Saturday 26 Apr 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিসিবির ব্যাখ্যা
বোর্ড সভাপতির ব্যাংক লেনদেনে অনিয়মের খবর ‘ভিত্তিহীন’

স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট
২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:২৯ | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:০৪

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি ফারুক আহমেদ নিয়ম না মেনে বোর্ডের ফিক্সড ডিপোজিট থেকে ১২০ কোটি টাকা সরিয়েছেন, এমন খবর প্রচার হয়েছে গণমাধ্যমে। পরে শোনা যায়, অঙ্কটা ১৩৮ কোটি টাকা। এই খবরের প্রেক্ষিতে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করল বিসিবি।

এক বিবৃতিতে বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনা করে বলা হয়েছে, খরবটি ভিত্তিহীন। বোর্ড সভাপতির নিজের বা অন্য কারও স্বার্থে নয় বরং বেশি মুনাফার জন্য এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক স্বীকৃত তুলনামূলক বেশি নিরাপদ ব্যাংকে টাকা সরানো হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

খবরে বলা হয়েছিল বোর্ডের কারও সঙ্গে পরামর্শ না করে একক সিদ্ধান্তে টাকা সরিয়েছেন বোর্ড সভাপতি ফারুক আহমেদ। বিসিবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই দাবিটিও মিথ্যা। দায়িত্বরতদের সম্পৃক্ততাতেই অর্থ সরিয়েছে বোর্ড।

শনিবার (২৬ এপ্রিল) এক লম্বা বিবৃতিতে বিসিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় গণমাধ্যমের একটি অংশে বোর্ডের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রকাশিত কিছু প্রতিবেদন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নজরে এসেছে। বিসিবির মতে এসব প্রতিবেদন ভুল তথ্যভিত্তিক এবং বোর্ড ও এর সভাপতি জনাব ফারুক আহমেদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে তৈরি করা হয়েছে। গত ২০২৪ সালের আগস্টে বিসিবির সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণের পর জনাব ফারুক আহমেদ বিগত বছরগুলোর আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের গণআন্দোলনের পর দেশের অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে বোর্ডের আর্থিক স্বার্থ সংরক্ষণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদান করেন।’

তুলনামূলক নিরাপদ ব্যাংকে অর্থ রাখতে চাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি, বলা হয়েছে বিবৃতিতে, ‘এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে বিসিবি তার ব্যাংকিং সম্পর্কগুলোর পুনর্মূল্যায়ন করে এবং কৌশলগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয় যে শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত ‘গ্রীন’ ও ‘ইয়েলো’ জোনভুক্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাথেই বোর্ড আর্থিক লেনদেনে জড়িত থাকবে। নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিসিবি ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলো থেকে ২৫০ কোটি টাকা উত্তোলন করে এবং এর মধ্যে ২৩৮ কোটি টাকা গ্রীন ও ইয়েলো জোনভুক্ত ব্যাংকগুলোতে পুনঃবিনিয়োগ করে। অবশিষ্ট ১২ কোটি টাকা বিসিবির বিবিধ পরিচালনা ব্যয় নির্বাহের জন্য নির্ধারিত একাউন্টে স্থানান্তর করা হয়।’

বিজ্ঞাপন

এই প্রক্রিয়ায় বিসিবির দায়িত্বরতরা সম্পৃক্ত, এমনটা বলা হয়েছে বিবৃতিতে, ‘প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বোর্ড সভাপতি কোন একক সিদ্ধান্তবলে বোর্ড এর পরিচালনা পর্ষদের অজ্ঞাতে ব্যাঙ্ক পরিবর্তনের অথবা লেনদেন সংক্রান্ত নির্দেশ প্রদান করেন না। পার্টনার ব্যাংকগুলোর সাথে বিসিবির আর্থিক বিষয়ক লেনদেনে স্বাক্ষরপ্রদানকারী হিসাবে দুজন বোর্ড পরিচালক আছেন বোর্ডের ফিনান্স কমিটি চেয়ারম্যান জনাব ফাহিম সিনহা ও টেন্ডার ও পারচেজ কমিটি চেয়ারম্যান জনাব মাহবুবুল আনাম। বিসিবি সভাপতি এসংক্রান্ত বিষয়ে স্বাক্ষরদাতা নন।’

টাকা অন্য ব্যাংকে সরিয়ে মুনাফা বৃদ্ধি হয়েছে এবং স্পনসরশিপ পাওয়া গেছে সেটাও তুলে ধরা হয়েছে বিবৃতিতে, ‘বিসিবি অবগত যে, কিছু সুবিধাভোগী মহল এবং ষড়যন্ত্রকারী গোষ্ঠী, যারা ক্রিকেট প্রশাসনের ভিতরেও সক্রিয়, বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে। বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করার এটিও অন্যতম কারণ। সেপ্টেম্বর ২০২৪ থেকে এখন পর্যন্ত বিসিবি তার অর্থ ও স্থায়ী আমানত সংরক্ষণের দায়িত্ব ১৩টি নির্ভরযোগ্য ব্যাংকের হাতে দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত বিসিবির আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ প্রতিযোগিতামূলক মুনাফা প্রাপ্তির মাধ্যমে আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করেছে। এর ফলে পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় বিসিবির স্থায়ী আমানত থেকে ২-৫ শতাংশ পর্যন্ত অতিরিক্ত মুনাফা হয়েছে।’

‘গত ছয় মাসে বিসিবি তার বর্তমান তিনটি ব্যাংকিং অংশীদারের কাছ থেকে আনুমানিক ১২ কোটি টাকার স্পনসরশিপ পেয়েছে। এছাড়াও, অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য বিসিবির অংশীদার ব্যাংকগুলোর পক্ষ থেকে প্রায় ২০ কোটি টাকা বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে, যা এই আর্থিক সম্পর্কগুলোর দৃঢ়তা ও গভীরতা নির্দেশ করে।’

সেই সঙ্গে সংবাদ মাধ্যমকে ভুল তথ্যসম্মলিত প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার ব্যাপারেও অনুরোধ করা হয়েছে বিবৃতিতে, ‘বিসিবি সর্বোচ্চ মানের আর্থিক ব্যবস্থা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং প্রকৃত ও তথ্যভিত্তিক উৎস থেকে তদন্ত ও পর্যালোচনাকে স্বাগত জানায়। পাশাপাশি, বোর্ড গণমাধ্যমকে ভিত্তিহীন অথবা বাংলাদেশ ক্রিকেট ও এর সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে, এমন কোনো ভুল তথ্যসম্মলিত প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছে।’

সারাবাংলা/এসএইচএস

বিসিবি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর