ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিতে এক পা দক্ষিণ আফ্রিকার
২২ জুন ২০২৪ ০০:২২
সেন্ট লুসিয়ায় চরম উত্তেজনা ছড়ানো ম্যাচে শেষ পর্যন্ত বাজিমাৎ করল দক্ষিণ আফ্রিকা। চাপের মুখে বারবার ভেঙে পড়া দক্ষিণ আফ্রিকা এবার চাপকে শক্তিতে পরিণত করেছে। আর শেষ পর্যন্ত বিজয়ের আনন্দ নিয়ে মাঠ ছাড়ছে তারা। বাংলাদেশ ও নেপালের বিপক্ষে গ্রুপে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেয়েছিল এইডেন মারকরামের দল। আর এবার শক্তিশালী ইংলিশদের বিপক্ষে সুপার এইটের ম্যাচে রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে প্রোটিয়ারা। আর তাতেই সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রাখলো তারা।
সেন্ট লুসিয়ায় টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিল ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে হ্যারি ব্রুকের দুর্দান্ত ইনিংসের পরেও শেষ পর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৫৬ রানে থামে ইংল্যান্ড। এতেই দক্ষিণ আফ্রিকা পেয়ে যায় ৭ রানের দুর্দান্ত জয়।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে রেজা হেনড্রিকসকে নিয়ে ঝড় তোলেন কুইন্টন ডি কক। হেনড্রিকসকে একপ্রান্তে রেখে উইকেটরক্ষক ব্যাটার রানের গতি বাড়ান। দশম ওভার শেষ হওয়ার এক বল আগে এই জুটি ৮৬ রান করে ভেঙে যায়। হেনড্রিকস ২৫ বলে ১৯ রান করে মঈন আলীর শিকার হন। এরপর দ্রুত আরও তিন উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। হেনড্রিকসের পর ডি কক ৩৮ বলে চারটি করে চার ও ছয়ে ৬৫ রান করে থামেন। আইনরিখ ক্লাসেন (৮) ও এইডেন মারকরাম (১) বিদায় নেন দ্রুত।
১১৩ রানে চার উইকেট হারানোর পর ডেভিড মিলার হাল ধরেন। ট্রিস্টান স্টাবসকে নিয়ে ৪২ রানের জুটি গড়েন তিনি। ২৮ বলে ৪৩ রানে থামেন মিলার। তার পরে মার্কো ইয়ানসেনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেন জোফরা আর্চার। দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৬ উইকেটে ১৬৩ রানে আটকে দেয় ইংল্যান্ড। আর্চার তিন উইকেট নিয়ে তাদের সেরা বোলার।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও দ্বিতীয় ওভারে ফিল সল্টকে (১১) দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরান হেনড্রিকস। ১৫ রানে কাগিসো রাবাদা উদ্বোধনী জুটি ভেঙে দেন। পাওয়ার প্লে’তে ১ উইকেটে ৪১ রান করে ইংল্যান্ড। জস বাটলার ৯ রানে ক্লাসেনের হাতে জীবন না পেলে এই সময়ে দুই উইকেট হারাতো তারা। সপ্তম ওভারে জনি বেয়ারস্টোকে (১৬) ফিরিয়ে বড় ধাক্কা দেন কেশব মহারাজ। প্রোটিয়া স্পিনার পরের ওভারে বাটলারকে (১৭) ক্লাসেনেরই ক্যাচ বানান। ১১তম ওভারে ইংল্যান্ডকে বিপদে ফেলে বিদায় নেন মঈন আলী।
এরপর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে উইকেট কামড়ে রেখে ধীরে ধীরে রান তুলছিলেন হ্যারি ব্রুক। ম্যচের মোড় ঘুরিয়ে দেন কাগিসো রাবাদার করা ইনিংসের ১৫তম ওভারটি। রাবাদার কাছ থেকে ১৮ রান আদায় করেন হ্যারি ব্রুক। ইংলিশ ব্যাটারের কাছে দুটি চার হজম করে পরের ওভারে আনরিখ নর্কিয়ে দেন ১৩ রান। এতেই ম্যাচের লাগাম এসে যায় ইংলিশদের হাতে।
১৭তম ওভারে ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন লিভিংস্টোন। ওটনিল বার্টম্যানের ওই ওভারে দুটি চার ও একটি ছয় মারেন তিনি। ব্রুকও একটি চার হাঁকান। ওই ওভারে আসে ২১ রান। শেষ দিন ওভারে তখন ইংলিশদের দরকার আর মাত্র ২৫ রানের। তবে ১৮তম ওভারে এসেই প্রোটিয়ারা আবার ম্যাচের লাগাম টেনে ধরে। রাবাদার বলে বড় শট খেলতে গিয়ে স্টাবসকে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন তিনি। ১৭ বলে তিন চার ও দুই ছয়ে ৩৩ রান করেন তিনি।
তাতেই শেষ দুই ওভারে লাগে ২১ রান। ইয়ানসেন ১৯তম ওভারে দিলেন সাত রান, ওই ওভারে ফিফটি করেন ব্রুক। শেষ ওভারে লাগে ১৪ রান। ব্রুকের দুর্দান্ত ইনিংস থেমে যায় শেষ ওভারের প্রথম বলে। পেছনে দৌড়ে মারকরাম দুর্দান্ত ক্যাচে তাকে প্যাভিলিয়নে ফেরান। ৩৭ বলে ৭ চারে ৫৩ রান করেন ব্রুক। এরপর আর্চার সিঙ্গেল নেন দ্বিতীয় বলে। পরের বলে চার মেরে প্রোটিয়াদের ওপর চাপ বাড়ান স্যাম কারান। চতুর্থ বল ডট দেন নর্কিয়ে। দুই বলে প্রয়োজন বেড়ে দাঁড়ায় ৯ রানে। কারান পারেননি। ৬ উইকেটে ১৫৬ রানে ইংল্যান্ডকে থামিয়ে জয় পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এই জয়ে গ্রুপ ২-এ দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে দক্ষিণ আফ্রিকা। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে ২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইংল্যান্ড। প্রোটিয়ারা এই পর্বে তাদের শেষ ম্যাচ খেলবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে।
সারাবাংলা/এসএস
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৪ দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম ইংল্যান্ড সুপার এইট সেমিফাইনাল