ফাইনালে উঠতে জয়ের জন্য শেষ ওভারে চিটাগং কিংসের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। খুলনা টাইগার্সের মুশফিক হাসানের প্রথম বলে চার মেরে ওভার শুরু আরাফাত সানির। দুই বল পর আরও একটা চার মেরে পরের বলে আউট শরীফুল ইসলাম। সমীকরণ এমন, জয়ের জন্য শেষ বলে প্রয়োজন চার রান। খুঁড়িয়েই উইকেটে এলেন আগের ওভারে রান নিতে গিয়ে পায়ে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়া আলিস আল ইসলাম। মুশফিকের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে আলিস খেললেন দারুণ একটা কভার ড্রাইভ। সেই চারেই দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জিতে ফাইনালে উঠল চিটাগং কিংস।
দুই চার ও এক ছক্কায় ৭ বলে ১৭* রানের ইনিংস, সাথে চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে এক উইকেট। ব্যাটে বলে দারুণ এক সন্ধ্যা কাটল আলিসের। দলকে জেতালেন রুদ্ধশ্বাস এক ম্যাচ, হলেন ম্যাচ সেরা। পুরস্কার বিতরণীতেই এই অফস্পিনার জানালেন কী চলছিল তার মাথায়। কৃতিত্ব দিলেন তখন তার সাথে উইকেট থাকা আরাফাত সানিকেও।
আলিস বলেন, ‘আসলে আমি আর সানি ভাই যখন ব্যাটিং করছিলাম, সানি ভাই আমাকে শুধু এই কথাটা বলছিলেন যে, ‘আলিস বিশ্বাস রাখ। তোর ব্যাটিং আমি দেখেছি। তুই পারবি।’ আমিও অনেক দিন যাবৎ চেষ্টা করছিলাম ব্যাটসম্যান হওয়ার জন্য বা ব্যাটিং করার জন্য। হচ্ছিল না কখনও। আমি সেন্টারে (উইকেটে) গিয়ে পারছিলাম না। সিলি সিলি আউট হয়ে যাচ্ছিলাম। তো সানি ভাই বলছিলেন যে, ‘বিশ্বাস রাখ। ক্রিকেট যে কোনো কিছুর খেলা। যে কোনো কিছু হতে পারে।’
১৯তম ওভারে রান নিতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে গিয়ে ব্যথা নিয়ে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন আলিস। তার বদলে তখন উইকেটে আসেন শরীফুল ইসলাম। যেটা শেষ পর্যন্ত শাপেবর হয়েছে চিটাগংয়ের জন্য। মূলত দৌড়ে রান নিতে না পারার শংকা থেকেই তখন মাঠ ছেড়েছিলেন আলিস। এমনকি ডাগ আউটে কাছে গিয়ে হতাশায় বেশ মুষড়ে পড়তেও দেখা যায় তাকে।
মাঠ ছাড়া নিয়ে আলিস বলেন, ‘রান নিতে গিয়ে যখন চোটে পড়লাম, আমি আর সানি ভাই ঠিক করলাম… আমি যেহেতু দৌড়াইতে পারব না, সানি ভাই বললেন যে, ‘যদি দৌড়াইতে না পারো তাহলে বাইরে যাওয়াই ভালো হবে।’ ওই সময় তিন বলে ৮ রান প্রয়োজন ছিল। তাই দ্রুত রান নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সানি ভাইকে প্রথমে বললাম যে আমি চেষ্টা করি। সানি ভাই বললেন, ‘দরকার নাই। কপালে থাকলে হবে। শরীফুলও মারতে পারবে।’ শরিফুল প্রথম বলেই চার মারল। তখন আমাদের মাঝে বিশ্বাস ছিল যে এই ম্যাচ আমাদের পক্ষে আছে।’
ফিরে এসে দারুণ এক শটে ম্যাচ জেতালেন আলিস। তখনও তার বিশ্বাস ছিল ছয় মেরেই ম্যাচ জেতাতে পারবেন, ‘শেষ বলে আমি আবার যখন ফিরে এলাম, সানি ভাইকে বলছিলাম, ‘ভাই আসলেই দেখেন, কপালে যদি থাকে ছয় মেরে দেব।’ সানি ভাই বলছিলেন যে, ছয় দরকার নেই, তুই চারই মার (হাসি)।’