ভারতের কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায়ের দ্বারপ্রান্তে বাংলাদেশ
২২ জুন ২০২৪ ২৩:৫২
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখতে ভারতের বিপক্ষে জয়ের বিকল্প ছিল না বাংলাদেশের। সেই লক্ষ্যে শুরুটা বেশ ভালোই করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ দিকে মারমুখি ব্যাটিংয়ে ভারত পাহাড়সম রানের পুঁজি দাঁড় করায়। জবাবে বাংলাদেশের ব্যাটাররা নিয়মিত বিরতিতে উইকেট বিলিয়ে দিতে থাকেন। আর শেষ পর্যন্ত ৫০ রানের ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। আর তাতেই বিশ্বকাপের সুপার এইট থেকেই ছিটকে যাওয়ার প্রায় নিশ্চিত বাংলাদেশের।
শনিবার (২২ জুন) অ্যান্টিগাতে ভারতের বিপক্ষে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন অধিনায়ক শান্ত। তবে ব্যাটারদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের বিপক্ষে বড় স্কোর দাঁড় করিয়েছে ভারত। কোহলির দারুণ শুরুর পর পান্ডিয়ার দুর্দান্ত ফিফটিতে ১৯৬ রানের বিশাল স্কোর গড়েছে ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক শান্ত ছাড়া জ্বলে উঠতে পারেনি কেউই। এতেই ধুঁকতে থাকে বাংলাদেশ। আর শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৪৬ রানে তুলতে পারে বাংলাদেশ।
এই জয়ে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল প্রায় নিশ্চিত ভারতের। আর বাংলাদেশ ছিটকে গেল সুপার এইট থেকেই।
টস জিতে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশের বোলিংয়ের শুরুটা ছিল দারুণ। বিরাট কোহলি আর রোহিত শর্মাকে মোকাবিলা করতে ইনিংসের শুরুতেই বল তুলে দেওয়া হয় শেখ মেহেদির হাতে। এরপর নতুন বলে আরেকপ্রান্তে সাকিব আল হাসানের শুরুটা ছিল আরও খরুচে। তবে দুই ওভারে দুটি ছক্কা ও দুটি চার হজমের পর প্রথম উইকেট পান বাংলাদেশের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারই। জায়গা বানিয়ে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় রোহিত বিদায় নেন ১১ বলে ২৩ রান করে।
তৃতীয় উইকেটে রিশভ পান্ত আর বিরাট কোহলি মিলে রানের ফুলঝুরি ছোটাতে থাকেন। নবম ওভারে জোড়া উইকেট নিয়ে একটু রাশ টেনে ধরেন তানজিম হাসান। প্রথমটি বলা যায় উপহার। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে বোল্ড হন কোহলি। আগের চার ইনিংস মিলিয়ে ২৯ রান করা ব্যাটার ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত দিলেন ৩ ছক্কায় ২৮ বলে ৩৭ রানে ইনিংসে। এরপর সূর্যকুমার যাদব নেমে প্রথম বলেই বাউন্সারে হুক করে উড়িয়ে দেন ছক্কায়। পরের বলেই বাড়তি লাফানো দারুণ ডেলিভারিতে তাকে ফিরিয়ে শোধ তোলেন তানজিম।
দ্রুত দুই উইকেট হারানো ভারত কিছুটা চাপে পড়ে কিন্তু এরপরেই রিশভ পান্ত চড়াও হন টাইগার বোলারদের ওপর। রিশাদকে টানা দুই বলে মারেন ছক্কা ও চার। এই লেগ স্পিনারকে রিভার্স সুইপ করে পান্তের ইনিংস থামে ২৪ বলে ৩৬ রানে। তবে তিনি ফিরলেও এরপর শিভম দুবে এবং হার্দিক পান্ডিয়া মিলে ধরেন হাল। পান্ডিয়ার অর্ধশতকে শেষ ৬ ওভারে ভারত তোলে ৭৬ রান। এতেই ৬ উইকেটে ১৯৬ রান তোলে ভারত।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দীর্ঘদিন ধরে ছন্দহীন লিটন কুমার দাস একটি ছক্কার পর আউট হয়ে যান ১০ বলে ১৩ করে। তানজিদের ব্যাট প্রায় থমকে যায় এরপর। শান্তর শুরুটাও হয় মন্থর। পঞ্চাশ ছুঁতেই বাংলাদেশের লেগে যায় ৮ ওভার। পান্ডিয়ার এক ওভারে দুটি ছক্কা মেরে শান্ত জেগে ওঠেন। কিন্তু এত বড় রান তাড়ায় তো স্রেফ এইটুকুই যথেষ্ট নয়। চতুর্থ ওভারের পর ১০ ওভার পর্যন্ত আর বাউন্ডারির দেখা পাননি তানজিদ। কুলদিপ যাদবের গুগলিতে আউট হন ৩১ বলে ২৯ রান করে। স্পিনের বিপক্ষে ঝড় তুলতে পারতেন যিনি, সেই তাওহিদ হৃদয়ও কাবু হয়ে যান কুলদিপের স্পিনে।
এরপর বলা যায় কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর চেষ্টায়। সেখানে কিছুটা সফল হন কেবল রিশাদ হোসেন। কুলদিপকে ছক্কা মারার পরের বলে আউট হয়ে যান সাকিব। তিনটি ছক্কা মারলেও ৩২ বলে শান্ত করতে পারেন ৪০ রান। রিশাদ তিন ছক্কায় ১০ বলে ২৪ করে কিছুটা বিনোদন উপহার দেন।
অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ শেষদিকে দৃষ্টিকটূ ব্যাটিংয়ে ১৫ বলে করেন ১৩ রান। গোটা ম্যাচে বাংলাদেশের পারফরম্যান্সের প্রতীকী হয়ে থাকে যেন এটা। সুপার এইটে বাংলাদেশের পরের ম্যাচ আফগানিস্তানের বিপক্ষে মঙ্গলবার সকালে। অতি নাটকীয় কিছু না হলে এবারের আসরে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ সেটিই।
সারাবাংলা/এসএস