ইতিহাস গড়ে বিপিএলে বরিশালের টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:০০ | আপডেট: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৪৭
শিরোপা জিততে হলে ইতিহাস গড়তে হতো ফরচুন বরিশালকে। একাদশ বিপিএলের ফাইনালে আগে ব্যাটিং করে ১৯৪ রানের বিশাল স্কোর গড়েছিল চিটাগং কিংস। বিপিএলের ফাইনালে অতীতে এতো রান তাড়া করে জিতেনি কোনো দল। তামিম ইকবালের দুর্দান্ত শুরুর পর মিডল অর্ডারে কাইল মায়ার্সের ঝলক আর শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের ঝড়। সব মিলিয়ে চিটাগং কিংস হারিয়ে একাদশ বিপিএলের শিরোপা ঠিকই জিতল বরিশাল।
তিন বল হাতে রেখে শিরোপা জয় নিশ্চিত করেছে বরিশাল। বিপিএলে বরিশালের এটা টানা দ্বিতীয় শিরোপা জয়। তামিম ইকবালের নেতৃত্বে গত বিপিএলেও শিরোপা জিতেছিল দলটি। তামিমের এটা তৃতীয় শিরোপা জয়। এর আগে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে একবার শিরোপা জিতেছিলেন তিনি।
বরিশাল এ নিয়ে দুবার বিপিএলের ফাইনালে উঠে দুবারই জিতল। অপর দিকে চিটাগং দ্বিতীয় চেষ্টাতেও ব্যর্থ। ২০১৩ সালের বিপিএলে ফাইনালে উঠে হেরেছিল চিটাগং। আজ আবারও দ্বিতীয়বার ফাইনাল খেলেতে নেমেও হারতে হলো।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বরিশালকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন তামিম ইকবাল। বড় সংগ্রহের জবাব দিতে পাওয়ার প্লে কাজে লাগানোটা প্রথম শর্ত। তামিম সেই শর্ত পূরণ করেছেন দারুণভাবে। তাওহিদ হৃদয় গত ম্যাচে রান পেলেও আজ আবারও ব্যর্থ। তবে ওপেনিংয়ের অপর প্রান্ত থেকে অভিজ্ঞ তামিম রান তুলেছেন দুর্দান্তভাবে।
ওপেনিংয়ে ৪৯ বলে ৭৬ রানের জুটিতে তামিম একই কারেছেন ৫৪ রান। শরিফুল ইসলামকে হাঁকিয়ে সীমানাছাড়া করতে গিয়ে সীমানায় ধরা পরেন তামিম। ৫৪ রান করেছেন মাত্র ২৯ বলে। চার মেরেছেন ৯টি, ছক্কা ১টি। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ডেভিড মালান ফাইনালে ব্যর্থ। তিনে নেমে ১ রান করেই ফিরেছেন ইংলিশ তারকা ব্যাটার।
এরপর বরিশালের ইনিংসটা এগিয়ে নিয়েছেন কাইল মায়ার্স। তাওহিদ হৃদয় রানের গতি বাড়াতে গিয়ে ফিরেছেন ২৮ বলে ৩২ রান করে। মুশফিকুর রহিম দারুণ শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ফিরেছেন ৯ বলে ১৬ রান করে। তবে কাইল মায়ার্স একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে টেনেছেন।
মায়ার্স যতক্ষণ ক্রিজে ছিলেন মনে হচ্ছিল সহজ জয় পেতে যাচ্ছে বরিশাল। কিন্তু দলীয় ১৭২ রানের মাথায় মায়ার্স ২৮ বলে ৩টি করে চার-ছয়ে ৪৬ রান করে ফিরলে বিপদ বাড়ে বরিশালের। মাহমুদউল্লাহ ১১ বলে মাত্র ৭ রান করে ফিরে দলকে আরও বিপদে ফেলেন। মোহাম্মদ নবিও ব্যর্থ হয়েছে। ৪ বলে ৪ রান করে ফিরেছেন আফগানিস্তান তারকা।
তবে শেষের অধ্যায়টা রঙিন করেছেন রিশাদ হোসেন। শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ৮ রান। হুসেইন তালাতকে ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে জয়টা সেখানেই অনেকটা নিশ্চিত করেন রিশাদ। ছক্কা হাঁকিয়েছেন তার আগেও একটা। ১৯.৩ ওভারে বরিশালের শিরোপা জয় যখন নিশ্চিত হলো রিশাদ তখন ৬ বলে ১৮ রানে অপরাজিত।
এর আগে বিপিএল ফাইনালে টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। মিরপুরে দিনে বাড়তি সুবিধা পাচ্ছিলেন বোলাররা। সেই সুযোগটাই নিতে চেয়েছেন তামিম।
কিন্তু চিটাগংয়ের তরুণ ব্যাটার পারভেজ হোসেন ইমন তামিমের এই পরিকল্পনাকে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছেন। শুরু থেকেই মেরে খেলেছেন ইমন। পাকিস্তানি ব্যাটার খাওয়াজা নাফি তাকে সঙ্গ দিয়েছেন দারুণভাবে। ১২.৪ ওভারে গিয়ে ভেঙেছে চিটাগংয়ের ওপেনিং জুটি। তার আগে ১২১ রান তুলেছেন দুজন।
খাওয়াজা ৪৪ বলে ৭টি চার ৩টি ছয়ে ৬৬ রান করে ফিরলে এই জুটি ভাঙে। ফর্মে থাকা গ্রাহাম ক্লার্ক তিনে নেমে খাওয়াজার বিদায়টা বুঝতেই দেননি! ক্রিজে নেমেই মেরে খেলেছেন ইংলিশ ব্যাটার। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট পেয়েছিলেন ব্যাটিংয়ে। সেই চোট নিয়ে দৌড়াতে পারছিলেন না বলেই রান আউট হয়েছেন। তার আগে ২৩ বলে ২টি চার ৩টি ছয়ে ৪৪ রান করেছেন ক্লার্ক।
ইমন অপরাজিত ছিলেন শেষ অবদি। ৪৯ বল খেলে ৬টি চার ৪টি ছয়ে ৭৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৯৪ রানে থেমেছে চিটাগং। বরিশালের হয়ে একটি করে উইকেট নিয়েছেন ইবাদত হোসেন ও মোহাম্মদ আলি।
সারাবাংলা/এসএইচএস