জর্ডানের স্বপ্ন ভেঙে এশিয়ান কাপ জিতল কাতার
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০০:৪৩ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ০৯:০৭
জর্ডানের রূপকথা নাকি কাতারের শিরোপা ধরে রাখা? এশিয়ান কাপের ফাইনালের লড়াইটা জমজমাট হওয়ারই কথা ছিল। তবে ফাইনালে আফিফের পেনাল্টির হ্যাটট্রিকে জর্ডানকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে এশিয়ান ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের মুকুটও ধরে রাখল কাতার।
আগেরবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল কাতার। এবার আয়োজক হিসেবে ২০২৩ এএফসি এশিয়ান কাপের শিরোপা জিতল তারা। দলটির ট্রফি ধরে রাখায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেন ফরোয়ার্ড আকরাম আফিফ। তিনটি সফল পেনাল্টিতে হ্যাটট্রিক পূরণের মাধ্যমে তিনি ঠাঁই নিলেন ইতিহাসে। দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে শনিবার ৩-১ গোলে জিতেছে কাতার।
আফিফ স্পট কিক থেকে স্বাগতিকদের এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে জর্ডানকে সমতায় ফেরান ইয়াজান আল নিয়ামাত। পরে আফিফের আরও দুই পেনাল্টি গোলে সাফল্যের গল্পে নতুন পাতা যোগ করে কাতার। পঞ্চম দল হিসেবে এশিয়ান কাপে একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হলো কাতার। এর আগে এই কৃতিত্ব আছে কেবল জাপান, সৌদি আরব, ইরান ও দক্ষিণ কোরিয়ার।
এশিয়ান কাপের ফাইনালে প্রথম ফুটবলার হিসেবে হ্যাটট্রিক করে রেকর্ড গড়েছেন আফিফ। শুধু তাই নয়। এবারের আসরের সেরা খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার দুটিও জিতে নিয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে তিনি করেছেন ৮ গোল।
বক্সের মধ্যে আব্দাল্লাহ নাসিবকে পেছনে ফেলতে গিয়ে ফাউল হন আফিফ। সঙ্গে সঙ্গে রেফারি পেনাল্টির নির্দেশ দেন। টাচলাইন থেকে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান জর্ডান কোচ হুসেইন আমৌতা। কাতার অধিনায়ক পেনাল্টি নেওয়ার দায়িত্ব দেন আফিফকে। আশাহত করেননি তিনি। নিচু কোনাকুনি শটে জাল কাঁপান ২২তম মিনিটে।
৩২তম মিনিটে আফিফের কর্নারে লুকাস মেন্দেসের হেড গ্লাভসের ছোঁয়ায় ক্রসবারের উপর দিয়ে বের করে দেন ইয়াজিদ। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সমতায় ফেরার ভালো সুযোগটি নষ্ট হয় জর্ডানের। আলি ওয়ানের আড়াআড়ি ক্রসে মৌসা তামারির প্লেসিং শট মোহাম্মদ ওয়াদের গায়ে লেগে ব্লকড হয়।
গোল শোধে দ্বিতীয়ার্ধে মরিয়া আক্রমণ শাণাতে থাকে জর্ডান। তবে বারশাম ছিলেন বিশ্বস্ত দেয়াল হয়ে। ৫৮তম মিনিটে কাছের পোস্টে নেওয়া এহসান হাদ্দাদের শট আটকানোর পরের মিনিটে ইয়াজান আল আরাবের অনেকটা লাফিয়ে নেওয়া বুলেট গতির সাইড ভলিও ফেরান এই গোলরক্ষক। পরের মিনিটেই আলির ফ্লিক পোস্ট ঘেঁষে বাইরের জাল কাঁপায়।
অবশেষে ম্যাচের ৬৭তম মিনিটে এসে সমতায় ফেরে জর্ডান। ডান দিক থেকে হাদ্দাদের বাড়ানো ক্রস প্রথম ছোঁয়ায় দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জোরালো শটে লক্ষ্যভেদ করেন আল নিয়ামাত। বারশামের কিছুই করার ছিল না। তবে জর্ডানকে খুব বেশি সময় স্বস্তিতে থাকতে দেয়নি কাতার। গোল হজমের মাত্র ছয় মিনিট পরেই আবার লিড নেয় স্বাগতিকরা। বক্সে মোহাম্মাদ ইসমাইলকে মাহমুদ আল মুরাদি ফাউল করলে ভিএআর দেখে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। ফের লক্ষ্যভেদ করেন আফিফ।
১৩ মিনিটের যোগ করা সময়ের শুরুতেই আফিফ আক্রমণে ওঠেন। বলে প্রথম স্পর্শ জোরে হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারান এই ফরোয়ার্ড। এক পর্যায়ে তার সাথে সংঘর্ষ হয় ছুটে আসা গোলরক্ষকের সাথে। অফসাইডের পতাকাও ওঠে।
কিন্তু কাতার ভিএআর চেকের আবেদন জানাতে থাকে। ভিএআর দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। ৯৫ মিনিটে জর্ডানের কফিনে শেষ আঘাত করেন আকিফ। তিন পেনাল্টি থেকে নিজের হ্যাটট্রিক পূরণ করেন কাতারের এই ফরোয়ার্ড।
সারাবাংলা/এসএস