যে তরুণরা মাতালেন ইউরো ২০২৪’র আসর
১০ জুলাই ২০২৪ ১৫:৫৮
জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ইউরো-২০২৪ টুর্নামেন্টটিতে বেশ কয়েকজন তরুণ খেলোয়াড়ের ঝলক দেখা গিয়েছে। এদের বেশিরভাগই ক্লাব পর্যায়ে দারুন পারফরম্যান্স করে নিজ নিজ জাতীয় দলে জায়গা করে নিয়েছেন এবং প্রত্যাশা অনুযায়ী এদের বেশিরভাগই ভাল খেলা উপহার দিয়েছেন।
তবে এখানে বিস্ময় বালকদের বলতে তাদেরকে বোঝানো হয়েছে যাদের বয়স ২১ বছরের ভেতর। এরকম কয়েকজন খেলোয়াড় নিয়ে এখানে আলোচনা করা হল, যারা ইতিমধ্যে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের জাত চিনিয়েছেন।
লামিন ইয়ামাল (বয়স: ১৬ বছর), স্পেন: এবারের ইউরোতে সবচেয়ে বিস্ময়কর বালকের নাম হচ্ছে লামিন ইয়ামাল। ১৬ বছরের এই কিশোর স্পেন ও তার ক্লাব দল বার্সেলোনার হয়ে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার রেকর্ড গড়েছেন। এছাড়াও এই মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার সাথে সাথে গোলে সহায়তা করেছেন। শুধু তাই নয় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নক আউটে পর্বেও সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোলে সহায়তা করার রেকর্ড গড়েছেন।
ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি ম্যাচ খেলে ১৪টি গোল করার সুযোগ তৈরি করে দিয়ে ইতিমধ্যে তিনি ইউরোর মত বড় টুর্নামেন্টে জাভি হার্নান্দেজ এবং সেস ফেব্রিগাসের পর তৃতীয় সর্বোচ্চ সুযোগ তৈরিকারী খেলোয়াড়ের তালিকায় ঢুকে গিয়েছেন। বাম পায়ের এই খেলোয়াড় বলের উপর তার ব্যতিক্রমী দক্ষতা ও আঁটসাঁট জায়গা থেকে বল বের করে নেবার জন্য ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। চমৎকার ড্রিবলিং, পাসিং, বলকে পোস্টে বাঁকানোর ক্ষমতা এবং সুযোগ তৈরি করতে পারার জন্য তিনি রাইট উইঙ্গার হিসেবে খেলে থাকেন।
মরক্কোকে বাদ দিয়ে স্পেনকে বেছে নেয়াটা যে তিনি ভুল করেননি, তার প্রমাণ এই ইউরোতেই পাওয়া গিয়েছে কারণ গুরুত্বপূর্ণ সব ম্যাচেই তিনি প্রথম একাদশে থেকে শুরু করেছেন। ইউরোর পারফরমেন্সে বলে দেয়া যায় কেন তাকে বিশ্বের সেরা তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে ধরা হয়ে থাকে। ‘লা মাসিয়া’তে বেড়ে ওঠা এই কিশোর ইউরোতে সেমিফাইনালের আগে ৩টি গোলে সহায়তা করেন। ২৬ বার ড্রিবল করে প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে পাস দিয়েছিলেন ১৪টি। এছাড়া ৬টি ফ্রি-কিকের সাথে ৮টি কর্নার-কিক নিয়েছিলেন। তার পাসিং নির্ভুলতার হার ছিল ৮১ শতাংশ এবং প্রতিপক্ষের কাছ থেকে ১২ বার বল পুনরুদ্ধার করেছিলেন
জামাল মুসিয়ালা (বয়স: ২১ বছর), জার্মানি: বায়ার্ন মিউনিখের মুসিয়ালা নিঃসন্দেহে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেরা তারকা ছিলেন। স্বদেশে অনুষ্ঠিত টুর্নামেন্টটিতে জার্মানি কাঙ্খিত সাফল্য না পেলেও মুসিয়ালা তার সেরাটা দেবার চেষ্টা করেছেন, যার ফল পাঁচ খেলায় ৩ গোল করে জার্মানির সেরা স্কোরার হন।
তার পাসিং একুরেসির হার ছিল ৯১.২ শতাংশ। এরমধ্যে প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে তিনি পাস বাড়িয়েছিলেন ১১টি, যার মধ্যে ১০টি পাস ছিল পেনাল্টি বক্সের মধ্যে। এছাড়াও তিনি ৩২ বার ড্রিবল করেন এবং ১৩ বার প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে হানা দেন। প্রতিপক্ষের পা থেকে বল কেড়ে নেন ১৪ বার।
তিনি উইঙ্গার বা অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে পারেন, যিনি এর আগে ইউরো ২০২০ এবং কাতার বিশ্বকাপ খেলেছেন।
জুড বেলিংহাম (বয়স: ২১ বছর), ইংল্যান্ড: ১৮০ মিলিয়ন ইউরো মূল্যমানের বেলিংহাম সার্বিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের ইউরো-২০২৪ এর প্রথম ম্যাচেই খেলার একমাত্র গোলটি করেছিলেন, যেটি তাদের গ্রুপে একমাত্র জয় ছিল। স্লোভাকিয়ার বিপক্ষে বাইসাইকেল কিকে ম্যাচের ৯৫তম মিনিটে সমতাসূচক গোল করে ইংল্যান্ডের হয়ে আবারো শেষ ষোলোর নায়ক হয়েছিলেন এই বেলিংহাম।
ক্লাব পর্যায়ে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড এবং রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে ১২০টি ম্যাচ খেলে ৩১টি গোল করা বেলিংহামের ইউরো টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ গোল স্কোরার হওয়ার পাশাপাশি ব্যালন ডি’অর জেতার সম্ভাবনাও রয়েছে।
তিনি নিঃসন্দেহে এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের একজন। যিনি মধ্যমাঠে তার দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দ্বিতীয় স্ট্রাইকার হিসেবেও সফল। এবারের ইউরোতে এখন পর্যন্ত ৮টি ট্যাকল জেতার পাশাপাশি ৮৮.৪ শতাংশ হারে সঠিক পাস প্রদান করেছেন এবং গোলে ৩টি শট নিয়ে ২টি গোল করেছেন। ড্রিবলিং করেছেন ২০ বার। তবে পেনাল্টি বক্সে তিনি মাত্র ৩টি পাস দিতে পেরেছেন বলে কোনো গোলে সহায়তা করতে পারেনি। ২১ বয়স হলেও তিনি ইতিমধ্যে ইংল্যান্ডের হয়ে ইউরো ২০২০ এবং গত কাতার বিশ্বকাপে খেলেছেন।
আরদা গুলার (বয়স: ১৯ বছর), তুরস্ক: ইনজুরি গত মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদে আর্দা গুলারকে বাধাগ্রস্ত করেছিল, তবে তিনি সঠিক সময়ে ফিরে এসে ইউরোর আগে ফর্ম ফিরে পেয়েছেন । তুর্কি কিশোর রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে তার শেষ ৭ লিগ ম্যাচে ৬টি গোল করেছিলেন।
মৌসুমের শেষের দিকের ফর্ম ধরে রেখে গুলার জর্জিয়ার বিপক্ষে দুর্দান্ত গোলের মাধ্যমে তুরস্কের ইউরো-২০২৪ অভিযান শুরু করেন। তিনি ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে টুর্নামেন্টে তার প্রথম ম্যাচে গোল করেন – যার আগে রেকর্ডটি করেছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর।
প্রথমবারের মতো ইউরো খেলতে এসে ১টি গোলের পাশাপাশি তিনি ২টি গোলে সহায়তা করেন। ২০ বার ড্রিবল করার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে পাস বাড়িয়েছিলেন ১৩টি এবং পেনাল্টি বক্সে পাস দিয়েছিলেন ১০টি। সেট পিস বিশেষজ্ঞ এই খেলোয়াড় ৩টি ফ্রি-কিকের সাথে ১৭টি কর্নার-কিক নিয়েছিলেন।
নিকো উইলিয়ামস (বয়স: ২১ বছর), স্পেন: গত ইউরো ২০২০ এ সেমিফাইনাল অব্দি স্পেন পৌঁছালেও সেই টুর্নামেন্টে তাদের কোন খেলোয়াড় ৬টির বেশি সফল ড্রিবলিং করতে পারেনি। অথচ নিকো উইলিয়ামস এবার মাত্র ২টি ম্যাচ খেলে সেই সংখ্যা ছুঁয়ে ফেলেছেন। অ্যাটলেটিকো বিলবাওর এই ডান পায়ের খেলোয়াড় বাম প্রান্তের উইঙ্গার হিসেবে খেলে থাকেন।
লামিন ইয়ামাল এবং তিনি মিলে এবারের ইউরোতে স্পেনের হয়ে দুই উইং থেকে তুমুল আক্রমণ শানাচ্ছেন। উইলিয়ামসের গতি বেশি হওয়ায় বিপক্ষের রাইটব্যাককে তিনি প্রায়শই কাটিয়ে পেনাল্টি বক্সে ঝড় তোলেন। গ্রুপ পর্বে ইতালির সঙ্গে জয় পাওয়া ম্যাচটিতে তিনি বিপক্ষের রাইটব্যাক জিওভান্নি ডি লরেনজোকে ৪ বার ড্রিবল করে পরাস্ত করেছেন। সেমিফাইনালের আগে তিনি ১ গোলের পাশাপাশি ১টি গোলে সহায়তা করেন। তার পাসিং নির্ভুলতা ছিল ৮৯.২৫ শতাংশ। এছাড়াও, তিনি ১১টি কর্নার নিয়েছেন, ২৩টি ড্রিবলিং করেছেন এবং প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ১১টি পাস দিয়েছেন।
ঘানাইয়ান বংশোদ্ভূত উইলিয়ামসের বড় ভাই ইনাকি উইলিয়ামস ঘানার হয়ে খেললেও তিনি বেছে নিয়েছেন স্পেনকে কারণ তার স্বপ্ন ছিল বড় দলের হয়ে বড় কোন মঞ্চ মাতানো। এতে যে তিনি সফল হয়েছেন, সেটা বোঝা যায় যখন বাৎসরিক ১ কোটি ৪ লাখ ইউরো বেতন পাওয়া খেলোয়াড়ের বর্তমান মার্কেট দর ৬০ মিলিয়ন ইউরোতে উন্নীত হয়।
জাভি সিমন্স (বয়স: ২১ বছর), নেদারল্যান্ডস: রোনাল্ড কোম্যানের নেদারল্যান্ডস দলটি অতি আক্রমণাত্মক বা অতি রক্ষণাত্মক কোনোটিই নয় তবে তারা কার্যকর ফুটবল খেলছে কারণ তাদের দলে সিমন্সের মতো খেলোয়াড় রয়েছে। ফ্রেংন্কি ডি ইয়ংয়ের অভাব পূরণ করা ‘লা মাসিয়ার’র ছাত্র সিমন্স বহুমুখী খেলোয়াড় এবং মিডফিল্ডের সামনে লাইন জুড়ে যেকোন জায়গায় খেলতে পারেন।
প্যারিস সেন্ট জার্মেই থেকে আরবি লিপজিগে ধারে খেলতে আসার পর থেকে তিনি সর্বমোট ৪৩টি ম্যাচে ১০টি গোল এবং ১৫টি গোলে সহায়তা করেছেন। এই যাত্রায় তিনি তেইশ বার লেফট উইঙ্গার, আট বার রাইট উইঙ্গার এবং দুই বার অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে খেলেছেন। এই মৌসুমে বুন্দেসলিগায় চতুর্থ সর্বোচ্চ ৭৯টি গোলের সুযোগ তৈরি করেছিলেন, যেটি তাকে ওই লিগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গোলে সহায়তাকারী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
গতি এবং ড্রিবলিংয়ে পারদর্শী সিমন্স গত কাতার বিশ্বকাপে একটি ম্যাচ খেললেও ২০২৩ সালের ইউয়েফা নেশনস লিগের সেমিফাইনাল এবং তৃতীয়-চতুর্থ স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তিনি ক্রোয়েশিয়া এবং ইতালির বিপক্ষে দলে ছিলেন। এই ইউরোতে পাঁচটি ম্যাচেই দলে ছিলেন। সেমিফাইনালের আগ পর্যন্ত ১৬ বার প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে হানা দিয়ে প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে পাস দিয়েছেন ১০টি এবং গোলে ৮ বারের প্রচেষ্টায় ২টি গোল করতে তিনি সহায়তা প্রদানে সমর্থ্য হয়েছেন। ১১টি ডিবলিংয়ের পাশাপাশি পাস প্রদানে তার সফলতার হার ছিল ৯০.৬ শতাংশ এবং প্রতিপক্ষ থেকে বল পুনরুদ্ধার করেছেন ৬ বার। তিনি ২ বার ফাউল করার উল্টোদিকে প্রতিপক্ষ দ্বারা ৫ বার ফাউলের শিকার হয়েছেন।
ফ্লোরিয়ান উইর্টজ (বয়স: ২১ বছর), জার্মানি: ফ্লোরিয়ান উইর্টজ গত মৌসুমে বুন্দেসলিগায় অসাধারণ পারফর্মার ছিলেন এবং বায়ার লেভারকুসেনকে জাবি আলোনসোর অধীনে অপরাজিত থেকে লিগ জিততে সাহায্য করেছিলেন। কিন্তু জার্মানি কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে যাওয়ার পর মুসিয়ালা ও উইর্টজকে আর দেখতে না পাওয়া আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।
এই ইউরোতে পাঁচটি ম্যাচ খেলে তিনি ২টি গোল করতে পেরেছিলেন। পাসিং এ্যাকুরেসি ছিল ৯৩ শতাংশ। ড্রিবল করেছেন ৯ বার। প্রতিপক্ষের পেনাল্টি বক্সে ৬ বার হানা দিয়ে পাস দিতে পেরেছিলেন ৪ বার। ইউরোতে সবদিক থেকে মুসিয়ালার চাইতে পিছিয়ে থাকা উইর্টজ থেকে প্রতিপক্ষ বল কেড়ে নিতে পেরেছিলেন মাত্র ৮ বার।
কোবি মাইনু (বয়স: ২০ বছর), ইংল্যান্ড: মাইনু নিঃসন্দেহে এই মৌসুমের একজন সেরা চমক জাগানিয়া খেলোয়াড়। ঘানাইয়ান বংশোদ্ভুত এই খেলোয়াড় ম্যানচেস্টারের হয়ে মাত্র ২৫টি ম্যাচ খেলেই এবছর ইংল্যান্ড দলে সুযোগ পেয়ে ইউরো-২০২৪ এ ফুটবলপ্রেমীদের মন জয় করেছেন। যদিও তিনি শুরুর দিকে ইংল্যান্ডের হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতি যাচাই মূলক ম্যাচে ছিলেন না।
এই মৌসুমে তার সেরা চমক ছিল এফ.এ কাপ ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ম্যানচেস্টার সিটির বিরুদ্ধে ২-১ গোলে জয় পাওয়া ম্যাচে জয় সূচক গোলটি করা। সেই সাথে জিতেছেন প্রিমিয়ার লিগের এই মৌসুমের সেরা তরুণ খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
মাইনুর খেলার ধরন অনেকটা বর্তমান সময়ের মেজাল্লাদের মত, অর্থাৎ রক্ষণ কাজের পাশাপাশি মধ্য মাঠ থেকে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলায় পারদর্শীতা। ইউরোতে এ পর্যন্ত চারটি ম্যাচ খেলে তিনি ৭ বার বল দখলের পাশাপাশি ৫ বার ড্রিবলিং করে ৫ বার প্রতিপক্ষের অ্যাটাকিং থার্ডে হানা দিয়েছেন এবং ৯৬.২৬ শতাংশ সফল পাস দিয়েছেন।
বার্ট ভারব্রুগেন (বয়স: ২১ বছর), নেদারল্যান্ডস: ৬ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতা ভারব্রুগেনকে আধুনিক এবং পুরনো গোলকিপারদের একটি নিখুঁত মিশ্রণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নশিপের গত ৬০ বছরের ইতিহাসে নেদারল্যান্ডের এই গোলরক্ষক সবচেয়ে কম বয়সী গোলরক্ষক হিসেবে রোনাল্ড কোম্যানের আস্থার প্রতিদান দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ইউরোর ইতিহাসে তিনি হচ্ছেন তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ গোলরক্ষক।
ব্রাইটন অ্যান্ড হোভের এই গোলরক্ষক শট রক্ষার পাশাপাশি পাসিংয়েও দক্ষ। এখন পর্যন্ত ইউরোতে তিনি ১৬ টি শট রক্ষা করেছেন ১৩১টি পাস প্রদান করেছেন, যাতে সফলতার হার ছিল ৮৪ শতাংশ। তার সেরা প্যারফরমেন্স ছিল কোয়ার্টার ফাইনালে তুরস্কের বিরুদ্ধে সেমিহ কিলিকসহের একটি ক্লোজ রেঞ্জ প্রচেষ্টা রুখে দেয়া।
এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা (বয়স: ২১ বছর), ফ্রান্স: কামাভিঙ্গা এবারের ইউরোতে এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি ম্যাচ খেললেও রিয়াল মাদ্রিদের এই তারকা তাদের হয়ে ৯৪টি ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। লেফট উইং ব্যাক এবং ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে খেলতে পারা এই খেলোয়াড় এঙ্গোলার একটি শরণার্থী শিবিরে জন্মগ্রহণ করেন। ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কংগোর গৃহযুদ্ধ থেকে পালিয়ে আসা এক পরিবারে জন্মগ্রহণ করা খেলোয়াড় আজ বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়দের কাতারে, সেটা নিঃসন্দেহে তার জন্য একটি বড় অর্জন।
গত কাতার বিশ্বকাপেও তিনি নজর কেড়ে নিয়েছিলেন। কামাভিঙ্গা একজন বহুমুখী খেলোয়াড়। ৬ ফুট উচ্চতার শক্তিশালী এই খেলোয়াড় তার গতি, ট্যাকলিং, রক্ষণাত্মক দক্ষতা, ড্রিবলিং, পাসিং, বল কন্ট্রোলের জন্য পরিচিত। এই ইউরোতে তিনি ৮৬ শতাংশ পাস যথাযথভাবে দেয়ার পাশাপাশি প্রতিপক্ষের পা থেকে ৮ বার বল ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং ৩টি ক্লিয়ারেন্স সম্পন্ন করেছেন।
সারাবাংলা/এসএস