দক্ষিণে অতি ভারি বর্ষণের পূর্বাভাস, সাগরে ৩ নম্বর সংকেত
১১ অক্টোবর ২০১৮ ২১:১৫
।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।
ঢাকা: উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’র প্রভাবে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪ থেকে ৮৮ মি. মি.) থেকে অতি ভারি (৮৯ মি. মি. বা তার বেশি) বর্ষণ হতে পারে- এমন পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর।
বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টায় আবহাওয়াবিদ মো. ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত সর্বশেষ বুলেটিনে বলা হয়, এদিন দুপুর ৩টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার জন্য এই পূর্বাভাস দেওয়া হয়।
অধিদফতর থেকে আরও বলা হয়, ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূল অতিক্রম করার সময় ঝড়টি স্থলভাগে উঠে পড়ায় ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাই বাংলাদেশ বড় ধরনের ঝুঁকি মুক্ত।
আরও পড়ুন- ‘ঘূর্ণিঝড় তিতলির প্রভাব পড়ছে না বাংলাদেশে’
তবে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদ এ.কে.এম রুহুল কুদ্দুছ বলেন, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালার সৃষ্টি হচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরগুলোর উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। যে কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরগুলোকে দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদফতর বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলছে, ঝড়টি বর্তমানে ভারতের উড়িষ্যা উপকূলীয় এলাকায় প্রবল ঘূর্ণিঝড় আকারে অবস্থান করছে। আরও উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে স্থলভাগে এগিয়ে দুর্বল হতে পারে তিতলি। এর আগে হ্যারিক্যানের তীব্রতা সম্পন্ন প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ উত্তর, উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে সকালে গোপালপুরের পাশ দিয়ে ভারতের উড়িষ্যা-অন্ধ্র উপকূল অতিক্রম করে। অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলায় আঘাত হানার সময় ‘তিতলি’র গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ থেকে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত। অন্ধ্র প্রদেশে প্রলয়কাণ্ড চালিয়ে উত্তরের দিকে এসে উড়িষ্যার গানজাম জেলায় আছড়ে পড়ার সময় তিতলির তীব্রতা কিছুটা কমে যায়। সে সময় এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০২ কিলোমিটার পর্যন্ত। গানজাম, গজপতি, পুরি, খুর্দ ও জগতসিংপুর এবং অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীকাকুলামসহ বেশ কিছু জেলায় ভূমিধসের খবর পাওয়া যায়। গোপালপুর ও বারহামপুর শহরের মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- উড়িষ্যা-অন্ধ্র উপকূলে আঘাত হেনেছে তিতলি
তবে বুধবার উড়িষ্যার রাজ্য সরকার উপকূলীয় অঞ্চলের প্রায় তিন লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয় স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
শুক্রবার পর্যন্ত তিতলির প্রভাবে রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ী দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এছাড়া হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিন সকালে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘তিতলি’ মোকাবেলায় উপকূলীয় ১৯ জেলার সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাপ্তাহিক ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে, পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে।
তিতলিতে বিধ্বস্ত শাহপরীর দ্বীপের অর্ধশত বসতঘর
সারাবাংলা/এটি