কোহলিকে আউটের পর স্টেডিয়ামের নীরবতা তৃপ্তি দিয়েছে কামিন্সকে
২১ নভেম্বর ২০২৩ ১৪:১২
ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল। হাইভোল্টেজ ম্যাচে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ টুর্নামেন্টের শুরু থেকেই উড়তে থাকা অপ্রতিরোধ্য ভারত। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে সেই মহারণ। সেখানে নিশ্চিতভাবেই ভারতীয় একাদশের সঙ্গে ‘দ্বাদশ খেলোয়াড়’ হিসেবে সঙ্গী হিসেবে উপস্থিত লক্ষাধিক দর্শক। সেই ফাইনালের আগে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স জানালেন, দর্শকসারিতে স্তব্ধ করে দিয়ে ম্যাচ জেতার সন্তুষ্টির সঙ্গে কোনো কিছুরই তুলনা হয় না! ম্যাচ শেষে সেই দর্শকদের চুপ করিয়েই ছেড়েছেন কামিন্স। তবে তাকে আরও বেশি তৃপ্তি দিয়েছে বিরাট কোহলির বিদায়ে পুরো স্টেডিয়ামে পিনপতন নীরবতা নেমে আসে। আর এই নীরবতা দারুণ তৃপ্তি দিয়েছে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে।
ফাইনালের আগে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়েছিলেন কামিন্স। সেখানেই স্বীকার করে নিয়েছিলেন, আহমেদাবাদের লক্ষাধিক দর্শকের সমর্থন থাকবে শুধুই ভারতের পক্ষে। তবে দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে বলেন, ‘খেলার মাঠে এরকম বিশাল সমর্থকগোষ্ঠীকে স্তব্ধ হয়ে যেতে দেখার চেয়ে সন্তুষ্টির আর কিছুই হতে পারে না এবং সেটিই ফাইনালে আমাদের লক্ষ্য।’
কেবল কথায় নয়, আহমেদাবাদের লক্ষাধিক দর্শককে সত্যি সত্যিই স্তব্ধ করে দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। টসে জিতে বোলিং নিয়ে বোলিং আর ফিল্ডিংয়ের অসাধারণ যুগলবন্দিতে ভারতকে মাত্র ২৪০ রানে বেঁধে ফেলল অস্ট্রেলিয়া। রোহিত শর্মা আর কোহলি বাদে ভারতের বাকি ৯ ব্যাটার মিলে বাউন্ডারি মারতে পারলেন মাত্র ৫টি। গ্যালারিতে নিরবতা নেমে আসতে থাকে তো তখন থেকেই।
শুরুতে স্টেডিয়াম মাতিয়ে রেখেছিল ভারতীয় ব্যাটাররা। বেশ আগ্রাসী মেজাজেই শুরু করে তারা। তবে তিন উইকেট হারানোর পর খোলসে ঢুকে যায় ভারত। তখন ইনিংস মেরামতের মূল দায়িত্বে ছিলেন কোহলি। অনেকটা করেছিলেনও। কিন্তু এরপরই কামিন্সের আঘাত। অজি অধিনায়কের শর্ট অব লেন্থের ডেলিভারিটা রক্ষণাত্মক ঢঙ্গে ব্যাট চালিয়ে থার্ডম্যানে খেলতে চেয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু বল ব্যাটের নিচের দিকের কানায় লেগে আঘাত হানে স্টাম্পে। লাখো দর্শকে মুখরিত স্টেডিয়াম মুহূর্তেই নীরব। কোহলির এই উইকেটই তার জন্য সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক কি-না জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে অজি অধিনায়ক বলেন, ‘হ্যাঁ, আমারও তাই মনে হয়।’
তবে কোহলির আউটে স্টেডিয়ামের পিনপতন নীরবতা বুঝতে কিছুটা সময় লেগেছে কামিন্সের, ‘এতো মানুষের উল্লাস হঠাৎ থেমে গেল, সেটা বিশ্বাস হচ্ছিলো না। কয়েক সেকেন্ড লাগলো বুঝতে। মনে হচ্ছিল আজও সে (কোহলি) সেঞ্চুরি করে ফেলবে। সেভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল যেমন সে সাধারণত করে থাকে। তার উইকেট পাওয়াটা বেশ তৃপ্তিদায়ক।’
বিশ্বকাপে এবার রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে ৩ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে ৭৬৫ রান করেছেন কোহলি। ভেঙেছেন একের পর এক রেকর্ড। শচীন টেন্ডুলকারের ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির রেকর্ড, এমনকি এক আসরে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন। মূলত তার অসাধারণ নৈপুণ্যেই সেমি-ফাইনাল পর্যন্ত তেমন কোনো চাপ অনুভব করেনি ভারত। কিন্তু ফাইনালে এসে তালগোল পাকিয়ে ফেলে দলটি।
সারাবাংলা/এসএস
ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০২৩ প্যাট কামিন্স বিরাট কোহলি ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়া