প্রথমবার মুখোমুখি কোস্টারিকা-সার্বিয়া
১৭ জুন ২০১৮ ১০:৫৩ | আপডেট: ১৭ জুন ২০১৮ ১১:২৭
সারাবাংলা ডেস্ক ।।
বিশ্বকাপে গ্রুপ ‘ই’র ম্যাচে সন্ধ্যায় মুখোমুখি হচ্ছে কোস্টারিকা-সার্বিয়া। রাশিয়ার সামারায় ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় ৬টায়। এই গ্রুপে রয়েছে ব্রাজিল এবং সুইজারল্যান্ড (রাত ১২টা)। এর আগে আন্তর্জাতিক ম্যাচে কখনোই এই দুই দেশ মুখোমুখি হয়নি।
রূপকথা প্রতিবার হয় না, সেটা কোস্টারিকা খুব ভালোমতোই জানে। আগের বারের সব খেলোয়াড়েরা থাকলেও বয়স থেমে নেই কারও। ব্রায়ান রুইজের বয়স এখন ৩২, ক্লাব ফুটবলে ফর্ম ভালো নয়। জোয়েল ক্যাম্পবেলও আর্সেনালে থিতু হতে না পেরে হারিয়ে গেছেন পাদপ্রদীপ থেকে। এক কেইলর নাভাসই গোলপোস্টের নিচে আছেন আস্থা হয়ে, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাত্রই জিতেছেন হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। গত কিছু দিনে ফর্মটাও ভালো যায়নি কোস্টারিকার, হাঙ্গেরি ও তিউনিসিয়ার কাছে হারতে হয়েছে প্রীতি ম্যাচে। কিছুটা হলেও চাপে রয়েছেন কোচ অস্কার মিরেজ।
বিশ্বকাপে কোস্টারিকা চারবার অংশ নিলেও কোনোবারই সেমি ফাইনালে উঠতে পারেনি। দেশটি প্রথম অংশ নেয় ১৯৯০ বিশ্বকাপে। গতবার ব্রাজিলে খেলেছে। সেবারই তাদের সেরা সাফল্য ধরা দেয়। ব্রাজিল বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল কোস্টারিকা।
এদিকে, একটা সময় যুগোস্লাভিয়া ছিল ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি, বিশ্বকাপে পূর্ব ইউরোপের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপন ছিল তারাই। সেই যুগোস্লাভিয়া ভেঙে সার্বিয়া-মন্টেনেগ্রো হয়েছে, দুই দলই হারিয়ে ফেলেছে শক্তি। সার্বিয়া বিশ্বকাপে উতরে গেলেও আগের মতো আর পরাশক্তি নেই। তবে, মধ্যমাঠে নেমানিয়া মাতিচ ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের রক্ষণভাগে অন্যতম ভরসা। আরও আছেন ব্রানিস্লাভ ইভানোভিক, আলেকজান্ডার কোলারভরা, চোখ থাকবে লাজিওর মিডফিল্ডার মিলিনকোভিচের ওপর। এই মৌসুমে দারুণ ফর্মে ছিলেন, এর মধ্যে ইউরোপের অনেক বড় বড় ক্লাবের চোখ পড়েছে তার ওপর। তবে ব্রাজিল, সুইজারল্যান্ড ও কোস্টারিকার গ্রুপ থেকে পরের পর্বে যেতে হলে সাধ্যের সবটুকুই করতে হবে।
বিশ্বকাপে সার্বিয়া ১১ বার অংশ নিয়েছে। তার মধ্যে দুইবার তারা শেষ চারেও খেলেছে। দেশটি প্রথম বিশ্বকাপে (১৯৩০ সালে) অংশ নিয়েছিল। তবে, গতবার ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়নি। সার্বিয়ার সেরা সাফল্য চতুর্থ স্থান (১৯৩০, ১৯৬২ সাল)।
সার্বিয়ার অভিজ্ঞ তারকারা অবসর নেওয়ায় কার্যত একঝাঁক তরুণ ও প্রতিভাবান ফুটবলারকে নিয়ে দল সাজিয়েছেন কোচ মিলাদেন ক্রাস্টাজিচ। বলিভিয়াকে ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ৫-১ গোলে হারানোয় তার শিষ্যরা আছেন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে।
বিশ্বকাপে কোস্টারিকা পাঁচটি ম্যাচ জিতলেও ১৭টি ম্যাচ জয়ের স্বাদ পেয়েছে সার্বিয়া। কোস্টারিকা চারবার ম্যাচ ড্র করলেও ছয়বার হেরেছে। অপরদিকে, সার্বিয়া আটবার ড্র‘র স্বাদ পেলেও হেরেছে ১৮টি ম্যাচ। কোস্টারিকানরা প্রতিপক্ষের জালে ১৭বার বল জড়ালেও ৬৪বার এই আনন্দ উপভোগ করেছে সার্বিয়ানরা। রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে চারটি ম্যাচ জয়, চারটি ম্যাচ ড্র আর দুটি ম্যাচে হেরেছে কোস্টারিকা। তাতে গোল করেছিল ১৪টি। এদিকে, ছয়টি ম্যাচ জিতেছে সার্বিয়া, তিনটি ম্যাচে ড্র‘র পাশাপাশি হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচেই। তাতে গোল করেছিল ২০টি।
কোস্টারিকার স্কোয়াডের দিকে তাকালে দেখা যায় ১ হাজার ১৫৪টি ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা তাদের খেলোয়াড়দের, তাতে গোল করার অভিজ্ঞতা ১১৬ বার। তাদের ফুটবলারার বিশ্বকাপে খেলেছে ৫৩টি ম্যাচ, গোল করেছে ৫টি। আর সার্বিয়ানদের অভিজ্ঞতা ৫৯৫টি ম্যাচ খেলার। বিশ্বকাপের আসরে মাত্র আটটি ম্যাচ খেলেছে এই স্কোয়াডের খেলোয়াড়রা। আর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই স্কোয়াডের ফুটবলারা গোল করেছে ৬২টি, তবে বিশ্বমঞ্চে গোল করার অভিজ্ঞতা এখনও হয়নি কারো।
কোস্টারিকার ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দল:
গোলরক্ষক: কেইলর নাভাস, প্যাট্রিক প্যাম্বারটন, লিওনেল মোরেইরা।
ডিফেন্ডার: ক্রিশ্চিয়ান গ্যাম্বোয়া, ইয়ান স্মিথ, রোনাল্ড ম্যাটেরিতা, ব্রায়ান অভিয়েদো, অস্কার দুয়ার্তে, গিয়ানসারলো গঞ্জালেজ, ফ্রান্সিসকো সালভো, কেন্ডাল ওয়াস্টন, জনি অ্যাকোস্টা।
মিডফিল্ডার: ডেভিড গুজম্যান, ইয়েলসিন তেজেদা, সেলসো বোর্গেস, আজোফেইফা, রডনি ওয়ালেস, ব্রায়ান রুইজ (অধিনায়ক), ড্যানিয়েল কলিন্দ্রেস, ক্রিশ্চিয়ান বোলানস।
ফরোয়ার্ড: ইয়োহান ভেনেগাস, জোয়েল ক্যাম্পবেল, মার্কো ইউরেনা।
সার্বিয়ার ২৩ সদস্যের চূড়ান্ত দল:
গোলরক্ষক: ভ্লাদিমির স্টোজকোভিক, প্রেদরাগ রাজকোভিক, মার্কো দিমিত্রোভিক।
ডিফেন্ডার: আন্তোনিও রুকাভিনা, দুস্কো তোসিক, ইউরোজ স্পাজিক, ব্রানিস্লাভ ইভানোভিক, আলেকজান্ডার কোলারভ (অধিনায়ক), মিলোস ভেলজকোভিক, মিলান রোদিক, নিকোলা মিলিনকোভিচ।
মিডফিল্ডার: লুকা মিলিভোজেভিক, আন্দ্রিজা জিভকোভিক, দুজান তাদিক, মার্কো গ্রুজিক, ফিলিপ কোস্তিক, নেমানিয়া মাতিচ, সার্গেই মিলিনকোভিক-সাভিক, অ্যাদেম এলজাজিক।
স্ট্রাইকার: আলেকজান্ডার মিত্রোভিক, আলেকজান্ডার প্রিজোভিক, নেমানজা রাদোনজিক, লুকা জোভিক।
সারাবাংলা/এমআরপি