রেকর্ড গড়া দিনে জয়ে ফিরল প্রাইম ব্যাংক
৯ মার্চ ২০২৫ ১৯:৫০
রূপগঞ্জ টাইগার্সকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয় দিয়েই এবারের মৌসুমের ডিপিএল শুরু প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। কিন্তু পরের ম্যাচেই পারটেক্সের বিপক্ষে একই ব্যবধানের হার। তবে আজ (রবিবার) তৃতীয় রাউন্ডের ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে হারিয়ে যেভাবে জয়ে ফিরল দলটা, তা জয়ের চেয়ে বেশি কিছু হয়েই এসেছে তাদের জন্য।
মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে নাঈম শেখের ১৭৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংসে ভর করে ডিপিএল ও বাংলাদেশের লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটের ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪২২/৮ রানের দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে প্রাইম ব্যাংক। পাহাড়সম সেই লক্ষ্য ছুঁতে নেমে ৫০ ওভারও খেলতে পারল না ব্রাদার্স। ২৪৯ রানে গুটিয়ে গেছে ৪২.৩ ওভারে। রিশাদ হোসেন, খালেদ আহমেদ, হাসান মাহমুদদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৭৩ রানে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক। ডিপিএলে রানের ব্যবধানে এটি প্রাইম ব্যাংকের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জয়।
প্রাইম ব্যাংকের ৪২২ রান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ইতিহাস সর্বোচ্চ তো বটেই, লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের মাঠেও এটা সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। এর আগে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে বাংলাদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ ইনিংস ছিল ভারতের। ২০২২ সালে ইশান কিষানের ডাবল সেঞ্চুরি ছোঁয়ার ম্যাচে ভারত করেছিল ৪০৯ রান। বাংলাদেশের মাঠে এটা ছিল এতদিন একমাত্র ৪০০ ছোঁয়া ইনিংস। আজ
প্রাইম ব্যাংক পেরিয়ে গেল সেটাও। প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে এতদিন সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস ছিল আবাহনীর। ২০১৮ সালে প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৯৩ রানে তুলেছিল দলটি। তৃতীয় এবং চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহও অবশ্য প্রাইম ব্যাংকের দখলে। শাইনপুকুরের বিপক্ষে ২০২২ সালে ৫ উইকেটে ৩৮৮ রান তুলেছিল দলটি। এরপর ২০২৪ সালের আসরে এই ব্রাদার্সের বিপক্ষে ৪ উইকেটে তোলে ৩৮০ রান।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৭৫ রানের মধ্যেই প্রথম তিন ব্যাটারকে হারায় ব্রাদার্স। শুরুর সেই ধ্বসের পর চতুর্থ উইকেটে আইচ মোল্লার সাথে ৮৬ রানের জুটি হয় অধিনায়ক মাইশুকুর রহমানের। সেই জুটি ভাঙেন শামীম পাটোয়ারী। পরের দুই ব্যাটার সোহাগ গাজী আর জাহিদুজ্জামান দুজনই ফেরেন রানের খাতা খোলার আগে। শেষদিকে অলক কাপালির ব্যাট থেকে আসে ১৭ বলে ৩০ রানের ইনিংসে। সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরেছেন আইচ মোল্লা। শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে ১১০ বলে করেন ৯৬ রান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে সাব্বির-নাঈমের উদ্বোধনী জুটিতে ১৪০ রানের দেখা পায় প্রাইম ব্যাংক। মাত্র ৪৪ বলে ফিফটি পান সাব্বির, অবশ্য ফিফটির পর ইনিংস বেশি দূর এগোয়নি তার। ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৩ বলে ৭৩ রান করেন তিনি। উইকেট হারালেও রানের গতি কমতে দেননি নাঈম। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৮ বলে ৮৬ রান তোলেন জাকিরের সাথে। যেখানে নাঈমের অবদানই বেশি।
৩৮ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন নাঈম, লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি করতে মোট খেলেছেন ৮২ বল। এরপর আরও আগ্রাসী নাঈম। পরের পঞ্চাশ অর্থাৎ দেড়শ ছুঁয়েছেন আরও ২৪ বলে। এই বাঁহাতি ওপেনারের ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে মাত্র ৩৭ ওভারেই ৩০০ পেরিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক।
দলীয় ৩০০ ছোঁয়ার পরের ওভারেই সালাউদ্দিন শাকিলের বলে অলক কাপালির হাতে ক্যাচ দিয়ে ডাবল সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় নাঈমকে। ১৮ চার ও ৮ ছক্কায় ১২৫ বলে ১৭৬ রান করেন তিনি। যা প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস।
শেষ দিকে ষষ্ঠ উইকেটে মামুন ও সাজ্জাদুলের ৫২ বলে ৮৪ রানের জুটিতে ৪০০ পেরিয়ে যায় প্রাইম ব্যাংক। রেকর্ড গড়া দিনে ঝড় বয়ে গেছে ব্রাদার্সের বোলারদের ওপর দিয়ে। ১০ ওভার বল করে ১ উইকেট পেলেও ৮১ রান দিয়েছেন সোহাগ গাজী। আল আমিন ১০ ওভারে এক মেইডেনসহ ৭৭ রানে নেন তিন উইকেট।
সারাবাংলা/জেটি
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব মোহাম্মদ নাঈম শেখ