প্রিমিয়ার লিগের বিপক্ষে আইনি লড়াইয়ে নামছে ম্যানচেস্টার সিটি
৫ জুন ২০২৪ ২১:০৫
আগামী কয়েক সপ্তাহের ভেতরে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের বিপক্ষে আর্থিক নিয়ম নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নামছে ম্যানচেস্টার সিটি। ইউরোপিয়ান গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে এমনটাই। সদ্য চ্যাম্পিয়ন ম্যানসিটি লিগের অ্যাসোসিয়েটেড পার্টি ট্রানজেকশন (এপিটি) নিয়ম বাতিল করার চেষ্টা করবে, যা তারা অবৈধ বলে দাবি করছে এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করছে। প্রিমিয়ার লিগের বিরুদ্ধে ম্যানসিটি বৈষম্যের অভিযোগ এনে আবুধাবি ইউনাইটেড গ্রুপের মালিকানাধীন ক্লাবটি দায়ের করছে ক্ষতিপূরণ মামলা।
সৌদি মালিকানাধীন একটি গ্রুপ নিউক্যাসল ইউনাইটেড কেনার পর ২০২১ সালে এপিটি প্রবর্তিত হয়। ক্লাব মালিকদের সঙ্গে যুক্ত কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বিজ্ঞাপন চুক্তি স্বাক্ষরকারী ক্লাবগুলোকে আরও নিয়ন্ত্রণের প্রয়াসে গত ফেব্রুয়ারিতে এটিপির নিয়ম আরও কঠোর করা হয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে আয়োজিত এক সভায় ইপিএলের ২০টি ক্লাবকে জানানো হয়েছিল এই আইন সম্পর্কে, একটি ক্লাব এপিটি’র বিপক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
ম্যানসিটির যুক্তি, স্পন্সরদের ন্যায্য বাজার মূল্যের প্রস্তাব স্বাধীনভাবে যাচাইয়ের পরিবর্তে তারা কতটা দিতে চান, তা সিদ্ধান্ত নেয়ার স্বাধীনতা থাকা ক্লাবের উচিৎ। ইতিহাদ এয়ারওয়েজের সাথে চুক্তিবদ্ধ সিটি বিশ্বাস করে যে, প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম টুর্নামেন্টের আইন লঙ্ঘন করে।
টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬৫ পৃষ্ঠার আইনি নথিতে ম্যানচেস্টার সিটি যুক্তি দিয়েছে যে তারা ‘বৈষম্যের’ শিকার এবং মাঠে তার সাফল্যকে দমন করার লক্ষ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠের অত্যাচার। প্রিমিয়ার লিগের নিয়ম পরিবর্তন এবং বড় সম্প্রচার ও বাণিজ্যিক প্রস্তাবের জন্য যারা ভোট দেয় তাদের কমপক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ বা ২০ টি ক্লাবের মধ্যে ১৪ টির অনুমোদন প্রয়োজন।
বিবিসির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী আগামী ১০-২১ জুন সিটির দাবির প্রেক্ষিতে একটি শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবগুলো তাদের নির্দিষ্ট মালিকানা পক্ষের প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেন (এপিটি) নিয়মাবলির বৈধতা পরীক্ষা করবে। এই নিয়মাবলি স্পনসরশিপ চুক্তিগুলোর আর্থিক সমতা মূল্যায়ন করতে তৈরি করা হয়েছিল।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তদন্তের পর সিটির বিরুদ্ধে ১১৫টি অভিযোগ আনা হয়। ক্লাবের পক্ষ থেকে এরপর জানানো হয়, প্রিমিয়ার লিগ আর্থিক নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগের বিরুদ্ধে তারা আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য প্রস্তুত। অভিযোগগুলো প্রকাশ্যে আসার পর থেকে ম্যানসিটি নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আসছে। ক্লাবটি বলেছে, অকাট্য প্রমাণ দিয়েই সব সামলানো হবে।
আগামী নভেম্বরে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হবে। দোষী প্রমাণিত হলে সিটি জরিমানা, পয়েন্ট কাটা কিংবা ইপিএল থেকে বহিষ্কারের মতো শাস্তির মুখোমুখি হতে পারে।
অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার সিটি যদি তার আইনি লড়াইয়ে সফল হয়, তবে এটি ধনী ক্লাবগুলিকে কোনো মূল্যায়ন ছাড়াই তার স্পনসরশিপ চুক্তির মূল্য দিতে সক্ষম করতে পারে। ম্যানচেস্টার সিটির মতে, ২০২১ সালে সৌদি আরবের নিউক্যাসল অধিগ্রহণের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবগুলোর প্ররোচনায় এই নিয়ম আরোপ করা হয়, যার লক্ষ্য ছিল ‘নিজেদের বাণিজ্যিক সুবিধা রক্ষা’। এছাড়া প্রতিপক্ষ দলগুলোর বিরুদ্ধে ‘গালফ মালিকানার প্রতি বৈষম্যমূলক’ আচরণের অভিযোগ এনেছে ম্যানচেস্টার সিটি।
সারাবাংলা/এসএস