রেকর্ড রানের ম্যাচে ৫ রানে জিতল অস্ট্রেলিয়া
২৮ অক্টোবর ২০২৩ ২০:৩১
বিশ্বকাপ আজ রান বন্যা দেখল। ধর্মশালায় অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচে ৭৭১ রান উঠেছে। বিশ্বকাপের ম্যাচে সর্বোচ্চ রান উঠার রেকর্ড এটা। রেকর্ডের ম্যাচে রুদ্ধশ্বাস উত্তেজনা শেষে ৫ রানের জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে ট্রাভিস হেডের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি ও ডেভিড ওয়ার্নারের ৮৮ রানের কল্যাণে ৩৮৮ রান তুলেছিল অস্ট্রেলিয়া। পরে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস থেমেছে ৩৮৩ রানে। কিউইদের হয়ে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছেন রাচিন রবীন্দ্র।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য ১৯ রান লাগত নিউজিল্যান্ডের। বোলিংয়ে বেশি সময় নেওয়ার শাস্তি হিসেবে বাউন্ডারি সীমানায় অস্ট্রেলিয়ার মাত্র চারজন ফিল্ডার তখন। মিচেল স্টার্কের প্রথম চার বলে ১২ রান দিয়ে ফেলেন স্টার্ক। ২ বলে দরকার ছিল ৭ রান। পরের বলে জেমি নিশামকে ফিরিয়েছেন স্টার্ক। শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে পারেননি লোকি ফার্গুসন। যাতে শেষ পর্যন্ত ৫ রানের হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে কিউইদের।
প্রথম দুই ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ শুরু করা অস্ট্রেলিয়া টানা চার ম্যাচে জিতল। ছয় ম্যাচে চার নম্বর জয় পাওয়া অজিরা সেমিফাইনালের দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে আছে। অপর দিকে নিউজিল্যান্ডও ছয় ম্যাচ খেলে চারটি জয় পেয়েছে।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে ৩৮৮ রানের পাহাড় ডিঙাতে নেমে নিউজিল্যান্ডের হয়ে শুরুটা দারুণ করেছিলেন দুই ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং। দুজনেই ভালো শুরু পেলেও বড় ইনিংস অবশ্য একজনও খেলতে পারেননি।
সেই আক্ষেপটা ঘুচিয়ে দিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র। কেন উইলিয়ামসনের চোটে টপ অর্ডারে জায়গা পাওয়া রবীন্দ্র বিশ্বকাপে অসাধারণ ব্যাটিং করে চলেছেন। আজ আরেকটা ঝড়ো সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে দলকে জয়ের কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন রবীন্দ্র। ডারেল মিচেল, টম লাথামদের সঙ্গে ছোট ছোট জুটি গড়ে দলকে টানছিলন রবীন্দ্র।
ইনিংসের ৪১তম ওভারে রবীন্দ্র আউট হয়েছেন দলীয় ২৯৩ রানের মাথায়। ৮৯ বল খেলে ৯টি চার ৫টি ছয়ের সাহায্যে ১১৬ রান করে ফিরেছেন রবীন্দ্র। তারপর কিউইদের টানছিলেন জেমি নিশাম। তবে শেষের হিসেবটা মিলাতে পারেননি নিশাম। ৩৯ বল খেলে ৩টি করে চার-ছয়ে শেষ ওভারে রান আউট হয়েছেন ৫৮ রান করে। ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৮৩ রানে থেমেছে নিউজিল্যান্ড।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ৭৪ রানে তিন উইকেট নিয়েছেন অ্যাডাম জাম্পা। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন প্যাট কামিন্স ও জস হ্যাজেলউড।
এর আগে দুই ওপেনারের ব্যাটে রানের পাহাড় গড়ে অস্ট্রেলিয়া। উদ্বোধনী জূটিতেই অগ্নিমূর্তি ধারণ করেন অজি দুই ওপেনার ট্রাভিস হেড ও ডেভিড ওয়ার্নার। দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে ৫৫ বলে হয় দলীয় সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ওয়ার্নারের বিদায়ে ১৭৫ রানে ভাঙে এই জুটি। টানা তৃতীয় সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেলেন না ওয়ার্নার। কিউই স্পিনার ফিলিপসে বলে ৮১ রান করে থামলেন অজি ওপেনার।
ওয়ার্নার সেঞ্চুরি মিস করলেও হেড পান তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া। বিশ্বকাপের অভিষেকেই ৫৯ বলে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। ৬ ছক্কা ও ১০ চারে নিজের ইনিংসটি সাজান ২৯ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। তবে তিন অঙ্ক ছুঁয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি হেড। ফিলিপসের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি ১০৯ রান করে।
এরপর ক্রিজে আসেন স্টিভেন স্মিথ। তাকে নিয়ে ২৮ রানের গড়েন মিচেল মার্শ। দলীয় ২২৮ রানে ১৭ বলে ১৮ রান করে আউট হন স্টিভেন স্মিথ। এরপর ক্রিজে আসা মার্নাস লেবুশানেকে নিয়ে বড় জুটি গড়ার আভাস দেন মিচেল মার্শ। তবে দলীয় ২৬৪ রানে ৫১ বলে ৩৬ রান করে আউট হন মার্শ।
এরপর দ্রুত ফিরে যান মার্নাস লেবুশানে। ২৬ বলে ১৮ রান করেন তিনি। এরপর ক্রিজে আসা জশ ইংলিশকে নিয়ে ৪৯ রানের জুটি গড়েন গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। দলীয় ৩২৫ রানে ২৪ বলে ৪১ রান করে আউট হন ম্যাক্সওয়েল।
এরপর ক্রিজে আসা অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে নিয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন জশ ইংলিশ। দলীয় ৩৮৭ রানে ২৮ বলে ৩৮ রান করে আউট হন ইংলিশ।
এরপর দ্রুতই আরও তিন উইকেট হারিয়ে ৪৯ ওভার ২ বলে ৩৮৮ রানে অলআউট হয় অস্ট্রেলিয়া। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে ট্রেন্ট বোল্ট ও গ্লেন ফিলিপস নেন ৩টি করে উইকেট।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।
সারাবাংলা/এসএইচএস