বৃষ্টি আইনে নিউজিল্যান্ডকে হারাল পাকিস্তান
৪ নভেম্বর ২০২৩ ২০:০৪
বিশ্বকাপে নিজেদের রেকর্ড পুঁজি দাঁড় করিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তবে শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির কাছে হার মানতে হলো কিউইদের। প্রথমে ব্যাট করে ৪০২ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দেয় পাকিস্তানের সামনে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে কয়েক দফা বৃষ্টির সামনে পড়ে পাকিস্তান। তবে ফখর জামানের ঝড়ো শতকে ভর করে ২৫.৩ ওভারে ১ উইকেটে ২০০ রান তোলে পাকিস্তান। এরপর বৃষ্টিতে আর খেলা মাঠে গড়ায়নি। আম্পায়াররা শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করে বৃষ্টি আইনে পাকিস্তানকে ২১ রানে জয়ী ঘোষণা করে।
বেঙ্গালুরুতে প্রথমে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৪০১ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। এতেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি কিউইরা। বৃষ্টির কারণে দুদফা ম্যাচ বন্ধ হওয়ায় পর বৃষ্টি আইনে পাকিস্তানকে ২১ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয়। আর এই জয়ে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালের আশা এখনও বাঁচিয়ে রাখল ১৯৯২ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়নরা।
৪০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ২১.৩ ওভারে পাকিস্তান ১ উইকেটে ১৬০ রান তোলার পর একবার বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হয়। পরে ওভার কাটা হয়েছে ৯টি। পাকিস্তানকে নতুন লক্ষ্য দেওয়া হয় ৪১ ওভারে ৩৪২। সেই লক্ষ্য সামনে রেখে ২৫.৩ ওভারে ১ উইকেটে ২০০ রান তোলার পর আরও একবার বৃষ্টির কবলে পড়ে ম্যাচ। তারপর আর শুরু করা যায়নি।
বিশাল রান তাড়ায় পাকিস্তানকে ব্যাটিংয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন ফখর জামান। ৬৩ বলে তিনি তুলে নেন সেঞ্চুরি। তিন অংকে পৌঁছাতে ছক্কা হাঁকান ৯টি। অথচ বড় রান তাড়ায় দলীয় ৬ রানের মাথায় ওপেনার আবদুল্লাহ শফিককে হারিয়ে বসেছিল পাকিস্তান। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ১৪১ বলে ১৯৪ রান যোগ করেছেন ফখর আর বাবর আজম।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে ফখর ৮১ বলে ১২৬ রানে অপরাজিত থাকেন। বিধ্বংসী এ ইনিংসে ৮টি চারের সঙ্গে ১১টি ছক্কা হাঁকান এই ওপেনার। ৬৩ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন বাবর আজম। এর আগে বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ব্যাটিং বান্ধব উইকেটে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম।
বেঙ্গালুরুতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় নিউজিল্যান্ড। তবে দ্বিতীয় উইকেটে রাচিন রবীন্দ্র এবং কেইন উইলিয়ামসন মিলে ১৮০ রানের জুটি গড়েন। আর তাতেই বড় সংগ্রহের পথে থাকে কিউইরা। কেইন উইলিয়ামসন শতক থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থাকতে ফিরলেও রাচিন তুলে নেন এবারের বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি। আর তাতেই নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৪০১ রানের বিশাল পুঁজি দাঁড় করায় কিউইরা।
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। এছাড়া একটি করে উইকেট নেন হাসান আলী, ইফতিখার আহমেদ এবং হারিস রউফ।
দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন ওপেনার ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র। ওপেনিং জুটিতে তারা ৬৮ রান যোগ করেছেন। কনওয়ে ৩৫ রানে ফিরলে ভাঙে জুটি। তার পর রবীন্দ্র-উইলিয়ামসনের জুটি বড় স্কোরের মঞ্চ গড়ে দিয়েছে। তাদের থামানোর কোনও উপায় জানা ছিল না পাকিস্তানি বোলারদের। তাদের ওপর চড়াও হয়ে দ্রুত গতিতে রান তোলায় এই জুটিতেই ৩৪.২ ওভারে স্কোর দাঁড়ায় ১ উইকেটে ২৪৮। দুর্ভাগ্য ঝড়ো গতিতে খেলা উইলিয়ামসন ৫ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন। ৯৫ রানে ইফতিখারকে উঠিয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়েছেন। তার ৭৯ বলের ইনিংসে ছিল ১০টি চার ও ২টি ছয়।
কিউই অধিনায়ক ব্যর্থ হলেও তার আগে টুর্নামেন্টে রেকর্ড তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন রাচিন। এক বিশ্বকাপে তিনটি সেঞ্চুরি পাওয়া প্রথম কিউই ক্রিকেটার এখন তিনি।
দুর্ভাগ্য উইলিয়ামসনের আউট ছন্দ পতন ঘটায় ইনিংসে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আউট হন রাচিন রবীন্দ্র। ফেরার আগে ৯৪ বলে ১০৮ রানে আউট হন কিউই ওপেনার। তার ইনিংসে ছিল ১৫টি চার ও ১টি ছয়। তাতেও অবশ্য সমস্যা ছিল না। ইনিংসটা তিনশ ছাড়ায় ড্যারিল মিচেল ও মার্ক চাপম্যানের কল্যাণে। যদিও বেশিক্ষণ টেকেননি তারা। মিচেল ১৮ বলে ২৯ আর চ্যাপম্যান ২৭ বলে ৩৯ রান করে রান বাড়িয়ে নিতে অবদান রেখেছেন।
শেষে স্কোরটা চারশ পর্যন্ত গেছে গ্লেন ফিলিপস ও মিচেল স্যান্টনারের কার্যকরী ইনিংসে। ফিলিপস ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৩৫ বলে ৪১ রানে আউট হলেও অপরাজিত ছিলেন স্যান্টনার। ১৭ বলে ২৬* রান করেছেন স্পিনিং অলরাউন্ডার।
পাকিস্তানের হয়ে সবচেয়ে সফল ছিলেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ৬০ রানে তিনটি উইকেট নিয়েছেন।পাকিস্তানি বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল ছিলেন শাহীন আফ্রিদি। ৯০ রানে কোনও উইকেট পাননি তিনি। হারিস রউফ ৮৫ রানে একটি উইকেট নিলেও অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ড গড়েছেন। এক মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ছক্কা খাওয়ার রেকর্ডটি এখন তার দখলে। তাছাড়া একটি করে উইকেট নিয়েছেন হাসান আলী, ইফতিখার আহমেদও।
ওয়ানডে বিশ্বকাপের সবকটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করছে দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় স্যাটেলাইট টেলিভিশন জিটিভি। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম র্যাবিটহোলবিডি‘তেও দেখা যাবে এবারের বিশ্বকাপ।
সারাবাংলা/এসএস