Tuesday 10 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মেসির সেই জন্মদিন আর এই জন্মদিন


২৪ জুন ২০১৮ ১৪:১৮

মোসতাকিম হোসেন ।।

 

চার বছর আগের ওই দিনের কথা কি মনে আছে লিওনেল মেসির? বসনিয়া ও ইরানের সাথে গোল করে সেবার দলকে একাই টেনে তুলছিলেন। আর্জেন্টাইন ক্যাম্পে তখন ঘটা করে পালন করা হয়েছিল তাঁর জন্মদিন। সেটি পালনের দুই দিন পর নাইজেরিয়ার সঙ্গে জোড়া গোলে স্মরণীয় করে রেখেছিলেন। আজও মেসির জন্মদিন। কী অদ্ভুত কাকতাল, দুই দিন পর প্রতিপক্ষ সেই নাইজেরিয়ায়? কিন্তু সেই বিশ্বকাপ আর এই বিশ্বকাপে আকাশ আর পাতাল যে তফাত!

দেশের হয়ে চাপ অনেক বারই নিতে হয়েছে। কিন্তু এই বিশ্বকাপের মতো অভিজ্ঞতা নিশ্চিতভাবেই হয়নি আর। আইসল্যান্ডের সাথে প্রথম ম্যাচে তাঁর পেনাল্টি থেকেই যখন হয়তো নিশ্চিত হতে পারত হয়, মেসি সেখানে তা মিস করে বসলেন। পর্বতপ্রমাণ চাপ নিয়ে প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। জাতীয় সংগীতের সময় মেসি বার বার চোখ ঢাকছিলেন, মনে হলো চাপটা বইতে পারছেন না। মাঠে শরীরী ভাষায়ও যেন বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন, যেন জোর করে নেমেছেন। আর্জেন্টিনা পুরো ম্যাচে যতটা বিবর্ণ, মেসি যেন ততটাই নিজেকে হারিয়ে খুঁজেছেন। এক দুবার এক দুইটা দৌড় আর একটা শট ছাড়া কিছুই করতে পারেননি। আর্জেন্টিনার জার্সিতে তাঁর সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্সও অনেকে বলছেন। তার চেয়েও বড় কথা, ক্রোয়েশিয়ার কাছে ৩-০ গোলে হারার পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ স্বপ্ন এখন ঝুলছে সুতোয়।

মেসির প্রতিপক্ষ এখন শুধু নাইজেরিয়া নয়, আরও তো অনেক কিছু। ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে ওই ম্যাচের পর যেন পুরো দলের মনোবলই ভেঙে পড়েছে। সংবাদ সম্মেলনে হোর্হে সাম্পাওলি সরাসরি বলেছেন, তারা চাপ নিতে পারছেন না। মেসির ওপর নির্ভরশীল হতে গিয়ে ভুগতে হয়েছে, প্রকারান্তরে স্বীকার করেছেন তা-ও। সার্জিও আগুয়েরো মিক্সড জোন দিয়ে মাঠ ছাড়তে ছাড়তে বোমা ফাটিয়েছেন, ‘সাম্পাওলির কথা আমার কাছে জানতে চাইবেন না, ওঁকে গিয়েই জিজ্ঞাসা করুন।’

শোনা যাচ্ছে, আর্জেন্টিনা দলের ভেতর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। খেলোয়াড়েরা কেউই সাম্পাওলিকে চাইছেন না। এমনকি ৮৬ বিশ্বকাপে ম্যারাডোনার দোসর হোর্হে বুরুচাগা দায়িত্ব নিতে পারেন, এমনও শোনা যাচ্ছে। তবে এসবই হয়তো গুঞ্জন, শেষ ম্যাচের আগে নিশ্চয় সাম্পাওলিকে সরাবে না আর্জেন্টিনা। এর মধ্যে আবার অনুশীলনে সাম্পাওলি যে কাগজে কৌশল লিখে এনেছেন, সেটা ঠিকঠাক ঢেকে না রাখায় ফটোগ্রাফারের ক্যামেরাবন্দি হয়ে গেছে। দলের একাদশ প্রতি ম্যাচের আগেই কীভাবে যেন মিডিয়ায় চলে আসছে। সব মিলে আর্জেন্টিনা যেদিকেই চাইছে, সেদিকেই সাগর শুকিয়ে যাচ্ছে।

মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে হৃদয়ভঙ্গ অবশ্য কম দেখেননি। সেই ২০০৬ বিশ্বকাপ থেকে শুরু। এরপর ২০১০ সালের কোয়ার্টার ফাইনাল, আর ২০১৪ সালে ফাইনালের ওই আক্ষেপ তো কখনোই যাবে না। এরপর টানা দুই বার কোপায় ফাইনালে গিয়ে হার, একবার তো অবসরই নিয়ে নিয়েছিলেন। তবে এবার পরিস্থিতিটা একেবারে আলাদা, এবার কিছু পাওয়ার চেয়ে হারানোর শঙ্কাটাই যে বেশি। যে মেসিকে ১০ নম্বর জার্সি দেখে চিনতে হয়, ফুটবলবিশ্ব তো সেটা দেখেনি কখনো।

এবারের জন্মদিনে হয়তো সেভাবে কেক কাটা হবে না। এক সাথে থেকেও সতীর্থদের সাথে সেভাবে উদযাপনও করা হবে না হয়তো। কিন্তু কে জানে, উদযাপনটা হয়তো দুই দিন পরে করবেন বলেই ঠিক করেছেন। এই ছন্নছাড়া আর্জেন্টিনাকে কেউ উদ্ধার করতে পারলে তো তিনিই পারবেন। এবার কি পারবেন , লিওনেল আন্দ্রেস মেসি কুচিত্তিনি?

অবসরে যাচ্ছেন মেসি!

সারাবাংলা/ এএম


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর