স্পোর্টস ডেস্ক ।।
রাশিয়া বিশ্বকাপের ২৪তম ম্যাচে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের মুখোমুখি হয়েছে কোস্টারিকা। প্রথমার্ধে কোনো দলই গোল করতে পারেনি। বিরতির আগে সমতা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ৬৪ শতাংশ বল নিজেদের পায়ে রাখা ব্রাজিল আর ৩৬ শতাংশ বল নিজেদের দখলে রাখা কোস্টারিকা।
এর আগে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নেমে ১-১ গোলে ড্র করেছিল ব্রাজিল। অন্যদিকে, সার্বিয়ার বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে হেরে পয়েন্ট খুঁইয়েছিল কোস্টারিকা। সেইন্ট পিটার্সবুর্গে ম্যাচটি শুরু হয় বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায়। রাশিয়ায় নিজেদের প্রথম জয়ের খোঁজে ব্রাজিল-কোস্টারিকা।
ম্যাচের তৃতীয় মিনিটে আক্রমণে যায় ব্রাজিল। বার্সেলোনার তারকা কুতিনহোর দারুণ একটি শট গোলবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। দশম মিনিটে কোস্টারিকার ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফ্রি-কিকের সুযোগ নষ্ট করে ব্রাজিল। ১৩ মিনিটের মাথায় সেলসো বোরগেসের বাঁকানো শট ব্রাজিলের গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে গেলে, হতাশা সঙ্গী হয় কোস্টারিকার। ২৬ মিনিটের মাথায় কোস্টারিকার জালে বল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন জেসুস। তবে, অফসাইটের ফাঁদে পড়ায় গোলটি বাতিল হয়।
২৮ মিনিটে নেইমারের গতিতে পরাস্থ হয় কোস্টারিকার ডিফেন্স। তবে, প্রস্তুত ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। তাকে ফাঁকি দিতে পারেননি পিএসজির তারকা নেইমার। ৩২ মিনিটে নেইমারের তুলে দেওয়া বলে মাথা লাগাতে পারেননি জেসুস। তার আগেই ব্রায়ান ওভিদো বল ক্লিয়ার করেন। ৩৯ মিনিটে কোস্টারিকার একটি প্রচষ্টো ব্যর্থ হয় ফিনিশিংয়ের অভাবে।
৪২ মিনিটের মাথায় মর্সোলোর জোরালো শট গ্লাভসবন্দি করতে সমস্যা হয়নি নাভাসের। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে আর কোনো গোল হয়নি।
কাগজে কলমে এই ব্রাজিল এবারের বিশ্বকাপের অন্যতম ফেবারিট। তিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্রাজিল বদলে গেছে জাদুমন্ত্রের মতো, বাছাইপর্বে সবার আগে রাশিয়ার টিকিট নিশ্চিত করা দলটি এবারের শিরোপার অন্যতম দাবীদার হিসেবেই থাকছে। আগের ম্যাচে মার্সেলোর ওপর দলের দায়িত্ব থাকলেও, এই ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব থিয়াগো সিলভার ওপর।
মাঝমাঠে কাসেমিরো, ফার্নান্দিনহো, পলিনহো, কুতিনহোরা আছেন দারুণ ফর্মে। নেইমারের সঙ্গে আছেন জেসুস ও ফিরমিনো। প্রতিটা পজিশনেই একাধিক বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে ব্রাজিলের। হেক্সা জয়ের মিশনে একধাপ এগিয়ে যেতে আজ জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নেমেছে পাঁচবারের শিরোপাজয়ী লাতিন আমেরিকার দলটি।
সব বিশ্বকাপে অংশ নেয়া একমাত্র দল ব্রাজিল। বিশ্বকাপে ১১ বার সেমিফাইনাল আর ৭ বার ফাইনাল খেলে ৫ বার শিরোপা নিজেদের ঘরে তোলা দলটি এবার চাইবে নিজেদের হেক্সা মিশন পূরণ করতে।
অন্যদিকে, ২০১৪ সালে ব্রাজিল বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠাই ছিল কোস্টারিকার সবচেয়ে বড় অর্জন। ১৯৯০ সালে বিশ্বকাপে প্রথম অংশ নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত বিশ্বকাপে চারবার অংশ নিয়েছে দলটি। এবারের আসরের শুরুটাও ভালো হয়নি কোস্টারিকার। সার্বিয়ার কাছে ১-০ গোলে হেরে যাওয়া দলটিকে আসরে টিকে থাকতে হলে এই ম্যাচে জিততে হবে।
তবে রূপকথা যে প্রতিবার হয় না, সেটা কোস্টারিকা খুব ভালোমতোই জানে। আগের বারের সব খেলোয়াড়েরা থাকলেও বয়স থেমে নেই কারও। ব্রায়ান রুইজের বয়স এখন ৩২, ক্লাব ফুটবলে ফর্ম ভালো নয়। জোয়েল ক্যাম্পবেলও আর্সেনালে থিতু হতে না পেরে হারিয়ে গেছেন পাদপ্রদীপ থেকে। এক কেইলর নাভাসই গোলপোস্টের নিচে আছেন আস্থা হয়ে, রিয়াল মাদ্রিদের হয়ে মাত্রই জিতেছেন হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন্স লিগ। আগের ম্যাচে গোলপোস্টের অনেকটা সুরক্ষা করেছেন একাই। গত কিছু দিনে ফর্মটাও ভালো যায়নি কোস্টারিকার। প্রীতি ম্যাচে হারতে হয়েছে কোস্টারিকা, হাঙ্গেরি ও তিউনিসিয়ার কাছে।
সারাবাংলা/এমআরপি