বায়ুদূষণে শুক্রবার অনুশীলন হয়নি বাংলাদেশের, শনিবারও অনিশ্চিত
৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৩:৩৭
শ্রীলংকার সঙ্গে সোমবারের (৬ নভেম্বর) ম্যাচ সামনে রেখে শুক্রবার (৩ নভেম্বর) অনুশীলনে নামার কথা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের। তবে দিল্লির বায়ুদূষণ পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য তীব্র হুমকির কারণ বিবেচনায় জরুরি অবস্থা জারি করতে হয়েছে দিল্লিতে। ফলে বাংলাদেশের অনুশীলনও হয়নি।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজন অনুশীলন না হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন ক্রিকেটবিষয়ক পোর্টাল ক্রিকইনফোকে। তিনি জানান, বুধবার দিল্লি পৌঁছালেও শুক্রবার অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রথম অনুশীলন সেশন হওয়ার কথা ছিল, বায়ুদূষণ পরিস্থিতিতে যা ভেস্তে গেছে।
এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (একিউআই) অনুযায়ী, দিল্লির বাতাসে বৃহস্পতিবার ক্ষুদ্র কণার মাত্রা বিভিন্ন স্থানে ৪০০ ছাড়িয়ে গিয়েছিল, যা ২০০ পেরোলেই জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর বিবেচনা করা হয়। ফলে বৃহস্পতিবার বায়ুদূষণ বিবেচনায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। দুই দিনের জন্য স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। নির্মাণকাজ ও যান চলাচলেও বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
এ পরিস্থিতিতে আইসিসি ও বিসিসিআইয়ের মধ্যে সোমবারের বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কোনো তথ্য জানা যায়নি এখনো। তবে বায়ুদূষণের এরকম পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে ম্যাচটি হুমকির মুখে পড়তে পারে।
শুক্রবারের অনুশীলন নিয়ে খালেদ মাহমুদ সুজন বলেন, আমাদের তিন দিন অনুশীলন করার কথা ছিল। এর মধ্যে শুক্রবার আমরা অনুশীলন করতে পারলাম না। আমাদের হাতে আরও দুদিন আছে। আমরা ওই দুই দিন কাজে লাগাতে চেষ্টা করব।
দিল্লির বায়ু পরিস্থিতিতে খেলোয়াড়দের নিয়েও চিন্তিত সুজন। তিনি বলেন, আমাদের কয়েকজনের কাশি দেখা যাচ্ছে। ফলে এরকম বায়ুদূষণ থাকলে সেটি ঝুঁকির কারণ হতে পারে। আমরা অসুস্থ হয়ে পড়তে চাই না। আমরা জানি না পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে কি না। তবে আমাদের আগামীকাল (শনিবার) অনুশলীন রয়েছে। তারপরও সোমবারের ম্যাচটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এই ম্যাচের জন্য আমরা সব খেলোয়াড়কে সম্পূর্ণ ফিট দেখতে চাই।
ক্রিকইনফো জানিয়েছে, শনিবারেও বাংলাদেশের অনুশীলন সেশনটি রয়েছে সন্ধ্যা থেকে। তবে রোববারের সেশনটি দুপুর ২টা থেকে শিডিউল করা রয়েছে।
বৃহস্পতিবারের পর শুক্রবারও দিল্লির বায়ুমানের তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। আইকিউএয়ারের তথ্য বলছে, শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত পেরিয়েও দিল্লির বায়ুমান ছিল ৩৩৭, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকির কারণ।
ভারতের ধরিত্রী বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলছে, ৪ থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে বায়ুমানের সামান্য উন্নতি হতে পারে। তবে তা জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ক্যাটাগরিতেই থাকবে। পরের ছয় দিনেও বায়ুমান চরম খারাপ থেকে খুব খারাপের মধ্যে থাকবে।
শ্রীলংকা দলও দিল্লির বায়ুমানের দিকে নজর রাখছে। দলটির জানিয়েছে, বায়ুমান এরকম চরম খারাপ থেকে গেলে শনিবার তারাও অনুশীলন বাতিল করতে পারে। তাদের বেশ কয়েকজনেরই ২০১৭ সালে দিল্লিতে এমন চরম খারাপ বায়ুমানের মধ্যেই টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেবার তাদের বেশ কয়েকজনকেই বমি করতে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল। শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যাতেও ভুগতে হয়েছে কয়েকজনকে।
এদিকে গত বুধবার ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মাও বায়ুদূষণ নিয়ে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্ম যেন নির্ভয়ে বাঁচতে পারে, সেটি নিশ্চিত করা জরুরি। একই দিন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই জানায়, বায়ুমান বিবেচনায় মুম্বাই ও দিল্লির পরের ম্যাচগুলোতে আতশবাজি ফোটানো বন্ধ থাকবে।
সোমবার শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দৌড়ে টিকে থাকতে হলে এ ম্যাচে জয়ের কোনো বিকল্প নেই টাইগারদের জন্য।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।
সারাবাংলা/টিআর
একিউআই ইনডেক্স ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ দিল্লির বায়ুমান বায়ুমান বাংলাদেশ ক্রিকেট দল