স্বর্ণার ফাইফারে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদশের ঐতিহাসিক জয়
৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:৫৫
শেষবার ২০১২ সালে ঘরের মাঠ মিরপুরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ দল। এরপর ১১ বছর পর প্রোটিয়াদের মাটিতে এলো জয়। সে জয়ের কারিগর স্বর্ণা আক্তার। ব্যাট হাতে মুর্শিদা, নিগার সুলতানাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বাকি কাজটা সারেন অলরাউন্ডার সর্ণা আক্তার। বল হাতে ঘূর্ণি জাদুতে পাঁচ উইকেট তুলে নেন তিনি। আর তাতেই বাংলাদেশ পেয়ে যায় ১৩ রানের ঐতিহাসিক এই জয়।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) বেনোনিতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে নির্ধারিত ২০ ওভারে তাদের ২ উইকেটে ১৪৯ রানের জবাবে স্বাগতিকরা পুরো ওভার খেলে থামে ৮ উইকেটে ১৩৬ রানে। এতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে জ্যোতির দল। যেকোনো সংস্করণে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে এটিই বাংলাদেশের প্রথম জয়।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ৬২ রান করেন মুর্শিদা। টি-টোয়েন্টিতে এটি তার চতুর্থ ফিফটি। ৫৯ বল মোকাবিলায় তিনি মারেন ৬ চার ও ১ ছক্কা। চারে নামা জ্যোতি ৬ চারে ২১ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন। অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তারা যোগ করেন ৬৬ রান। এছাড়া, আরেক ওপেনার শামিমা সুলতানা ২৪ বলে ২৪ ও তিনে নামা সোবহানা মোস্তারি ১৭ বলে ১৬ রানে আউট হন। এতেই বাংলাদেশের পুঁজি দাঁড়ায় নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৯ রান।
১৫০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকে প্রোটিয়ারা। পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৫৪ রান তুলে ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনাররা। এরপর আন্নেকে বোশ ও ট্যাজমিন ব্রিটসের ব্যাটে লাগাম টেনে রান তোলার গতি কমিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। দশম ওভারে ভাঙে ৬৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। রাবেয়া খান সাজঘরে পাঠান ২৬ বলে ৩০ করা প্রোটিয়া অধিনায়ক ব্রিটসকে। তখন থেকে শুরু হয় দলটির শক্ত অবস্থান থেকে পথ হারিয়ে ফেলা। আর বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়ায় দারুণ কায়দায়।
পরের ওভারে আনেরি ডের্কসেনকে বোল্ড করে দেন ফাহিমা খাতুন। জোড়া ধাক্কার পর বোশ ও সিউন লুস মিলে গড়েন প্রতিরোধ। ১০০ পেরিয়ে যায় স্বাগতিকদের সংগ্রহ। এরপর স্বর্ণা দেখাতে থাকেন একের পর এক ভেলকি। লুসকে বিদায় করে ৩২ রানের জুটির ইতি ঘটিয়ে বাংলাদেশকে দেন গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু। লুসের সংগ্রহ ১৯ বলে ১৮ রান।
ঘুরে দাঁড়ানো দক্ষিণ আফ্রিকার শেষ ৩ ওভারে দরকার ছিল ২৮ রানের। তবে এরপরেই ম্যাচে মোড় ঘুরিয়ে দেন স্বর্ণা আক্তার। নিজের তৃতীয় ওভার করতে বল হাতে নেওয়া স্বর্ণা মাত্র ২ রান দিয়ে জোড়া শিকার ধরে তাদেরকে কাঁপিয়ে দেন। বাংলাদেশ বসে পড়ে চালকের আসনে। বিপজ্জনক বোশকে ক্যাচ বানানোর পর ননডুমিসো শাঙ্গাসেকে রানের খাতাই খুলতে দেননি স্বর্ণা। ৪১ বলে হাফসেঞ্চুরি পাওয়া বোশ থামেন ৬৭ রানে। ৪৯ বলের ইনিংসে তিনি মারেন ৯ চার ও ১ ছক্কা।
পরের ওভার অর্থাৎ ১৯তম ওভারে নাহিদা আক্তারও মাত্র ২ রান দিয়ে তুলে নেন এলিজের উইকেট। এতেই শেষ ওভারে ২৪ রানের দরকার পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে তা আর করতে দেননি স্বর্ণা। শেষ ওভারে তুলে নেন দুটি উইকেট। এতেই চলতি বছরের শুরুতে টি-টোয়েন্টি অভিষেক হওয়া স্বর্ণা নেন ফাইফারের মধুর স্বাদ। ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে ৫ উইকেট নিতে তিনি দেন ২৮ রান। এই সংস্করণে বাংলাদেশের হয়ে ৫ উইকেট নেওয়া সর্বকনিষ্ঠ বোলারও (১৬ বছর ৩৩৬ দিন) তিনি। তিনি ছাড়া টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে বাংলাদেশের আর তিনজনের। নাহিদা আক্তার দুবার এবং পান্না ঘোষ ও জাহানারা খাতুন একবার করে ফাইফার পেয়েছেন।
সারাবাংলা/এসএস