বিজয়ের মাসে এশিয়া জয় করল বাংলাদেশি যুবারা
১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৩৫
একদিন আগে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করল বাংলাদেশ। বিজয় উদযাপনের সেই রেস না কাটতেই ধরা দিল ঐতিহাসিক আরেক জয়। ক্রিকেটে প্রথম বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপ জিতেছে বাংলাদেশ। ফাইনালে স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে এশিয়ার সেরা হয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। সংযুক্ত আরব আমিরাতের শেষ উইকেট পড়তেই লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা নিয়ে মাঠে ঢুকলেন বাংলাদেশি যুবারা। গ্যালারিতেও তখন গর্জন।
স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত ফাইনাল খেলছে বলে ফাইনালে ‘টিকিট ফ্রি’ করে দেওয়া হয়েছিল। যাতে গ্যালারিও দর্শকে ভরে উঠেছিল। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশি সংখ্যা নেহায়েতই কম নয়। ফলে গ্যালারিতে বাংলাদেশি দর্শক ছিল অনেক। যুবাদের শিরোপা জয় নিশ্চত হওয়ার পর গ্যালারি থেকেও তাই গর্জন ভেসে এলো।
টুর্নামেন্টে অপরাজিত থেকে শিরোপা জিতল বাংলাদেশ। শ্রীলংকাকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সেমিতে ভারতকে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছিল। যে ভারত টুর্নামেন্টের ৯ আসরে ৮ বারই শিরোপা জিতেছে। ২০১৯ সালে প্রথমবার ফাইনালে উঠে ভারতের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। এবার সেমিতে তার একটা প্রতিশোধও হয়ে গেল! আর আজ ফাইনালে প্রতিপক্ষ সংযুক্ত আরব আমিরাতকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলাই করল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনাল উঠলেও বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি স্বাগতিক সংযুক্ত আরব আমিরাত। আশিকুর রহমান শিবলির দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরিতে ২৮২ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে আগে ব্যাটিং করা বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯। পরে বোলিংয়ে শুরু থেকেই প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়েছে বাংলাদেশ। ৮৭ রানেই গুটিয়ে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত অনূর্ধ্ব-১৯ দল। যাতে ১৯৫ রানের বিশাল জয়ে শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে বাংলাদেশী যুবাদের।
রোববার (১৭ ডিসেম্বর) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৮২ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিং করতে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে কখনো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়নি বাংলাদেশ। টুর্নামেন্ট জুড়েই দুর্দান্ত বোলিং করতে থাকা মারুফ মৃধা শুরুতেই আমিরাতের দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
স্বাগতিকরা সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি বাকি সময়েও। বাংলাদেশের পেস ও স্পিন সমন্বিত আক্রমণ রীতিমতো নাভিশ্বাস তুলে ছেড়েছে আমিরাতের। চার নম্বরে নেমে ৪০ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকা ধ্রুব পারাশারই সংযুক্ত আরব আমিরাতের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোরার। ১১ রান করা অক্ষত রায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
২৪.৫ ওভারে ৮৭ রানে গুটিয়ে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। বাংলাদেশের হয়ে মারুফ মৃধা ২৯ রানে ও রোহানাত দৌল্লা বর্সন ২৬ রানে তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন ইকবাল হোসেন ইমন ও শেখ পাভেজ জীবন।
এর আগে বাংলাদেশের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন আশিকুর রহমান শিবলি, মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আরিফুল ইসলাম। দলীয় ১৪ রানে ওপেনার জিসান আলমকে হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ১২৫ রান তোলেন শিবলি ও রিজওয়ান। ৭১ বলে ৪টি চার ১টি ছয়ে ৬০ রান করে রিজওয়ান ফিরলে এই জুটি ভাঙে।
আরিফুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে আরও একটা বড় জুটি গড়েন শিবলি। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটি ছিল ৮৬ রানের। সেখানেই মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যায় বড় সংগ্রহ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। ৪০ বলে ৬টি চারের সাহায্যে ঠিক ৫০ রান করে ফিরেছেন আরিফুল।
শ্রীলংকার বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করা শিবলি আজ করেছেন ১২৯ রান। ১৪৯ বলে এই রান করতে ১২টি চার ১টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তরুণ ওপেনার। শেষ দিকে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি ১১ বলে ২১ রানের ঝড়ো একটা ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে আরও এগিয়ে নিয়েছেন।
৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে শেষ পর্যন্ত ২৮২ রানে থামে বাংলাদেশ। সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে ৫২ রানে চার উইকেট নিয়েছেন আয়মান আহমেদ।
সারাবাংলা/এসএইচএস