রেকর্ড উদ্বোধনী জুটির পরেও বাংলাদেশের মামুলি পুঁজি
১৯ অক্টোবর ২০২৩ ১৮:২৯
পুনেতে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনারের কল্যাণে উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ। তবে রানের সেই ধারা ধরে রাখতে পারেনি মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় মাত্র ৪৪ রানের ব্যবধানে চার ব্যাটারের বিদায়ের পর থেমে যায় রানের চাকা। আর সেখান থেকেই কমতে থাকে বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের আশা। শেষদিকে মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ভর করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৫৬ রানের।
বৃহস্পতিবার পুনেতে বিশ্বকাপে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে ২৫৬ রান করেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৬ রান করেন লিটন, তানজিদের ব্যাট থেকে আসে ৫১ রান। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ৩৮ ও মাহমুদউল্লাহ করেন ৪৬ রান।
শেষবার এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে পঞ্চাশ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েছিল বাংলাদেশ। তবে এরপরের আট ম্যাচে ছিল না একটি ফিফটির জুটিও। তবে ভারতের বিপক্ষে ঘুচল সেই আক্ষেপ। তানজিদ হাসান তামিম এবং লিটন দাসের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ভর করে পাওয়ার প্লে’তে পাওয়ার ব্যাটিং টাইগারদের।
পাওয়ার প্লে’র ১০ ওভারে বিনা উইকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ৬৩ রান। এরপর ১৪তম ওভারে শার্দুল ঠাকুরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করলেন এ বাঁহাতি ওপেনার। তবে ফিফটি তোলার পরে আর টিকতে পারেননি বেশি সময় উইকেটে। ১৫তম ওভারের চতুর্থ বলে কুলদিপ যাদবকে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডাব্লিউ হয়ে ফেরেন এই ওপেনার। আউট হওয়ার আগে ৪৩ বলে ৫টি আর ৩টি ছয়ে ৫১ করে ফেরেন তামিম। বাংলাদেশ ৯৩ রানে হারায় প্রথম উইকেট।
এর আগেই তানজিদ-লিটন বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে সর্বোচ্চ উদ্বোধনী জুটি গড়েন। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১১ সালে মিরপুরে তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েসের ৫৬ রান। ৯৩ রানের এই ওপেনিং জুটিই বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল সেই ১৯৯৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে শাহরিয়ার হোসেন বিদ্যুৎ ও মেহরাব হোসেন অপি জুটির ৬৯ রন।
তামিম ফিফটি করে ফেরার পর উইকেটে আসেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে পারেননি থিতু হতে। সতর্ক শুরু করলেও রবীন্দ্র জাদেজার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ১৭ বলে ৮ রান করেই থামতে হলো বাংলাদেশ অধিনায়ককে। ব্যাকফুটে গিয়ে আড়াআড়ি খেলার চেষ্টা সফল হয়নি এ বাঁহাতির। তিনিও রিভিউ করেননি। ২০ ওভারে ১১০ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর ২৫তম ওভারের প্রথম বলটি করেন মোহাম্মদ সিরাজ। লেগ সাইডের বাইরের দিকে করা বলে উইকেটের পেছনে লোকেশ রাহুলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন মিরাজ। নিজের বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে ভালো ক্যাচ নিয়েছেন রাহুল। চারে ব্যাট হাতে নামা মিরাজ ১৩ বলে করেন মাত্র ৩ রান। ১২৯ রানে বাংলাদেশ হারায় তৃতীয় উইকেট।
এরপর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম বলেই আউট হওয়া লিটন দাসের দুর্দান্ত ছন্দের দিনে তুলে নিলেন অর্ধশতক। শুরুতে ক্রিজে সময় কাটিয়েছেন অনেক। প্রথম ১৪ বলে করেছেন ১ রান। এরপর খোলস ছেড়ে বেরিয়েছেন। ফিফটিতে যেতে লিটনের লাগে ৬২ বল। লিটনের ওপর প্রত্যাশা ছিল একটু বেশিই। তবে সে আশার গুঁড়ে বালি ঢেলে দিয়েছেন এই ওপেনার নিজেই।
রবীন্দ্র জাদেজার সাধারণ একটি বলেই লং অফে ক্যাচ তুলে দিয়ে ইনিংসের মাটি চাপা দিয়েছেন। আর ফিরেছেন ৮২ বলে ৬৬ রান করে। বাংলাদেশ ১৩৭ রানে হারাল চতুর্থ উইকেট।
দ্রুতই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম। তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গী করে গড়েন ৪২ রানের জুটি। তবে হৃদয় ফেরার পর খুব বেশি সময় উইকেটে থাকেননি মুশিও। ফেরেন ৩৮ রান করে। এরপর উইকেটের এক প্রান্ত আকড়ে রাখেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে রিয়াদ ৩৬ বলে ৪৬ রান করেন। আর তাতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে বাংলাদেশের পুঁজি দাঁড়ায় ২৫৬ রানের।
ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন রবীন্দ্র জাদেজা, মোহাম্মদ সিরাজ এবং জাসপ্রিত বুমরাহ। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন কুলদিপ যাদব এবং শার্দুল ঠাকুর।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।
সারাবাংলা/এসএস