অধিনায়কত্ব ছাড়তে চাওয়া শান্তকে বুঝানোর চেষ্টা করবে বিসিবি
২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২২:৩৬
জাতীয় দলের অধিনায়কত্ব ছাড়তে চান নাজমুল হোসেন শান্ত- খবরটা হঠাৎ করেই ছড়িয়ে পরেছে ক্রিকেটপাড়ায়। সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত খবরটা ছড়িয়ে পরার পর বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডও (বিসিবি) নড়েচড়ে বসেছে। তবে বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় বিষয়টি নিয়ে এখনই কার্যকারী কোনো উদ্যোগ নিতে পারছে না বিসিবি। শোনা যাচ্ছে, সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে শান্তকে বুঝানোর চেষ্টা করবে বোর্ড। পরিচালক নাজমুল আবেদীন ফাহিমের কথাতেও তেমন ইঙ্গিত পাওয়া গেল।
মাত্র আট মাস মতো হলো তিন সংস্করণে পূর্ণ মেয়াদে নেতৃত্ব পেয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। বয়সে তরুণ শান্তকে নিয়ে বোর্ডের লম্বা পরিকল্পনা। এখন তিনি অধিনায়কত্ব ছেড়ে চলে গেলে নতুন একজনকে বেছে নিতে হবে। এই মুহূর্তে দলে নেতৃত্ব নেওয়ার মতো অভিজ্ঞ যেহেতু কেউ নেই ফলে তরুণ কাউকেই বেছে নিতে হবে হয়ত। সেক্ষেত্রে সেই নতুন জনকেও প্রস্তুত করতে হবে, শান্তর মতো একই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। শান্তর মতো পরিস্থিতি তার ক্ষেত্রেও তৈরি হতে পারে। ফলে শান্তকে নিয়েই ভাবতে চাইছে বোর্ড।
শান্তর নেতৃত্ব ছাড়ার খবরে বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদীন বলেন, ‘আমি টিভির স্ক্রলে দেখেছি, আপনাদের কাছ থেকে শুনেছি, সে নাকি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে কোথাও। যদি হয়ে থাকে, আনুষ্ঠানিক কোনো কাগজ আমার কাছে আসেনি। যদি হয়ে থাকে, তাহলে এটা আমাদের জন্য একটা বড় খবর। এখন যদি নতুন অধিনায়ক তৈরি করতে হয়, বড় পদক্ষেপ নিতে হবে। অথবা তাকেই আবার অনুরোধ করে রাখা হয় কি না, এটা আমাদের বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারণ, ঘটনাটা জানা গেছে…আমাদের বিচার–বিবেচনা করতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
বিসিবি পরিচালক বলেছেন, ‘বিসিবি আলোচনা করতে চাইবে। কারণ, (নাজমুল হোসেন) শান্ত এত দিন ধরে অধিনায়কত্ব করে আসছে, তাই এটা তো আমাদের সময়ের ইনভেস্টমেন্টও। আমরা একজনকে তৈরি করার চেষ্টা করছি। সে যদি হঠাৎ করে সরে যায়, নতুন একজন কিছুটা অপ্রস্তুত। সেটাতে আমাদের যেতে না চাওয়াটা স্বাভাবিক হবে। তারপরও এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। হঠাৎ করে ৩-৪টা উইকেট পড়ে গেলে তো খেলা শেষ হয়ে যায় না।’
নতুন একজনকে নির্বাচন করার আগে আরও ভাবতে হবে মনে করছেন নাজমুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘শান্ত যদি না থাকে, তাহলে কারও না কারও কাছে আমাদের যেতে হবে। তাকেও কিন্তু একই জিনিস মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের উচিত হবে, যে–ই অধিনায়ক হোক না কেন, পাশে থাকা। হঠাৎ করে স্টিভ ওয়াহ, মাধুগালে, ইমরান খান বা ধোনি হওয়া যায় না, সময় দিতে হবে। আমাদের কালচারের মধ্যে ওভাবে অধিনায়কও গড়ে ওঠে না। তাই অধিনায়কের ওপর চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।’
ভাবা হচ্ছে অধিনায়কত্বের অতিরিক্ত চাপের কারণেই ছেড়ে যেতে চাইছেন শান্ত। অধিনায়ক হিসেবে তার সাফল্য প্রসংশনীয়। কিন্তু এই সময়ে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল নয় শান্ত। ফলে অধিনায়কত্ব ছেড়ে নিজের ব্যাটিংয়ে মনোযোগী হওয়ার চিন্তা তার।
কিন্তু শান্তর ওপর যদি অধিনায়কত্বের চাপ অতিরিক্ত না যেত তাহলে হয়তো তিনি এতোটা অতিষ্ঠ হতেন না! নাজমুল আবেদীন ফাহিম এটাই বললেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই জানি ও দুর্দান্ত একজন ব্যাটার। তার মধ্যে একজন খেলোয়াড় আমাদেরই কারণে নেতৃত্ব দিতে পারছে না। কারণ, আমাদের মতো একটা দেশের ক্যাপ্টেন হওয়া মানে সব সময় চাপে থাকা; ভালো পারফরম্যান্স হবে না। তাকে নিয়ে আমরা যে পরিমাণ সমালোচনা করি বা যেভাবে সমালোচনা করি, সেটা কিন্তু তার জন্য কঠিন হয়ে যায়।’
‘তার ভালো না খেলার কারণও হয়তো সেটা। আমার মনে হয় খুব প্রয়োজন ছিল ওর পাশে থাকা, ওকে সাপোর্ট করা। এটা মনে রাখা যে ও বাংলাদেশ দলের মতো একটা দলের অধিনায়ক এবং এ দল খুব অধারাবাহিক। ও নিজেও খুবই তরুণ একজন খেলোয়াড়। ওর ব্যাপারে আরেকটু সহনাভূতিশীল হওয়া প্রয়োজন ছিল।’- যোগ করেছেন ফাহিম।
সারাবাংলা/এসএইচএস