্চাশ ছাড়ায় ৫৮ বলে। দুই তারকার কল্যাণে ১১ থেকে ২০ এই ১০ ওভারে বাংলাদেশ হারায়নি কোনো উইকেট।
তবে ২১তম ওভারে এসে ফিরেছেন লিটন দাস। ওকসের বলে বাটলারের কাছে ক্যাচ দিয়ে লিটন দাস ফেরেন ৬৬ বলে ৭৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে। ৭টি চার আর দুটি ছক্কায় ইনিংস সাজান লিটন। তিনি ফেরায় মুশফিকের সঙ্গে ৭৫ বলে ৭২ রানের জুটিও ভাঙে। আর বাংলাদেশ তখন হারের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। উইকেটের এক প্রান্তে আকড়ে থেকে ৬১ বলে ফিফটি পান অভিজ্ঞ মুশফিক। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে তার ৪৩ রানের জুটির ইতি ঘটে এর পরপরই। টপলির বলে বড় শট খেলার চেষ্টায় থার্ডম্যানে আদিল রশিদের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। তার ৬৪ বলে ৫১ রানের ইনিংসে ছিল ৪টি চার।
এরপির শেষ দিকে এসে হৃদয় ও মাহেদি কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও তা কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে পারে। দুজনই খেলেন ধীর গতির ইনিংস। বল হাতে পেয়েই লেগ স্পিনে ৬১ বলে ৩৯ রান করা হৃদয়কে ফেরান লিভিংস্টোন। রশিদের গুগলি বুঝতে না পেরে ৩২ বলে ১৪ রানে বোল্ড হন শেখ মেহেদী। শেষদিকে তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলামরা কেবল হারের ব্যবধানই কমান। আর বাংলাদেশ ৪৮.২ ওভারে ২২৭ রানে গুটিয়ে যায়। ইংল্যান্ড পেয়ে যায় ১৩৭ রানের জয়। টপলি একাই নেন ৪টি উইকেট। আর দুটি উইকেট নেন ক্রিস ওকস।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দাভিদ মালানের ১৪০ আর জো রুটের ৮২ রানে ভর করে ৩৬৪ রানের পাহাড়সম পুঁজি দাঁড় করায় ইংল্যান্ড। একাদশে ঢোকা শেখ মেহেদী বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। তবে ৮ ওভারে তিনি দেন ৭১ রান। ১০ ওভারে ৭৫ রানের বিনিময়ে শরিফুল শিকার ৩ উইকেট। বাংলাদেশের ব্যবহার করা ছয় বোলারের মধ্যে ওভারপ্রতি ছয়ের কম রান দেন কেবল সাকিব। ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে তিনি পান ১ উইকেট।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।
সারাবাংলা/এসএস