ভিনিসিয়াসের বিপক্ষে রোমাঞ্চকর প্রতিদ্বন্দ্বিতার অপেক্ষায় কিমিখ
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৪৮
ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়াসকে হিসাবের বাইরে রেখে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের তালিকা করা সম্ভব নয়। বর্তমান সময়ে দারুণ ফর্মে রয়েছেন এই ব্রাজিলিয়ান। এবার ইউরোপিয়ান ক্লাসিকোতে বায়ার্ন মিউনিখ ও রিয়াল মাদ্রিদের মধ্যকার ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন তিনি। তাই তো উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের প্রথম লেগের আগে বায়ার্ন মিউনিখের জার্মান ফুটবলার জশুয়া কিমিখ রোমাঞ্চ নিয়ে ভিনিসিয়াসের প্রতিদ্বন্দ্বীতার অপেক্ষায় আছেন।
শেষবার প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে রিয়ালের বিপক্ষে বায়ার্নের সবশেষ দেখা হয়েছিল ২০১৭-১৮ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালেই। সেবার দুই লেগেই কিমিখের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল জার্মান দলটি। কিন্তু দুবারই ঘুরে দাঁড়িয়ে, বায়ার্নকে বিদায় করে ফাইনালে উঠেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তবে এরপর বদলেছে দুইদলেরই চিত্র। ভিনিসিয়াস জুনিয়র নাম লিখিয়েছেন রিয়ালে, আর ক্লাব ছেড়েছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, সার্জিও রামোস আর করিম বেনজেমারা।
বর্তমান ফুটবলারদের মধ্যে ভিনিসিয়াস জুনিয়রকে শীর্ষ দুইয়ে রাখছেন কিমিখ। বায়ার্ন-রিয়াল ম্যাচের পার্থক্য তাই গড়ে দিতে পারেন ভিনি। আর একারণেই ভিনিকে আটকানোর দায়িত্ব বর্তেছে তার কাঁধেই। দলের প্রয়োজনে মিডফিল্ড কিংবা রক্ষণ, দুই জায়গাতেই খেলতে হয় কিমিখকে। রিয়ালের বিপক্ষে হয়তো রাইটব্যাক হিসেবে খেলতে হবে তাকে। সেক্ষেত্রে তার জন্য বড় হুমকি হবেন ভিনিসিয়াস।
রাইট-ব্যাক হিসেবে গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোলোয় পিএসজির ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপেকে ভালোভাবেই আটকে রাখতে পেরেছিলেন কিমিখ। এই মৌসুমে কোয়ার্টার-ফাইনালে আর্সেনাল ফরোয়ার্ড গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লির বিপক্ষেও কাজটা ভালোভাবে করেছেন তিনি।
ইউরোপিয়ান সুপার ক্লাসিকোর আগে এক সাক্ষাৎকারে জার্মান ফুটবলার কিমিখ বললেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত বা সৌভাগ্যবশত, রাইট অথবা লেফটব্যাক হিসেবে খেললে প্রতিপক্ষের সেরা খেলোয়াড়ের মুখোমুখি হতে হবে। সামনে থাকবে এমবাপে বা ভিনিসিয়াসের মতো খেলোয়াড়। এই মুহূর্তে ইউরোপীয় ফুটবলের সেরা দুই খেলোয়াড় তারা। আমি জানি, ওয়ান-অন-ওয়ানে ভিনিসিয়াস খুবই শক্তিশালী, অনেকটা কিলিয়ান এমবাপের মতো। তাই তার মুখোমুখি হতে এবং তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি।’
কিমিখ আরও বলেন, ‘আমাদের সবার কিছু দুর্বলতা এবং কিছু শক্তির জায়গা আছে। আমি তার দুর্বলতা নিয়ে কথা বলতে চাই না। ভিনিসিউস খুবই শক্তিশালী একজন খেলোয়াড়। আমাকে মনোযোগ ধরে রাখতে হবে, রক্ষণ সামলাতে হবে এবং আক্রমণে ওঠার সুযোগ আসলে, অবশ্যই আমি তা করতে চাই। তবে শুরুতে আমাদের রক্ষণভাগে মনোযোগ দিতে হবে এবং আমাদের খেলায় মনোযোগী হতে হবে।’
শেষবার রিয়ালের মুখোমুখি হওয়ার ম্যাচে শেষ হাসি হেসেছিল রিয়ালই। তবে এবার সবকিছু বদলেছে আর তাই তো কিমিখ পুরনো স্মৃতিভুলে নতুন শুরুর দিকে তাকিয়ে। ‘আমি মনে করি না এটা আগের ম্যাচের পুনরাবৃত্তি, কারণ দুই দলই এখন পুরোপুরি ভিন্ন। কিছু খেলোয়াড় আছে যারা ২০১৮ সালে খেলেছিল, তবে এটি ছয় বছর আগের। দল বদলেছে। এখন পুরোপুরি ভিন্ন দুটি দল।’
‘রিয়াল মাদ্রিদকে যখনই চ্যাম্পিয়ন্স লিগে দেখবেন, তাদের দুর্দান্ত মানসিকতা এবং মান দেখতে পাবেন। তাদের শক্তিশালী দল আছে। অনেক প্রতিভা, অভিজ্ঞতাও অনেক। বিশেষ করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলোতে তা অনুভব করা যায়। আমরা লাইপজিগের বিপক্ষে (শেষ ষোলোয়) তাদের দুটি ম্যাচ দেখেছি, যেখানে মাঠে সামগ্রিকভাবে লাইপজিগ সম্ভবত সেরা দল ছিল, কিন্তু, শেষ পর্যন্ত।’—যোগ করেন কিমিখ
সেই সঙ্গে মনে করিয়ে দিলেন তার নিজের গোলেই দুইবার রিয়াল মাদ্রিদ পিছিয়ে পড়েও কিভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে শেষমেশ পৌঁছেছিল ফাইনালে। ‘কয়েক বছর আগে আমার গোলে দুই লেগেই তারা পিছিয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায়। এসব ম্যাচ সবসময় শেষ দিকে বদলে যায়। এটিই তাদের মান, তাদের মানসিকতা। আমরা জানি, তাদের খুব শক্তিশালী দল আছে। তবে আমরাও পরিণত এক দল।’
আগামী মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় রাত একটায় ঘরের মাঠ অ্যালিয়েঞ্জ অ্যারেনায় রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে লড়াইয়ে নামবে বায়ার্ন মিউনিখ।
সারাবাংলা/এসএস
উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জশুয়া কিমিখ বায়ার্ন মিউনিখ বনাম রিয়াল মাদ্রিদ ভিনিসিয়াস জুনিয়র সেমিফাইনাল