বাংলাদেশকে আরেকবার উড়িয়ে সিরিজ জিতল ভারত
৯ অক্টোবর ২০২৪ ২২:১৯ | আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:২১
ম্যাচের ফলাফল এক ইনিংস পরেই আনেকটা নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল! আগে ব্যাটিং করে ২২১ রানের পাহাড় গড়েছিল ভারত। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টিতে যেমন দল তাতে এতো রান করে জিতবে সেই আশা কজন করেছিল সন্দেহ। হলোও তাই, ভারতের বিশাল রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ টেনেটুনে থেমেছে ১৩৫ রানে গিয়ে।
যে পিচে প্রথম ইনিংসে ভারতীয় ব্যাটাররা বাংলাদেশি বোলারদের রীতিমতো তুলধুনু করেছেন সেই পিচেই টি-টোয়েন্টিসূলভ ব্যাটিংই করতে পারেননি সফরকারীরা। কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৪১ রান করলেও খেলেছেন ৩৯ বল। সব মিলিয়ে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয়টিতে বাংলাদেশকে ৮৬ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে ভারত।
এই জয়ে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে সিরিজ জয় নিশ্চিত হলো স্বাগতিকদের। সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতেও বাংলাদেশকে বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল ভারত। আগামী ১২ অক্টোবর হায়দরাবাদের সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলতে নামবে দু’দল।
বুধবার (৯ অক্টোবর) দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ভারতের ২২১ রানের জবাব দিতে নেমে আর্শদ্বীপ সিংয়ের প্রথম ওভার থেকে ১৫ রান তোলেন তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। ইতিবাচক ব্যাটিং করছিলেন অপর অভিজ্ঞ ওপেনার লিটন দাসও। কিন্তু ইনিংস বড় করার প্রশ্নে বাংলাদেশের সব ব্যাটারই ব্যর্থ।
আর্শ্বদীপের বল স্ট্যাম্পে টেনে এনে ১২ বলে ১৬ রান করে বোল্ড হয়েছেন তরুণ ইমন। খানিক বাদে বরুণ চক্রবর্তীর স্পিন বুঝতেই পারেননি লিটন দাস। সরাসরি বোল্ড হয়েছেন ১৪ রান করে। যাওয়া-আসার মিছিলে শামিল ছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত (১১), তাওহিদ হৃদয় (২), মেহেদি হাসান মিরাজরাও (১৬)। মিডিল অর্ডারে মাহমুদউল্লাহ জয়ের চিন্তা বাদ দিয়ে ক্রিজে সময় কাটানোর চেষ্টা করেছেন। রিয়াদের ৩৯ বলে ৩ ছক্কায় ৪১ রানের ইনিংসটিই বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকা বাংলাদেশ ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৩৫ রানে থেমেছে। ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন নিতিশ কুমার রেড্ডি ও বরুণ চক্রবর্তী।
এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুরুটা ভালোই ছিল বাংলাদেশের। টস জিতে বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়ে যে শান্ত ভুল করেননি সেটা প্রমান হয়েছে দ্রুতই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন আহমেদের গতির তারতম্য ধরতে না পেরে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাঞ্জু স্যামসন (৭ বলে ১০ রান)।
পরের ওভারে তানজিম হাসান তামিমের অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল স্ট্যাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন ভারতের তরুণ ওপেনার অভিষেক শর্মা। ফিরেছেন ১১ বলে ১৫ রান করে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার কাটারের জবাব দিতে পারেননি ভারতের শীর্ষ টি-টোয়েন্টি ব্যাটার সূর্যকুমার যাদব। সরাসরি ক্যাচ তুলে দেন মিড অফে শান্তর হাতে। ১০ বলে ৮ রান করে ফিরেছেন ভারতীয় অধিনায়ক।
এর পরপর তরুণ নিতিশ কুমার রেড্ডির হাফ চান্স ক্যাচ ছেড়েছেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। সেই ভুলের প্রাশ্চিত্ব করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। রিংকু সিংকে সঙ্গে নিয়ে চতুর্থ উইকেট জুটিতে দুর্দান্ত একটা জুটি গড়েছেন নিতিশ।
বাংলাদেশি বোলারদের ওপর পাল্টা আক্রমণ করেন দুজন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে মাত্র ৪৯ বলে ১০৮ রান তোলেন দুজন। ২৪ বলে ফিফটি পূর্ণ করা নিতিশ কুমার মোস্তাফিজুর রহমানের স্লোয়ার বুঝতে না পেরে ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৭৪ রানে। মাত্র ৩৪ বলে নিতিশ এই রান করতে চার হাঁকিয়েছেন ৪টি, আর ছক্কা ৭টি!
এরপর রিংকু সিংকে নিয়ে ভারতের ব্যাটিং তাণ্ডব অব্যাহত রাখেন অভিজ্ঞ হার্দিক পান্ডিয়া। রিংকু ২৬ বলে ফিফটি করার পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তাসকিন আহমেদের শেষ ডেলিভারিতে ফেরার আগে ২৯ বলে করেছেন ৫৩ রান। রিংকু চার-ছয় মেরেছেন দুটি করে।
শেষ দিকে অবশ্য ভারতের রান উৎসবে কিছুটা লাগাম টানতে পেরেছেন বাংলাদেশি বোলাররা। তার বড় অবদান তাসকিন আহমেদের। ইনিংসের শুরুতে দুর্দান্ত বোলিং করা তাসকিন শেষ দিকেও ছিলেন দুর্দান্ত। শেষ দিকে হার্দিক পাণ্ডিয়াকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য দাঁড়াতে পারেননি কেউ। হার্দিক শেষ ওভারে ফিরেছেন ১৯ বলে ৩২ রান করে। চার-ছয় মেরেছেন দুটি করে।
ইনিংসের শেষ ওভারে তিন উইকেট তুলে নেন রিশাদ হোসেন। তবে রান আটকাতে পারেননি বাংলাদেশি তরুণ লেগস্পিনার। ৪ ওভারে রান দিয়েছেন ৫৫। তাসকিন ছাড়া দুটি করে উইকেট নিয়েছেন অপর দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসান সাকিবও। মোস্তাফিজ চার ওভারে খরচ করেছেন ৩৬ রান, তানজিম চার ওভারে দিয়েছেন ৫০ রান।
সারাবাংলা/এসএইচএস