Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাইশ গজের ‘নায়কের’ স্বর্গচ্যুতির গল্প


১ জুন ২০১৮ ১৮:৩০

। মুশফিক পিয়াল, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ।

ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটকে যে কজন কলুষিত করার পাপে পাপী, তিনি তাদের অন্যতম। অথচ তিনিই ছিলেন প্রোটিয়াসদের বাইশ গজের নায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকার ব্লুমফন্টেইন শহরে ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জন্ম নিয়েছিলেন আধুনিক ক্রিকেটের এই নায়ক, যিনি তার নিজের দোষেই পরিণত হয়েছিলেন খলনায়কে। পৃথিবীর মায়া কাটিয়েছেন ১৬ বছর আগে, কিন্তু বিশ্ব ক্রিকেটের আলোচনা-সমালোচনা আর গল্পগাঁথা পিছু ছাড়েনি দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার হ্যান্সি ক্রোনিয়ের। মাত্র ৩২ বছর বয়সে ২০০২ সালের এই দিনে এক মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান ক্রোনিয়ে।

বিজ্ঞাপন

মারা যাবার বছর দুয়েক আগে ২০০০ সালের ভারত সফরে আলোড়ন তোলা এক স্পট ফিক্সিংয়ের ঘটনায় সম্ভাবনাময় ক্যারিয়ার প্রায় ধ্বংস হয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ঐ সময়ের অধিনায়ক ক্রোনিয়ে। জানাজানি হওয়ার পরপরই নিজের অপরাধ স্বীকার করে নেন তিনি। শাস্তি হিসেবে সব ধরণের ক্রিকেট থেকে ক্রোনিয়েকে আজীবন নিষিদ্ধ করে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা (সিএসএ)।

২০০০ সালের ৭ এপ্রিল ফাঁস হয়ে যায় ক্রোনিয়ে ও সঞ্জয় চাওলা নামের এক ভারতীয় বাজিকরের কথোপকথন। দিল্লি পুলিশ আড়ি পেতেছিল প্রোটিয়া অধিনায়ক ক্রোনিয়ের ফোনে। তদন্তে বেরিয়ে আসে নানা তথ্য। জানা যায় ১৯৯৭ থেকে ২০০০ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ম্যাচে টাকার বিনিময়ে ম্যাচ ছেড়ে দিয়েছেন ক্রোনিয়ে। আরও অভিযোগ ওঠে, টাকার বিনিময়ে ম্যাচ ছেড়ে দিতে সতীর্থ হার্শেল গিবস, ল্যান্স ক্লুজনার, মার্ক বাউচার, জ্যাক ক্যালিস, গ্যারি কারস্টেন, নিকি বোয়েদের অনুরোধ করেছিলেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ভারত সফরের বেশ কয়েকটি ম্যাচ ইচ্ছে করে হেরেছিল বলেও তদন্তে পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর স্বাভাবিকভাবেই গোটা ক্রিকেট বিশ্ব স্তম্ভিত হয়ে যায়।  এ যে নায়কের খলনায়ক হবার মতোই ঘটনা। অথচ ক্রোনিয়ের নেতৃত্বে ভারত সফরে ২-০ তে সিরিজ জিতেছিল প্রোটিয়ারা। প্রথম টেস্ট ম্যাচে কোনো রান না করেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছিলেন ক্রোনিয়ে, দ্বিতীয় ইনিংসে পরিস্কার রানআউট হওয়ার আগে কোনো চেষ্টাই করেননি ক্রিজে ঢুকতে। সেই সিরিজেই হেনরি উইলিয়ামসকে দিয়ে এক ওভারে ছয়টি ওয়াইড বল করিয়ে নিয়েছিলেন ক্রোনিয়ে। ফিক্সিং কাণ্ডে গিবস-উইলিয়ামস-ক্রোনিয়ে ছাড়াও নাম এসেছিল ভারতের মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন, অজয় জাদেজা, মনোজ প্রভাকরদের মতো ক্রিকেটারদের। ক্রোনিয়ের বিরুদ্ধে পরে স্বাক্ষী দিয়েছিলেন জ্যাক ক্যালিস, বাউচার, শচীন টেন্ডুলকাররা।

দুই হাজার সালের ৩১ মার্চ শারজায় কোকাকোলা কাপের ফাইনালে তিনি তার শেষ একদিনের ম্যাচে ৭৩ বলে করেন ৭৯ রান, পাকিস্তানের বিপক্ষে। তার আগে ২ মার্চ বেঙ্গালুরুতে ভারতের বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে করেছিলেন ১২ রান। অনেকের চোখেই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বকালের সেরা অধিনায়ক ক্রোনিয়ে। যাকে ক্রিকেট হয়তো অন্যভাবেও মনে রাখতে পারতো। কিংস কমিশনে ক্রোনিয়ে পরে স্বীকার করেছেন, ১৯৯৬ সাল থেকেই জুয়াড়িদের থেকে নিয়মিত টাকা নিতেন তিনি। কিংস কমিশনের কাছে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে কেঁদেছেন অঝোরে।

বাবা-মায়ের তিন সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন ক্রোনিয়ে, বাবা ইউয়ি ক্রোনিয়ে ছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটার। বাবার হাত ধরেই স্কুল ক্রিকেটে নাম লেখান ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া ক্রোনিয়ে জুনিয়র। এক সময় স্কুল দলটির অধিনায়কের দায়িত্ব পান। দলকে সামনে থেকে সফলভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার অসাধারণ গুণ ছিল তার। সে কারণেই হয়তো শহরের রাগবি দলের অধিনায়কত্ব তার কাঁধেই তুলে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৮৭-৮৮ মৌসুমে মাত্র ১৮ বছর বয়সে অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে ক্রোনিয়ের। পরের মৌসুমে শুরু হয় লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ার।

১৯৯০-৯১ মৌসুমে মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব পান। সে বছরই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম শতক হাঁকান ক্রোনিয়ে। ৫০ ওভারের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেও সে বছর সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। ১৯৯২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় দলের হয়ে ওয়ানডেতে অভিষেক হয় তার। সেটিও আবার সরাসরি বিশ্বকাপের ম্যাচে, সিডনিতে। অভিষেক ওয়ানডেতে ব্যাট হাতে তার নামা হয়নি, বল হাতে ৫ ওভারে দিয়েছিলেন মাত্র ১৭ রান। অভিষেক ম্যাচে নিজ দলের ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানের জয় দেখেছিলেন। সেই ম্যাচে ক্রোনিয়ের সঙ্গে অভিষেক হয়েছিল জন্টি রোডস আর মেয়েরিখ প্রিঙ্গলের। বিশ্বকাপে দলের ৯ ম্যাচের আটটিতেই ছিলেন একাদশে।

একই বছরের ১৮ এপ্রিল টেস্টে নিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নামেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। সাদা পোশাকের অভিষেক ম্যাচে ক্রোনিয়ে প্রথম ইনিংসে ৫ আর দ্বিতীয় ইনিংসে করেন ২ রান। ক্রোনিয়ের অভিষেক ম্যাচে দলের অধিনায়ক কেপলার ওয়েলস বাদে বাকি ১০ জনেরই অভিষেক ঘটে। শুধু তাই নয়, একই ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আরও তিন ক্রিকেটারের অভিষেক ঘটে। বিশ্বকাপের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ব্রিজটাউনের সেই টেস্ট অভিষেক যেটি ছিলো নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তন। জিততে জিততেও প্রত্যাবর্তনের সেই ম্যাচে প্রোটিয়ারা হেরেছিল ৫২ রানের ব্যবধানে।

১৯৯২ সালে ভারত সফরে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং (৫/৩২) করেন ক্রোনিয়ে। যেটি দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কোনো বোলারের রঙ্গিন পোশাকে প্রথম ৫ উইকেট। ১৯৯৩ সালে সহ-অধিনায়ক নির্বাচিত হন ক্রোনিয়ে, দলের সর্বকনিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও। নিউজিল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার সাথে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিয়মিত অধিনায়ক কেপলার ওয়েলসের অসুস্থতা ক্রোনিয়ের কাঁধে এনে দেয় অধিনায়কের দায়িত্ব। ১৯৯৯-২০০০ সালের ইংল্যান্ড সিরিজে পুরো ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দেন ক্রোনিয়ে। বৃষ্টির কারণে এক ইনিংস করে ব্যাট করার অনুরোধ জানান প্রতিপক্ষ অধিনায়ক নাসের হুসেনকে। আগের রাতের দুই অধিনায়কের চুক্তিমতো ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু পরে বোঝা যায় এই অভিনব সিদ্ধান্তের আসল কারণ। ইংল্যান্ড জিতে নিয়েছিল টেস্টটি, তবে দর্শক আর ক্রিকেটপ্রেমীদের চমকে দিয়ে তাদের হৃদয়ে আসন পাকাপোক্ত করে নিয়েছিলেন ক্রোনিয়ে, সবাই প্রশংসায় ভাসিয়েছিলেন তার এই সাহসিকতাকে। তবে, গোমর ফাঁস হয় এক সময়। ক্রোনিয়ের প্রস্তাবটা ছিল বাজীকরদের সাজানো নাটক। সেই নাটকের প্রধান কুশীলব হিসেবে পাঁচ হাজার ডলার আর একটা চামড়ার জ্যাকেট উপহার পেয়েছিলেন ক্রোনিয়ে! ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই অভিনব সিদ্ধান্তটিও নেয়া হয়েছিল ম্যাচটি ইচ্ছে করে হেরে যাবার জন্য। প্রোটিয়া খেলোয়াড়দেরও নাম উঠে আসে সেই ফিক্সিং তদন্তে।

ক্রোনিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার রঙ্গিন জার্সিতে খেলেছিলেন ৬৮ ম্যাচ আর সাদা পোশাকে খেলেছিলেন ১৮৮ ম্যাচ। ওয়ানডেতে ৬টি সেঞ্চুরি, ২৩টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৩৬.৪১ গড়ে করেছিলেন ৩৭১৪ রান, বল হাতে নিয়েছিলেন ৪৩ উইকেট। আর টেস্টে দুটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি ৩৯টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ৩৮.৬৪ গড়ে করেছিলেন ৫৫৬৫ রান, বল হাতে নিয়েছিলেন ১১৪ উইকেট। প্রথম শ্রেণির ১৮৪ ম্যাচে ৩২টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি করেছিলেন ৫৭টি হাফ-সেঞ্চুরি। আর লিস্ট ‘এ’ তে ৩০৪ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৯টি সেঞ্চুরি আর ৬৯টি হাফ-সেঞ্চুরি। তার অধীনে ৫৩ টেস্ট খেলে ২৭টিতে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া ছাড়া সিরিজ জিতেছে সে সময়কার অন্য সব দলের বিপক্ষে। দক্ষিণ আফ্রিকার ২৬তম টেস্ট এই ক্যাপ্টেনের অধীনে ১১টি ম্যাচ হারার পাশাপাশি ১৫টি ম্যাচ ড্র করে প্রোটিয়ারা।

প্রোটিয়া অবিসংবদিত লড়াকু এই নেতা ক্রিকেটের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবেন সেটা কেউ বিশ্বাস করেনি। ফিক্সিং কাণ্ডে ক্রোনিয়েকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হয়। ২০০১ সালে আজীবন বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য আপিল করেন তিনি। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। তার শাস্তির মেয়াদ আজীবনই রেখে দেয় ট্রাইবুনাল। ক্রোনিয়ের এমন বিদায় ছিল ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা ট্র্যাজেডি।

পাপের বোঝা মাথায় নিয়ে ২০০২ সালের ১ জুন জোহানেসবার্গ যাওয়ার পথে বিমান দুর্ঘটনায় মারা যান ক্রোনিয়ে। ক্রিকেট থেকে নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় ক্রোনিয়ে পেট চালাতে একটি বেসরকারী কোম্পানিতে কাজ নেন। বেল ইকুইপমেন্ট কোম্পানির অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ভালোবাসার মানুষদের হারিয়ে, ঘৃণা নিয়ে, ক্রিকেটকে আজীবনের জন্য হারিয়ে। সেদিন কোম্পানির মিটিং শেষ করতে দেরি হয়েছিল, স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ক্রোনিয়ে ছুটেন বিমানবন্দরে। নির্ধারিত বিমান ধরতে না পারায় পরিচিত অ্যাভিয়েশন কোম্পানির হকার সিডেলি এইচএস ৭৪৮ টারবোপরপ এয়ারক্রাফটে চেপে বসেন তিনি। মেঘের ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার আগে বিমানের সবকিছুই ঠিক ছিল। জর্জে বিমানবন্দরের কাছাকাছি জায়গায় কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে যোগযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ক্রোনিয়ের চেপে বসা ছোট বিমানটির। দুই পাইলট আর ক্রোনিয়ে ছাড়া আর কেউ ছিলেন না সেই বিমানে। দুই পাইলট আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যান কন্ট্রোল প্যানেলটাকে নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে আসার। পাইলটররা ঘন কুয়াশার কারণে বিমানবন্দর দেখতে পারছিলেন না, বিমানটি তারা আকাশেই উড়াতে থাকেন। বিমান দুর্ঘটনার তদন্তে বেরিয়ে আসে এক সময় বিমানের রেডিও, রিসিভার, হুইল কাজ করেনি, তার মাঝেই জ্বালানী ফুরিয়ে যায়। একটা সময় বিমানবন্দরের উত্তর দিকে আউটেনিকুয়া পর্বতের গায়ে ধাক্কা লেগে ক্রোনিয়ের বিমানটি ক্রাশ করে।

রানওয়ে থেকে উড্ডয়নের সময়ও সব ঠিকঠাক ছিল, অথচ হুট করেই যেন বিভীষিকা গ্রাস করে চারদিক থেকে। বিমানে থাকা তিন জনই ঘটনাস্থলে মারা যান। ক্রোনিয়ের মৃত্যু অবশ্য রহস্যেই ঘেরা থাকে। অনেকের ধারণা, ম্যাচ ফিক্সিং কেলেঙ্কারির ব্যাপারে ক্রোনিয়ের মুখ বন্ধ করতেই তাকে মেরে ফেলা হয়েছে। অথচ বাজীকরদের বিরুদ্ধে ক্রোনিয়ে মুখ খোলেননি সেভাবে, নিজের দোষটাই স্বীকার করে নিয়েছিলেন অকপটে। তবে তার মুখটা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাক- এমনটা চাওয়ার মানুষ কম ছিল না সে সময়ে। আরও জানা যায়, ক্রোনিয়ের চেপে বসা বিমানটি ছিল একটি ছোট মালবাহী (কার্গো) বিমান। দুর্ঘটনা নাকি খুন, এমন তর্কে জলঘোলা হলেও এখনও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি।

খেলার মাঠে শান্ত কিন্তু ক্ষুরধার মস্তিষ্ক, ঝুঁকি নেয়ার সাহসী মনোভাব, প্রতিপক্ষকে হেসে উড়িয়ে দেওয়া, বোলারদের ওপর চেপে বসা কিংবা বিন্দুমাত্র ছাড় না দেয়ার মানসিকতার কারণেই ক্রোনিয়েকে সর্বকালের সেরা অধিনায়কদের একজন বলা হয়। তার জীবনের চিত্রনাট্যটা যেকোনো সিনেমাকেও হার মানিয়ে দেবে। তার জীবনটা যেন উত্থান পতনে ভরপুর এক সিনেমার গল্প। বিমান দুর্ঘটনায় শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইতিহাসে নন্দিত, নিন্দিত আর বিতর্কিত একজন নায়ক এবং খলনায়কের অভিনীত সিনেমাটির। অর্থের বিনিময়ে ভালোবাসার ক্রিকেটকে বিক্রি করে দিয়ে যে পাপ করেছিলেন ক্রোনিয়ে, নিজের দেশকে হারিয়ে দিতেও যার বুক কাঁপেনি, সেই ক্রোনিয়েকে নিশর্তভাবেই মানুষ ভালোবেসে যাচ্ছে। তার মৃত্যুর দিন তার শহর ব্লুমফন্টেইনে লোকে গীর্জায় তার জন্যে প্রার্থনা করে। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন হ্যান্সি ক্রোনিয়ে।

 

সারাবাংলা/এমআরপি/ এসবি

স্পোর্টস স্পেশাল

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর